মনিরামপুর সংবাদদাতা
মনিরামপুরে খাদ্যবান্ধব চাল বিতরণে পতিত ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার নাম ও ছবি সম্বলিত ব্যানার ব্যবহারের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। যেখানে লেখা আছে “শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ”। এতে করে স্থানীয়দের মাঝে রীতিমত ক্ষোভের সৃষ্টি হলেও বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে ওই ডিলারের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার পাঁয়তারা করে চলেছে স্থানীয় একটি মহল।
অভিযুক্ত খাদ্যবান্ধব ডিলার উপজেলার মশ্বিমনগর ইউনিয়নের পারখাজুরা গ্রামের আমিন উদ্দীন মোড়ল স্থানীয় কয়েকজন বিএনপি নেতা সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমেকে ম্যানেজ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তথ্যমতে গত শনিবার উপজেলার পারখাজুরা বাজারে আমিন উদ্দীন ও তার সহযোগিরা শেখ হাসিনার ছবি ও স্লোগান সম্বলিত ব্যানার ব্যবহার করে খাদ্যবান্ধব চাল বিতরণ করছিলো। স্থানীয় কয়েকজন যুবক প্রতিবাদ জানালে বন্ধ হয় চাল বিতরণ কার্যক্রম।
হযরত আলী নামের একটি ভ্যারিফায়েড ফেইসবুক আইডি থেকে স্থানীয় কয়েকজন বিএনপি নেতার নাম উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই ছবিসহ একটি পোস্ট শেয়ার করে। হাসান আলী, মোহাম্মদ আলী ও জিয়ার নাম উল্লেখিত করা ওই পোস্টের ভিত্তিতে অনুসন্ধানে গেলে ওই নেতারা জানান তাদের নামে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তবে বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আ. খালেক জানান, ওই দিন আমরা সাবেক প্রতিমন্ত্রী তরিকুল ইসলামের কবর জিয়ারত ও বিএনপির নবাগত ভাইস চেয়ারম্যান নার্গিস বেগমকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানাতে জেলা শহর যশোরে অবস্থান করছিলাম। পটপরিবর্তনের পর এ সমস্ত কার্যক্রম ঘৃণীত, আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই।
শেখ হাসিনার ছবিযুক্ত ব্যানার টানানোর বিষয়টি প্রথমে স্বীকার করলেও পরবর্তীতে মোবাইল ফোন বন্ধ করে রাখেন নিজেকে জামায়াত ইসলামের রাজনৈনিত ব্যক্তি দাবি করা অভিযুক্ত ডিলার আমিন উদ্দীন মোড়ল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক যুবক মুঠোফোনে জানান, সাংবাদিকরা চলে আসার পর আমিন উদ্দীন মোড়লের পক্ষ নিয়ে স্থানীয় এক বিএনপি নেতা বলেছেন, যে আসে আসুক, কোন সমস্যা নাই। গণমাধ্যমে মণিরামপুরে তাদের বাইরে যেয়ে কেউ এ বিষয়ে মুখ খুলবেনা।
এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইন্দ্রজিৎ শাহা বলেছেন, নির্দেশনা থাকার পরও কিভাবে শেখ হাসিনার নাম ও ছবি সম্বলিত ব্যানারটি ব্যবহার করেছেন এটা আমার জানার বাইরে। চালের বস্তার উপর স্লোগান সম্বলিত ছবি অস্পষ্ট করা ও ব্যানার ব্যবহারে সরাসরি নিষেধের কথা ছিলো। এটা অবশ্যই বড় ধরনের অপরাধের সমতুল্য।
এদিকে, সম্পৃক্ত ডিলারের বিরুদ্ধে সংশ্লিস্ট দপ্তরের রেজুলেশন মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্না।
এদিকে বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে উপজেলাব্যাপি ছড়িয়ে পড়লে ওই ওএমএস ডিলার আমিন উদ্দীনের ডিলারশিপ বাতিল দাবি করেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও ভুক্তভোগীরা।