বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরে তেলপাম্প দখলের অভিযোগের পর এবার নিজেই সংবাদ সম্মেলন করে পাল্টা অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন। সোমবার প্রেসক্লাব যশোরে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা চলছে। তিনি এর নেপথ্যে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সুবিধাভোগীদের ষড়যন্ত্র দেখছেন।
শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়া ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বলেন, ১৯৯৯ সালে তিনি রেজিস্ট্রি করা কবলা দলিলের মাধ্যমে গোলাম কিবরিয়ার কাছ থেকে ১৭ শতক জমি কিনেছিলেন এবং ‘মেসার্স কিবরিয়া ফিলিং স্টেশন’-এর ব্যবসার সাথে যুক্ত হন। ২০১২-১৩ সালে কিবরিয়া আর্থিক সংকটে পড়লে তিনি তার ভাই জামালের কাছ থেকে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা নিয়ে কিবরিয়াকে দেন। এর প্রমাণ হিসেবে তিনি অঙ্গীকারনামা প্রদর্শন করেন।
আনোয়ার হোসেনের অভিযোগ, ২০২২ সালে গোলাম কিবরিয়ার মৃত্যুর পর তার উত্তরাধিকারী ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ-সমর্থিত একটি গোষ্ঠী তার তেলপাম্পে হামলা চালায় এবং খুলনা ডিপো থেকে তেল উত্তোলন বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীতে তাকে মিথ্যা মামলায় আটক করা হয় এবং কিবরিয়ার মেয়ে তনিমা তাসনুমাসহ অন্যরা তার পাম্প দখল করে নেয়।
তিনি আরও বলেন, ২০১৭ সালে কিবরিয়ার ঋণ পরিশোধের জন্য তার বিভিন্ন সম্পদ নিলামে ওঠে। এ সময় কিবরিয়ার ছোট ভাই বেনাপোলের ‘তনিমা ফিলিং স্টেশন’-এর ১১৫ শতক জমি আনোয়ারের ভাই জামাল হোসেনের কাছে ৬ কোটি ৭ লাখ টাকায় বিক্রি করেন। পরবর্তীতে বিস্ফোরক পরিদপ্তর সেই লাইসেন্স বাতিল করে ২০২৩ সালের জুলাইয়ে ‘মেসার্স আনোয়ার ফিলিং স্টেশন’ নামে নতুন লাইসেন্স দেয়, যা ২০২৬ সাল পর্যন্ত বৈধ। আনোয়ারের দাবি, বর্তমানে তনিমা অবৈধভাবে সেই পাম্প পরিচালনা করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের মুখোমুখি হন আনোয়ার হোসেন। তার ফিলিং স্টেশন পরিচালনার সময় তেল আনার কাগজপত্র দেখতে চাওয়া হলে তিনি কোনো নথি দেখাতে পারেননি। এছাড়া, তার ও তার ভাইয়ের টাকার উৎস সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি অযাচিত উত্তর দেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা এবং বিচারকের স্বাক্ষর জাল করার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বেনাপোলের গোলাম মোর্শেদ সেলিম ও কামরুলের মতো প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ-সমর্থিত ব্যক্তিরা এই ষড়যন্ত্রের নেপথ্যে রয়েছেন। তিনি তনিমার বিরুদ্ধেও একাধিক মামলার কথা উল্লেখ করে এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন। সংবাদ সম্মেলনে আনোয়ার হোসেনের ভাই জামাল হোসেনও উপস্থিত ছিলেন।