স্বাধীন মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ
শহরের পিচ ঢালা আঁকাবাঁকা রাস্তায় দৌড়ে চলেছেন তিন শতাধিক প্রতিযোগী। প্রতিযোগীদের মধ্যে রয়েছেন শিশু, কিশোর- কিশোরী ও বৃদ্ধ। সাড়ে ৭ কিলোমিটার রাস্তায় ম্যারাথন দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা এই মানুষগুলোর সবার লক্ষ্য প্রথম স্থান অধিকার করা।
শুক্রবার ভোর ৭ টায় যশোর শহরের টাউন হল ময়দান থেকে প্রথমবারের মত ‘রান ফর যশোর ১.০’ নামে এই ম্যারাথন দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করে ইয়াভ ফাউন্ডেশন। যশোর জেলাকে অরেঞ্জ সিটি করার জন্য এই আয়োজন। শহরের টাউন হল মাঠ থেকে শুরু করে চাঁচড়া মোড় এলাকা হয়ে পুনরায় টাউনহল মাঠে এসে শেষ হয় এ ম্যারাথন প্রতিযোগিতা।
ভোর বেলা দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ম্যারাথনে অংশ নেওয়া মানুষদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে টাউন হল ময়দানসহ শহরের রাস্তা। ব্যতিক্রমী এই ম্যারাথনের আয়োজকরা বলছেন, যশোর শহরকে অরেঞ্জ সিটি করা ও মানুষদের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য যশোরে প্রথম বারের মত এমন আয়োজন করা হয়েছে।
আয়োজনে কিছু সীমাবদ্ধতা থাকলেও প্রথমবারের মত যশোর জেলা উপভোগ করেছে ‘রান ফর যশোর ১.০’ ম্যারাথন। প্রতিযোগিতা শেষে সেরা ৩ জন, নারী ক্যাটাগরিতে এক জন, শিশু ক্যাটাগরিতে একজন পুরস্কার করা হয়। এছাড়া আরও ৫ জনকে প্রাইজ মানি দেওয়া হয়। ম্যারাথনে অংশ নেওয়া ৩ শতাধিক প্রতিযোগীকে সনদপত্র ও মেডেল দেওয়া হয়। মেডেল সংকটের কারণে অনেকের মেডেলটি পরবর্তীতে পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে আয়োজক কর্তৃপক্ষ।
উদ্বোধনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন, ইয়াভ ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা ডা. আবুল কালাম আজাদ লিটু, ভোরের সাথির সভাপতি ডা. আব্দুর রউফ, ম্যারাথন প্রতিযোগীতার যুগ্ম আহবায়ক মোক্তার আলী, নাসিম উদ্দীন খান, ইয়াভ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান রোহিত রায়, হর্ণ মোবাইল কোম্পানির রিজিয়ন ম্যানেজার ইফতেখারুল হক শিশির প্রমুখ।
এদিকে, ম্যারাথনে অংশগ্রহণ অংশ নেওয়া অনেকেই আয়োজক কর্তৃপক্ষের সীমাবদ্ধতার প্রশ্ন তুলে ধরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ম্যারাথনে অংশ গ্রহণকারি নুরুন নবী চৌধুরী বলেন, যশোরে প্রথম ম্যারাথন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছি। আয়োজক কর্তৃপক্ষের টুকটাক ত্রুটি থাকলেও সবাই মিলে অংশগ্রহণ করতে পেরে অন্যরকম অনুভূতি কাজ করছে।
সিরাজগঞ্জ থেকে আসা সায়েম শেখ অভিযোগ করে বলেন, আমরা জাতীয় পর্যায়ে খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করি। তবে যশোরে প্রথম এসে বিভ্রান্তির শিকার হয়েছি। যথেষ্ট স্বেচ্ছাসেবক না থাকায় আমাকে ভুল পথে বাড়তি তিন কিলোমিটার দৌঁড়াতে হয়েছে। এমন আয়োজন করলে অবশ্যই সার্বিক প্রস্তুতি রাখতে হয়। আমরা বিভিন্ন গ্রুপে বিষয়টি জানাবো। এটা যশোরের জন্য দুর্নাম।
খুলনা থেকে আসা পারভেজ পলাশ বলেন, তাদের সাথে অনিয়ম করা হয়েছে। সঠিক ব্যবস্থাপনা থাকলে তিনি প্রথম স্থান অর্জন করতে পারতেন।
ইয়াভ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান রোহিত রায় বলেন, প্রথম বারের মত এমন ব্যতিক্রমী আয়োজন করা হয়েছে। সারাদেশ থেকে প্রায় তিন শতাধিক প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেছে। আয়োজনে ত্রুটি থাকতে পারে। পরবর্তীতে ভুলগুলো সংশোধনের চেষ্টা করা হবে।
ইয়াভ ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা ডা. আবুল কালাম আজাদ লিটু বলেন, যশোরে প্রথম বার এমন আয়োজন করা হয়েছে। যশোর শহরকে অরেঞ্জ সিটি করার জন্য বিভিন্ন ধরণের সামাজিক কাজ করছে ইয়াভ ফাইন্ডেশন। আমরা চাই প্রতিবছর এমন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হোক।
এদিকে, বিকেলে টাউনহল ময়দানের রওশন আলী উন্মুক্ত মঞ্চে কনসার্ট ফর এন্টি ভায়োলেন্স ২.০ অনুষ্ঠিত হয়।