বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের মনিরামপুরে নগদ ডিস্টিবিউটরের প্রাইভেটকার ঠেকিয়ে ৩৫ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় সাতজনকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এসময় ছিনতাই হওয়া ৩২ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। নগদ ডিস্টিবিউটরের প্রাইভেটকার চালকের যোগসাজশে এই ছিনতাইরে ঘটনা ঘটেছে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। বুধবার দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূর -ই- আলম সিদ্দিকী।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- নগদ ডিস্টিবিউটরের প্রাইভেটকার চালক ও যশোর শহরের পোস্ট অফিস পাড়া এলাকার খোরশেদ আলম মির্জার ছেলে ইউসুফ আলী সাজু, ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া দিগদানা গ্রামের ইসরাইল গাজীর ছেলে রনি গাজী ও রাশেদুল ইসলামের ছেলে সুজন ইসলাম, মৃত দ্বীন মুহাম্মদের ছেলে ইমদাদুল গাজী ও ইমদাদুল গাজীর ছেলে নাসিম গাজী, একই উপজেলার খোষালনগর গ্রামের মনিরুল ইসলামের ছেলে সাগর হোসেন ও মজনুর রহমানের ছেলে সোহেল রানা।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূর-ই-আলম সিদ্দিকী জানান, মঙ্গলবার (১৭ জুন) সকাল পৌনে ১০টার দিকে নগদের ডিস্টিবিউটর রবিউল ইসলামের একটি প্রাইভেটকার যশোর থেকে মনিরামপুর যাওয়ার পথিমধ্যে জামতলা নামক স্থানে পৌঁছলে পিছনের দিক হতে দুইটি মোটরসাইকেল যোগে অজ্ঞাতনামা আসামিরা হাতে ধারালো চাপাতিসহ গতিরোধ করে। একপর্যায়ে অজ্ঞাতনামা আসামিরা মোটরসাইকেল হতে নেমে প্রাইভেটকারের গ্লাস ভাংচুর করে ও ধারালো চাপাতি দিয়ে হত্যার ভয়ভীতি প্রদর্শন করে প্রাইভেটকারে থাকা নগদের ডিস্টিবিউটরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তার নিকট থাকা নগদ হাউজের নগদ ৩৫ লাখ টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যায়। বিষয়টি ভিকটিম রবিউল ইসলাম জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ এ ফোন করে ঘটনার বিষয়ে জানান। ঘটনাটি চাঞ্চল্যকর হওয়ায় পুলিশ ঊর্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তাৎক্ষণিক অপরাধীদের সনাক্ত ও গ্রেফতারের অভিযান পরিচালনা শুরু করে পুলিশ।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূর-ই-আলম সিদ্দিকী আরও জানান, ছিনতাইয়ের ঘটনার আগে ও পরের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা, পুলিশি কলাকৌশল প্রয়োগ করে ঘটনার সাথে জড়িতদের সনাক্ত করা হয়। পরবর্তীতে ডিবিসহ জেলা পুলিশের একাধিক টিম বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ছিনতাইয়ের ব্যবহৃত একটি আরটিআর মোটরসাইকেলের সূত্র ধরে আসামি সাগর হোসেনকে ঝিকরগাছার খোষালনগর গ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছ থেকে আরটিআর মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়। আসামি সাগর হোসেনের তথ্যের ভিত্তিতে যশোর জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে বাকী আসামিদের গ্রেফতার করা হয়। নগদের টাকা বহনকারী প্রাইভেটকার চালক ইউসুফ আলী সাজুর যোগশাজোসে ছিনতাই করে তারা।
আসামি ইমদাদুল গাজীর হেফাজত থেকে ১৬ লাখ ৫৫ হাজার ৫শ’ টাকা ও সুজন ইসলামের বাড়ি থেকে ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকাসহ সর্বমোট ছিনতাইকৃত ৩২ লাখ ৫ হাজার ৫শ’ টাকা উদ্ধার করা হয়। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামিরা ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। গ্রেফতারকৃত আসামিদের কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত দুইটি চাপাতি ও লুন্ঠিত টাকা বহনকারী একটি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামির আদালতে সোপর্দ প্রক্রিয়াধীন।
এক প্রশ্নের জবাবে নূর-ই-আলম সিদ্দিকী বলেন, ছিনতাইয়ের ঘটনার পর নগদের লোকজন টাকার পরিমাণ ৫৫ লাখ বলেছিলেন। যা সঠিক তথ্য নয়। প্রকৃত টাকার পরিমাণ এখনো নিশ্চিত হওয়া যাইনি। টাকার পরিমাণ যাচাই বাছাই চলছে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার, মনিরামপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ইমদাদুল হক, ডিবি ওসি মঞ্জুরুল হক ভুঞা, মনিরামপুর থানার ওসি বাবলুর রহমান খান প্রমুখ।