বাংলার ভোর প্রতিবেদক
রোগীর সাথে কথা বলছেন, পরীক্ষার কাগজপত্র দেখছেন, স্বজনদেরকে নানারকম উপদেশ দিচ্ছেন। সাদা অ্যাপ্রোণ পরে চষে বেড়াচ্ছেন সারা হাসপাতালজুড়ে। কিন্তু তিনি চিকিৎসক নন। জানতে পেরে হাসপাতালে ভর্তি রোগী ও স্বজনদের মধ্যে ছড়ি পড়ে আতংক ও বিস্ময়। হ্যা এমন ভুয়া চিকিৎসকের আবির্ভাব মিলেছে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে। অবশেষে অবশ্য তিনি ধরাও পড়েছেন।
সোমবার বেলা ১২ টার দিকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরা রহিম রাকিব (২৬) নামে ওই প্রতারক চিকিৎসককে আটক করেন। তার বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল এলাকায়। বর্তমানে তারা যশোর শংকরপুর ইসাহক সড়কে ভাড়াবাড়িতে বসবাস করে।
যশোর জেনারেল হাসপাতালে আইন শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থাকা পুলিশ কনস্টেবল সোহেল রানা ‘বাংলার ভোর’কে জানান, কয়েকদিন ধরেই হাসপাতালে একটি প্রতারক চক্র ডাক্তার সেজে রোগীদের কাছ থেকে বিভিন্নভাবে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল। জানতে পেরে গোপনে এ চক্রটিকে ধরার জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করি। অবশেষে আজ তাকে হাতেনাতে ধরতে সক্ষম হই। এ চক্রের অপর এক নারী সদস্য পরিস্থিতি বেগতিক দেখে সটকে পড়ে।
ওই চিকিৎসকের প্রতারণার শিকার শহরের পুরাতন কসবার সানজিদা বেগম জানান, আমার কাছ থেকে বিভিন্ন কৌশল করে এই প্রতারক টাকা নিয়েছে। আমার ভাইয়ের শাশুড়ি সদর হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি। ডাক্তার কিছু পরীক্ষা নিরিক্ষা করতে বলে। আর টেস্ট করানোর সময় সে আমার পিছু নেয় এবং বলে আপনি কিছু টাকা দেন আমি এ টেস্টগুলো করে দিচ্ছি। আমি এই হাসপাতালের ডাক্তার। আমি তাকে টাকা দিলে সে আর ফিরে আসেনি। পরে জানতে পারি হাসপাতাল পুলিশ তাকে আটক করেছে।
যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার হুসাইন শাফায়াত বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ভুয়া চিকিৎসক চক্রটি হাসপাতালে রোগীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল এমন অভিযোগ আমরা আগেই পেয়েছি। কিন্তু আমরা চক্রটিকে ধরতে পারছিলাম না। হাসপাতালে ডিউটিরত পুলিশ সোহেল রানা আজ এই চক্রটির একজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। আটক রাকিব চিকিৎসক সেজে এ্যাপ্রোন পরিধান করে রোগীদের নিকট থেকে কৌশলে টাকা নিচ্ছিল।
এ বিষয়ে আমাদের একটি টিম গোপনে কয়েকদিন ধরে কাজ করছিল। আজকের ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে হাসপাতালে অভিযান চলমান থাকবে।
এ ঘটনায় আমরা থানায় মামলা দায়েরসহ পরবর্তী সকল আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। একই সাথে তিনি আরো বলেন, এই চক্রের সাথে হাসপাতালে কোন ব্যক্তির ন্যুনতম সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাদেরকেও ছাড় দেয়া হবে না।