বাংলার ভোর প্রতিবেদক
তাবলীগ জামাতের দুই পক্ষে বিবাদমান দ্বন্দের ইনসাফ ভিত্তিক সমাধান চান যশোর সচেতন ছাত্রসমাজের নেতৃবৃন্দ। বৃহস্পতিবার প্রেসক্লাব যশোরে এক সংবাদ সম্মেলনে তাবলীগ জামাতের বিবাদমান সমস্যা তুলে ধরেন সংগঠনের সদস্য জুয়েল হোসেন। তিনি বলেন, তাবলীগ জামাত মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের প্রতীক এবং সারা বিশ্বে ইসলামের দাওয়াহ কার্যক্রমের অন্যতম মাধ্যম। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাবলীগ জামাতের অভ্যন্তরীণ বিভেদ সংঘর্ষে রূপ নিয়েছে যার ফলশ্রুতিতে প্রাণহানির মতো দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। যা দেশের সার্বিক স্থিতিশীলতা ও শান্তি শৃঙ্খলার জন্য হুমকি স্বরূপ।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি তাবলীগ জামাতের বৈষম্য তুলে ধরে বলেন, শুরাই নেজামের প্রধান মুরব্বিরা ভারত ও পাকিস্তান থেকে নির্বিঘ্নে আসতে পারেন। অথচ বিশ্ব মারকাজ নিজামুদ্দিনের (মূলধারার তাবলীগ) অনুসারীদের সর্বোচ্চ মুরুব্বী বিশ্ব আমির মাওলানা সাদ সাহেব বারবার বাধার সম্মুখীন হয়েছেন এবং এখনো আসতে পারছেন না। কাকরাইল মসজিদ তাবলীগ জামাতের প্রধান কেন্দ্রগুলোর একটি, তাবলীগের বিশ্ব মারকাজ নিজামুদ্দিনের অনুসারী মূলধারার তাবলীগ (মাওলানা সাদ সাহেবের অনুসারীরা) এতদিন যাবত ১৪ দিন তাদের কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যবহার করতেন। তারপর শুরাই নেজাম (মাওলানা জুবায়ের সাহেবের অনুসারীরা) ২৮ দিন ব্যবহার করতেন। এভাবে ধারাবাহিকভাবে এক পক্ষ ১৪ দিন এবং অপর পক্ষ ২৮ দিন কাকরাইল মসজিদ ব্যবহার করতেন যা স্পষ্টত বৈষম্য। কিন্তু বর্তমানে এক পক্ষ জোরপূর্বক কাকরাইল মসজিদের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে রেখেছেন যা বৈষম্যের চরম পর্যায়ের প্রতিফলন।
টঙ্গীর ময়দা বিশ্ব ইজতেমার কেন্দ্রস্থল, বছরের অধিকাংশ সময় শুরাই নেজামের নিয়ন্ত্রণে থাকে। নিজামুদ্দিনের মূলধারা তাবলীগ শুধু ইজতেমার সময় সীমিত কয়েকদিন ময়দান ব্যবহার করতে পারেন। বিগত বছর গুলোতে শুরাই নেজাম প্রথম পর্বের ইজতেমা আয়োজন করে আসছেন। বিশ্ব মারকাজ নিজামুদ্দিনের অনুসারীদের আনিচ্ছা সত্ত্বেও বারবার দ্বিতীয় পর্বে ইজতেমা করতে হচ্ছে। বিশ্ব মারকাজ নিজামুদ্দিনের অনুসারী মূলধারার তাবলীগের কর্মীরা বিভিন্ন মসজিদে আমল করতে গেলে প্রায়ই বাধার সম্মুখীন হয়। মসজিদগুলোতে তাদের অবস্থান, দাওয়াহ কার্যক্রম এবং আমল পরিচালনায় শুরাই নেজামের পক্ষ থেকে বাধা প্রদান করা হয়। এ ধরনের আচরণ তাবলীগের মূল দর্শনের পরিপন্থী এবং দাওয়াহ কার্যক্রমে সংকট তৈরি করছে। শুরাই নেজাম টঙ্গীর ময়দানে পাঁচ দিনের জোড় সফলভাবে আয়োজন করেছে। কিন্তু বিশ্ব মারকাজ নিজামুদ্দিনের অনুসারী মূলধারার তাবলীগের কর্মীরা এই সুযোগ থেকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত হচ্ছে। এমতাবস্থায় তিনি বিষয়টি সমাধানের জন্য নিম্নোক্তা প্রস্তাবনা তুলে ধরেন, উভয় পক্ষই যেন তাদের সর্বোচ্চ মুরুব্বীদের নিয়ে যার যার কার্যক্রম (অর্থাৎ জোড়, ইজতেমা ও অন্যান্য আমল) পরিচালনা করতে পারে তা নিশ্চিত করা। উভয় পক্ষের জন্যই কাকরাইল মসজিদ, টঙ্গীর ইজতেমা ময়দান এবং দেশের প্রতিটি মসজিদে তাবলীগের আমলে সমতা নিশ্চিত করা। দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে উভয় পক্ষকে একে অপরের বিরুদ্ধে কোন ধরনের উস্কানীমূলক বক্তব্য এবং কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা এবং ২০১৮ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ঘটে যাওয়া সমস্ত অনাকাঙ্খিত হত্যাকান্ডের বিচার বিভাগীয় নিরপেক্ষ তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা। দ্রতু সময়ের মধ্যে উপরোক্ত প্রস্তাবের আলোকে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ গৃহীত না হলে বিগত ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখের স্থগিতকৃত “প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি” দেশের সচেতন ছাত্র সমাজ এবং সচেতন নাগরিকদেরকে নিয়ে আরো জোরালো ভাবে পালন করতে বাধ্য হবো।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, এহসান উল্লাহ, তালহা খন্দকার, রমজান হোসেন, রুবেল হোসাইন, আলমগীর হোসেন, সৈয়দ জুবায়ের আহমেদ প্রমুখ।
শিরোনাম:
- রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান
- যশোর সাহিত্য পরিষদ কার্যালয়ে মিলনমেলা
- মণিরামপুরে পৃথিবী ও কলা বিপ্লব দিবসে পৃথিবীর প্রতীকী জন্মদিন পালন
- চৌগাছায় আন্দোলনের মুখে স্থগিত ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম
- উদীচী যশোর জেলা সংসদের সম্মেলন শুরু
- তাবলীগ জামাতের দু’পক্ষে দ্বন্দের সমাধান হোক
- বিনম্র শ্রদ্ধায় অমল সেনকে স্মরণ
- মাগুরায় জামায়াতের কর্মী সমাবেশ