বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোর ইনস্টিটিউটের বিশেষ সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সদস্যদের বিরোধিতার মুখে গঠনতন্ত্র সংশোধন করা যায়নি। ফলে সভার আলোচ্য সূচিতে উল্লিখিত সংবিধানের চারটি অনুচ্ছেদে বিগত দিনে আনা সংশোধনী পরিবর্তন বা রদ-বদল হয়নি। শনিবার বিকেলে বি সরকার হলে বিশেষ সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করে পদাধিকার বলে যশোর ইনস্টিটিউটের সভাপতি যশোরের জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম। কার্যবিবরণী পাঠ করেন যশোর ইনস্টিটিউটের সাধারণ সম্পাদক ডা. আবুল কালাম আজাদ লিটু।
সভায় বিগত বার্ষিক সাধারণ সভার কার্যবিবরণী পাঠ ও অনুমোদন শেষে সদস্যারা উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন। এ সময় সদস্যদের কেউ কেউ বিশেষ বার্ষিক সাধারণ সভাটিকে অবৈধ বলে দাবি করেন। সেই সাথে সংবিধানে সংশোধনের বিপক্ষে যুক্তি তুলে বক্তব্য রাখেন। উপস্থিতদের মধ্যে কারো বক্তব্যে সংবিধান সংশোধনী বাতিলের পক্ষেও মতামত দিতে দেখা যায়। তবে সভা চলাকালে যখনই কেউ সংবিধানে আনা সংশোধনী বাতিলের পক্ষে বক্তব্য দিচ্ছিলেন তখন উপস্থিতদের বেশির ভাগকে সেটির বিপক্ষে অবস্থান নিতে দেখা যায়। সভার শেষে একটি কমিটি গঠনের মাধ্যমে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে পরবর্তীতে সংবিধান সংশোধনের সিদ্ধান্ত হয়।
উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে বক্তব্য রাখেন, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. মুস্তাফিজুর রহমান, অ্যাডভোকেট রবিউল আলম, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, অ্যাডভোকেট মাহমুদ হাসান বুলু, বাম রাজনীতিক জিল্লুর রহমান ভিটু, সাবেক ছাত্রনেতা মেহেদি উর রহমান টুটুল, অ্যাডভোকেট বাসুদেব বিশ্বাস, মোস্তাফিজুর রহমান কবীর, রুহুল আমিন, জাগপা নেতা নিজামউদ্দিন অমিত, সাংবাদিক সালমান হাসান রাজিব, আব্দুল কুদ্দুস, আনিছুজ্জামান পিন্টু, আলমগীর হোসেন বাবু, লাবু জোয়ারদার প্রমুখ প্রমুখ।
উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে বিশেষ সাধারণ সভার বিষয়ে আপত্তি তুলে ধরে বলা হয়, আজকে যে বিশেষ বার্ষিক সাধারণ সভা ডাকা হয়েছে সংবিধানের কোথাও তার উল্লেখ নেই। এ ধরনের সভা আহ্বান করাটাই অসাংবিধানিক। নিয়মানুযায়ী বার্ষিক সাধারণ সভা এ বছর ডাকা হয়নি। বিশেষ একটি উদ্দেশ্যে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে এই সভা আহ্বান করা হয়েছে। শুধু তাই নয় হঠাৎ করে একদিন পিছিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রেও সংবিধানের বিধিবিধান মানা হয়নি। এ ছাড়া সভার আলোচ্য সূচিতে সংবিধানের ৫, ৬, ৪১ ও ৫২ অনুচ্ছেদে সংশোধনীর কথা বলে হলেও কী ধরনের ও কেমন সংশোধন আনা হবে সেটি উল্লেখ করা হয়নি।
বক্তারা আরো বলেন, শিক্ষা, সংস্কৃতি, শিল্পসহ সামাজিক নানা ক্ষেত্রে বিকাশের ক্ষেত্রে ভূমিকা পালনের উদ্দেশ্যে ইনস্টিটিউট গড়ে তোলা হয়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে- লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য থেকে দূরে সরে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
শিল্প-সংস্কৃতি ও শিক্ষা ক্ষেত্রে কোনোভাবেই সম্পৃক্ত না; ভোটের স্বার্থে এমন ব্যক্তিদের সদস্য করে ভোট ব্যাংক গড়ে তোলা হয়েছে বিগতে দিনে। যার কারণে ভোটের মালিক একই ব্যক্তিরা বারবার প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনে বিজয়ী হচ্ছেন। এসব রোধে ইচ্ছেমাফিক পছন্দের ব্যক্তিদের সদস্য করে ‘ভোটব্যাংক’ গড়া।
একটানা দুইবারের বেশি পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা যাবে না। নির্বাচনে অংশ নিতে হলে ন্যুনতম এইচএসসি বা সমমানের শিক্ষাগত যোগ্যতার বিষয় সংযোজন করা হয়। কিন্তু প্রায় অর্ধযুগ পরে এসব বিধিনিষেধ বদলের উদ্দেশ্যে এই বিশেষ সাধারণ সভা ডাকা হয়েছে। এদিকে, সংবিধান সংশোধনের পক্ষেও মত তুলে ধরে বলা হয়, সদস্য হওয়া ও নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে ‘ব্যারিয়ার’ (প্রতিবন্ধকতা) সৃষ্টি করতে সংবিধানে আনা সংশোধনী অগণতান্ত্রিক। নিয়ম না মেনে অসাংবিধানিকভাবে আনা সংশোধন বাতিল করতে হবে।