কাজী নূর
বাজারে সবজির সরবরাহ বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আগাম শীতকালীনসহ নানা সবজির সমারোহে সন্তোষ প্রকাশ করছেন ক্রেতা সাধারণ। তারা বলছেন, এমন বাজার দর আমাদের প্রত্যাশা, যেখানে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ তাদের আয়ের সাথে সঙ্গতি রেখে প্রয়োজন মেটাতে পারবেন। তবে এর ধারাবাহিকতা রক্ষায় রাষ্ট্রকে আরো মনিটরিং কার্যক্রম বৃদ্ধি করতে হবে।
অপরদিকে সবজির বাজার ক্রেতার নাগালের মধ্যে থাকলেও ভোজ্যতেলে চরম অসন্তোষ ভোক্তাদের। তারা বলেন, আজকের বাংলাদেশে কেউ সিন্ডিকেট করে জনগণের অর্থ লোপাট করে নিয়ে যাবে, আর রাষ্ট্র নির্বিকার থাকবে এটা কাম্য নয়। তাদের দাবি সয়াবিন তেলসহ নিত্যপণ্যের দাম সহনশীল পর্যায়ে আনতে রাষ্ট্রকে অঙ্গীকারবদ্ধ হতে হবে।
শুক্রবার সকালে যশোর হাজী মোহাম্মদ মহসিন রোড বড়বাজারে সরেজমিনে ঘুরে মিলেছে এসব তথ্য। এদিন বাজারে কচুরমুখি ২০ টাকা, পেঁপে ২০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, ঢেরস ৪০ টাকা, পুঁইশাক ৩০ টাকা, ধুন্দল ৩০ টাকা, উচ্ছে ৬০ টাকা, কাঁচা কলা ৪০ টাকা, কুশি ৪০ টাকা, মানকচু ৬০ টাকা, ঝিঙে ৭০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, কচুর লতি ৪০ টাকা, মেটেআলু ১০০, বেগুন ৬০ টাকা, কাকরোল ৭০ টাকা, সবুজ শাক ২০ টাকা, আমড়া ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া লাউ ২০ টাকা, চাল কুমড়ো ৩০ টাকা পিস হিসেবে বিক্রি হচ্ছে।
অপরদিকে আগাম শীতকালীন সবজি ফুলকপি ৭০ টাকা, মিচুড়ি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, শিম ৬০ টাকা, মুলো ২০, জলপাই ৫০ টাকা, বাঁধাকপি ৩০ থেকে ৫০ টাকা, গাজর ১৫০ টাকা, বিটরুট ১৩০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা কেজি ও পালং শাক ২০ টাকা ও ধনিয়া পাতা ১৫ টাকা আটি বিক্রি হচ্ছে।
জানতে চাইলে বিক্রেতা জহুরুল ইসলাম বলেন, কয়েকদিন যাবত বাজারে সবজির সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। দামও বেশ কিছুটা কমেছে।
তবে দাম কমলেও গড় বিক্রি আশানুরূপ নয় বলে জানান জহুরুল। তিনি বলেন, দাম কম বিধায় ক্রেতারাও কিনছেন কম। বাজার যখন সস্তা তখন রোজ টাটকা সবজির দিকেই নজর থাকে ক্রেতার।
বাজার করতে আসা পেশায় লেদ মিস্ত্রি শাকিল আহমেদ জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সাপ্তাহিক বেতন পাই। তাই দিয়ে শুক্রবারে বাজার করি। গত সপ্তাহের তুলনায় আজ সবজির বাজার নিম্নমুখি বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, শুধু সবজির বাজার নয়, ভোজ্যতেলের অবৈধ সিন্ডিকেট ভাঙার জন্য লিখুন। নিত্যপণ্যের সকল বাজার সহনশীল হোক। জনগণের প্রতি রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল এবং মানবিক আচরণ আমাদের মতো শ্রমিক শ্রেণীর মানুষের প্রত্যাশা।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে বর্তমানে, ১ কেজি ৮০০ গ্রাম সাইজের কাতলা ২৮০ টাকা, ২ কেজি সাইজের কাতলা ৩২০ টাকা, ২ কেজি সাইজের রুই ৩৫০ টাকা, ১ কেজি ২০০ গ্রাম সাইজের রুই ৩২০ টাকা, শিং ৬০০ টাকা, পাবদা ৩৬০ টাকা, গলদা ৯০০ থেকে ১৩০০ টাকা, টেংরা ৭০০ টাকা, চালি চিংড়ি ৬৫০ টাকা, পুঁটি ৩০০ টাকা, বাইন ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা, নাইলোটিকা ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, পারশে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, মায়া ৪০০ টাকা, চাষের কৈ ২২০ টাকা, পাঙাশ ২২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
মাছ বিক্রেতা দেবু সরকার জানান, যাচাই করে দেখেন মাছের দাম তুলনামূলক কম আছে আজ।
অপরদিকে ৩ পিসে ১ কেজি সাইজের ইলিশ ইলিশ ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, দেড় কেজি সাইজের ইলিশ ২৮০০ টাকা, ১ কেজি সাইজের ইলিশ ২৫০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
বিক্রেতা আলমগীর হোসেন বলেন, ইলিশের সরবরাহ খুব কম। অনেক বেশি দামে মাছ কিনতে হচ্ছে।
চালের বাজার ঘুরে দেখা গেছে বর্তমানে বর্তমানে নাজিরশাইল ৮০ টাকা, মিনিকেট ৬৬ টাকা, সুবললতা ৬০, পাইজাম ৫৬ টাকা, কাজললতা ৭০ টাকা, বাসমতি ৮৪ টাকা, স্বর্না ৫২ টাকা, আটাশ ৫৮ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
বড়বাজার চাউলচান্নির চাল ব্যবসায়ী চয়ন ট্রেডার্সের মালিক চিত্ত রঞ্জন পাল বলেন, এই সস্তার বাজারে চালের বিক্রি নেই। অথচ দাম বৃদ্ধি পেলে বস্তা বস্তা চাল কেনার জন্য ক্রেতারা হুমড়ি খেয়ে পড়ে।
মুরগি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে ব্রয়লার ১৮০ টাকা, সোনালী ২৬০ টাকা, লেয়ার ৩৩০ টাকা, দেশি ৫৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
মৌ সখী ব্রয়লার হাউসের মালিক শফিউর রহমান বলেন, চলতি সপ্তাহে মুরগির দাম বাড়তে পারে। কারণ ফিডের দাম প্রতি বস্তায় বৃদ্ধি পেয়েছে।
মুদি পণ্যের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে খোলা ভোজ্যতেল ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯০ টাকা, পাম ১৭৫ টাকা লিটার বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মসুরি ১৪০ টাকা, মোটা মসুরি ১০০ টাকা, সোনা মুগ ১৫০ টাকা, মোটা মুগ ১২০ টাকা, ছোলার ডাল ১১০ টাকা, আটা ৪৫ টাকা, ময়দা ৬০ টাকা, সাদা চিনি ১০০ টাকা, লাল চিনি ১২৫ টাকা, আলু ১৮ থেকে ২০ টাকা, পেঁয়াজ ৭৫ থেকে ৮০ টাকা, রসুন ৮০ থেকে ১০০ টাকা, আদা ১৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া মুরগির লাল ডিম ৪৪ থেকে ৪৬, সাদা ডিম ৩৮ থেকে ৪২ টাকা হালি বিক্রি হচ্ছে।

