কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
‘মাথা ঘোরে, সারা শরীর ব্যথা। হাঁটাহাঁটি করতে পারি না, চোখে ঝাপসা দেখি, খাবার খেতে পারি না। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারি না। আমি গরিব মানুষ। বাদাম বিক্রি করে খুব কষ্টে চলে। এখন বাদাম বিক্রি করার মতো শক্তিটুকুও নেই। বের হলে রাস্তায়-ড্রেনে পড়ে যাই। চরম দুর্দিনের ভেতরে আছি, অনাহারে-অর্ধাহারে দিন পার করছি। সবার কাছে আমি সাহায্য চাই। আপনারা আমাকে বাচাঁন।’
অঝোরে কাঁদতে কাঁদতে কথাগুলো বলছিলেন ৭০ বছর বয়সী ফজলু শেখ। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। এমন দুঃখ-দুর্দশায় সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের কাছে সাহায্যের আকুল আবেদন জানিয়েছেন ফজলু শেখ ও তার স্ত্রী শাহেদা খাতুন।
সহায়-সম্বলহীন ফজলু শেখ কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের কয়া গ্রামের মধ্যপাড়ার মৃত কলিমউদ্দিন শেখের ছেলে। ফজলু শেখের চার সন্তানের কেউই আর তার খোঁজ নেয় না। কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ মাঠে প্রায় ২৫ বছর ধরে বাদাম বিক্রি করছেন তিনি। এভাবেই চলে তার সংসার। বয়সের ভারে বাদাম ফেরি করতে করতে মাঝেমধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়তেন। কয়েকদিন আগে তিনি খুবই অসুস্থ। তাই এখন বাদামও আর বিক্রি করতে পারছেন না। তার ছেলে আরিফ (২৮) বিয়ে করেছে। তার দুই সন্তানও রয়েছে। তারা আলাদা থাকেন। তিন মেয়েরও বিয়ে হয়ে গেছে। এখন ফজলু আর তার স্ত্রী অনাহারে-অর্ধাহারে একাই থাকেন।
ফজলু শেখের স্ত্রী শাহেদা খাতুন বলেন, আগে তিন-চার কেজি বাদাম নিয়ে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ এলাকায় গিয়ে তা বিক্রি করত। কিছুদিন আগে মাথা ঘুরে পড়ে যায়। বর্তমানে অসুস্থ, হাঁটাহাঁটিও করতে পারে না। চোখে কম দেখে। অসুস্থতার কারণে ঠিক মতো বাদাম বিক্রি করতে যেতে পারে না। তাই এখন বাদাম বিক্রিও বন্ধ। সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের কাছে সাহায্যের আবেদন করছি।
তিনি আরও বলেন, গত সপ্তাহে সাংবাদিক তারিকুল হক তারিক ও এক সংঘের সদস্যরা ১৫ দিনের খাবার ও এক মাসের ওষুধের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন।
প্রতিবেশীরা বলেন, ফজলু শেখের তিন মেয়ে ও এক ছেলে। সবার বিয়ে হয়ে গেছে। ছেলে আলাদা থাকে। মেয়েরা শ্বশুর বাড়িতে থাকে। অসুস্থ অসহায় ফজলু শেখ ও তার স্ত্রী এক সঙ্গে থাকেন। অসুস্থ শরীরে বাদামের ব্যবসা করেন। যা আয় হয় তা দিয়ে সংসার চলে না। অনাহারে অর্ধাহারে তাদের খুব কষ্ট হয়। কয়েকদিন ধরে বেশি অসুস্থ। এখন আর বাদাম বিক্রি করতে যেতে পারে না। সরকার বা বিত্তবানদের উচিৎ তাকে সহযোগিতা করা।
কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, বৃদ্ধা ফজলু শেখ অসুস্থ মানুষ। ঠিকমতো হাঁটা চলাফেরা করতে পারেন না। বাদাম বিক্রি করেতে এসে মাঝেমধ্যেই মাটিতে ও ড্রেনের মধ্যে পড়ে যান। আমরা তাকে কয়েকবার উদ্ধার করে, মাথায় পানি দিয়ে তার বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি। তার কষ্ট দেখলে আমাদেরও খুব কষ্ট হয়।
কয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলী হোসেন বলেন, ফজলু শেখ অসহায় গরিব মানুষ। বর্তমানে অসুস্থ তিনি। তিনি বাড়ি থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে কুষ্টিয়া শহরের কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের মাঠ ও আশপাশের এলাকায় বাদাম বিক্রি করতেন। অসুস্থতার কারণে এখন বাদাম বিক্রি করতে যেতে পারে না। বিত্তবানরা তাকে সহযোগিতা করতে পারেন। আপনাদের সহযোগিতায় নতুন জীবন ফিরে পেতে পারে ফজলু। তাকে সহযোগিতা করতে চাইলে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
শিরোনাম:
- মালিক-শ্রমিক দ্বন্দ্বে দুই দিন ধরে বাস চলাচল বন্ধ, ভোগান্তি
- পদ্মাসেতুর ট্রেন চলাচল উদ্বোধনের দিন বিক্ষোভ করবে যশোরবাসী!
- যশোরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট, পাঠদান ব্যাহত
- যশোর শহরের দড়াটানা ও ঢাকা ব্রিজ এলাকায় ভৈরব নদে ভয়াবহ পানি দূষণ
- যশোরে নাশকতা মামলায় ১২৫ নেতাকর্মী কারাগারে, আদালত চত্বরে স্লোগানে উত্তাল
- ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ
- মৌ হিজড়ার স্বর্ণালংকার ও মালামাল আত্মসাত, দায়ীদের শাস্তির দাবি
- গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে জেকে বসেছে শীত