বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোর জেলার মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। শনিবার দুপুরে যশোর সার্কিট হাউজের মিলনায়তনে জেলার সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাগণ অংশ নেয়। সভায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের সমস্যা ও সমাধানে করণীয় বিষয়ে মতামত দেন। পাশাপাশি প্রত্যেক বিদ্যালয়ে ৭টি শ্রেনি ও ৭জন শিক্ষক, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর ও শিশু শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাবান্ধব ভবনের দাবি জানান।
সভায় চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুস্মিতা সাহা বলেন, ‘সীমান্তবর্তী উপজেলা চৌগাছার কয়েকটি ইউনিয়নে প্রাথমিক স্তরেরই ঝরে পড়ছে। পঞ্চম শ্রেণীর অনেক শিক্ষার্থীই আছে মাদক সেবন ও মাদক বেচাকেনা পাচারের সাথে সংশ্লিষ্ঠ রয়েছে। ভয়বহ এই সমস্যা সমাধানে জরুরি উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান। একই সাথে প্রাথমিক স্তরের অবকাঠামোগত উন্নয়নে উপজেলা পর্যায়ে শিক্ষাফান্ডের সভাপতি সংশ্লিষ্ঠ উপজেলা নির্বাহীকে করার দাবি তোলেন এই কর্মকর্তা। এছাড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলা নির্বাহী অফিসাররা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন নকশাকৃত বিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থীবান্দব নয় বলে অভিযোগ তোলেন। নতুন নকশাকৃত বিদ্যালয়গুলোর ওয়াশ ব্লক, ব্লিডিং কাঠামো ত্রুটিপূর্ণ বলে দাবি করেন। এছাড়া শিক্ষার্থীদের পুষ্টি সংসম্পন্ন করতে মিডডে মিল জেলার সকল বিদ্যালয়ে চালু করার দাবি তোলেন।
সভায় এক ইউএনও অভিযোগ করেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মানসম্মত পাঠদানে একধরণের উদাসিনতা রয়েছে। নিজ এলাকার বিদ্যালয়ে পদায়ন করলে তারা ঠিকমতো শ্রেণী কক্ষে অনুপস্থিত থাকেন বেশি। দায়সারা ভাবে বিদ্যালয়ে এসে পাঠদান পরিচালনা করেন। এই ইউএনও কথার সঙ্গে মতামত দেন জেলা প্রশাসকও। তিনি ক্ষোভ করেন বলেন, ‘আমিও কয়েকটি বিদ্যালয় ঘুরেছি। বিদ্যালয়গুলো শিক্ষকরা এসেছেন, অপরিপাটি হয়ে। শিক্ষকস্বভাব ব্যবহারও নেই অনেক শিক্ষকের মধ্যে। এছাড়া যশোরের দুঃখখ্যাত ভবদহ এলাকার বিদ্যালয়গুলো নিয়েও আলোচনা করা হয়। সেখানে বছরের পর বছর পানির ভিতরে ভোগান্তি নিয়ে শিশুদের পড়াশোনা উন্নতকরণে নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেন সংশ্লিষ্ঠ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও শিক্ষা কর্মকর্তারা। সভায় স্থানীয় সরকার যশোরের উপপরিচালক রফিকুল হাসান মত দেন শিক্ষকদের পুরোপুরি শিক্ষাপাঠদানে নিশ্চিত করণে কোন সমিতি, রাজনীতি করতে পারবে না এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে। একই সাথে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত এক শিফটে চালু করার দাবি জানান।
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, স্কুল পরিচালনায় কমিউনিটি নেতাদের অন্তর্ভুক্তি ভালো। কিন্তু রাজনীতির কারণে ভালোটি মন্দতে পরিণত হয়েছে। ফলে এখন আমাদের ভালো কাজ করতে হবে। যাতে উদাহরণ হয়। স্কুলে শিক্ষার্থীকে এমনভাবে স্বাক্ষরজ্ঞান করে তুলতে হবে যাতে সে সকল ক্ষেত্র থেকে জ্ঞান আহরণে আগ্রহী হয়ে উঠে। একইসাথে তাদের নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে।
জেলা প্রশাসক মোঃ আজাহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় সভায় প্রাথমিক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আব্দুল হাকিম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) খালেদা রেখা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রুহুল আমিন বাশার, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আশরাফুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।