বাঘারপাড়া প্রতিনিধি
যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলায় ইজিবাইক-থ্রি হুইলার চালকদের কাছ থেকে অভিনব পন্থায় চাঁদা আদায়ের ব্যাপক অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে ইজিবাইক স্ট্যান্ড। যা নিয়ন্ত্রণ করে একটি রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় গড়ে ওঠা অসাধু সিন্ডিকেট। ফলে চাঁদাবাজির কারণে বিপাকে পড়েছেন ইজিবাইক, ভ্যানসহ থ্রি হুইলার চালকরা।
জানা গেছে, একেক স্ট্যান্ডে ভিন্ন ভিন্ন চাঁদা আদায় করা হয়। কোথাও দিনে ৮০ টাকা, কোথাও ৫০ টাকা, আবার কোথাও ৩০ টাকা করে প্রতিটি ইজিবাইক থেকে চাঁদার টাকা আদায় করা হয়ে থাকে। এইসব ইজিবাইকসহ ছোট ছোট গাড়ির চালকরা বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন নিয়ে কিস্তিতে ইজিবাইক কিনে জীবিকা নির্বাহ করার জন্য দিন রাত গাড়ি চালান। কেউ নিজের গচ্ছিত সম্পদ জমি বিক্রি করে ও ইজিবাইক কিনে সংসার চালান। বেকারত্ব দূর করতে ইজিবাইক, থ্রি হুইলার, চার্জার ভ্যান চালিয়ে আসছেন তারা। দ্রব্যমূল্যের যাতাকলে সংসার চালাতে যখন চালকদের হিমশিম অবস্থা তখন কতিপয় চাঁদাবাজের অত্যাচারে তাদের মরার উপর খাঁড়ার ঘা অবস্থা। জানা যায়, একটি নতুন গাড়ি স্ট্যান্ডে যুক্ত হলেই ৫/৬ হাজার টাকা চাঁদা দিয়ে তবেই ওই স্ট্যান্ডে একজন চালক ইজিবাইক চালানোর সুযোগ পায়। অন্যথায় নতুন কোন ইজিবাইক চালকদের গাড়ি চালাতে দেওয়া হয় না। টাকা দিলেই ইজিবাইকের উপর দেওয়া হয় বিভিন্ন ঘোড়া, হাতি, বাঘ ও বিভিন্ন রংয়ের সাংকেতিক চিহ্ন ।
সূত্র মতে, বাঘারপাড়া বাজারে চারটি, খাজুরা বাজারে তিনটি, নারিকেল বাড়িয়া বাজার, রায়পুর বাজার, ধলগ্রাম বাজার, ধলগা রাস্তা বাজার, চাড়াভিটা বাজার, ছাতিয়ানতলা বাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ইজিবাইক, থ্রি-হুইলারের ছোট ছোট গাড়ির স্ট্যান্ড রয়েছে। এ সব স্ট্যান্ড থেকে মাসে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। চাঁদা আদায়কারীদের রয়েছে একটি সিন্ডিকেট। কেউ প্রতিবাদ করতে গেলেই তাদের উপর নেমে আসে বিভিন্ন নির্যাতন ও জীবননাশের হুমকি। এজন্য ভয়ে কেউ মুখ খোলে না বা প্রতিবাদ করার সাহস পায় না।
একাধিক ইজিবাইক চালক জানিয়েছেন, সংঘবদ্ধ চক্রকে তো নিয়মিত চাঁদার টাকা দিতে হয়, তারপরও স্থানীয় দায়িত্বরত পুলিশ প্রসাশনকেও মাসে মাসে মোটা অংকের টাকা দিতে হয়। না হলে গাড়ি চালাতে দেয় না। ধলগ্রাম রাস্তার স্টাটার, আনসার সদস্য ও সাংবাদিক নামধারী শাহিন হাইওয়ে পুলিশের নামে ৮০ টি ইজিবাইক হতে মাসিক হারে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করেন। খাজুরা বাজারে স্টার্টার গাড়ি প্রতি প্রতিদিন ৩০ টাকা করে চাঁদা আদায় করে। ইশান, ছবুর, তরিকুল পুরাতন পুলিশ ফাঁড়ির সামনে শিমুল গাড়ি প্রতি আদায় করে ৫০ টাকা করে। রায়পুর ফাঁড়িতে দেয়ার জন্য ৯০ টি ইজিবাইক হতে মাসিক ১২০ টাকা করে চাঁদা আদায় করে স্টার্টার ওলিয়ার। নারিকেলবাড়িয়া পুলিশ ফাঁড়িতে মাসিক ১০০ টাকা করে দিতে চাঁদা আদায় করে স্টাটার ওবায়দুর, পারভেজ। চাড়াভিটা বাজারে পুলিশের কথা বলে প্রতিদিন চাঁদা আদায় করে বাসুয়াড়ী ইউপি চেয়াম্যানের ভাই আরিফ সর্দার ও পাকের আলী গ্রামের সাইদুর। ছাতিয়ানতলা বাজারে হাইওয়ে পুলিশের কথা বলে প্রতিদিন টাকা আদায় করে স্টার্টার বাচ্চু।
এ বিষয়ে বাঘারপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসান আলী জানান, এমপি সাহেব বাঘারপাড়ায় তার প্রথম সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে চাঁদাবাজি বন্ধের ঘোষনণা দিয়ে গেছেন। বাঘারপাড়া উপজেলার কোথাও যদি ইজিবাইক, ভ্যানসহ ছোট ছোট গাড়ি চালকদের কাছ থেকে কোন প্রকার চাঁদা আদায় করা হয়, তাদের বিরুদ্ধে যা যা ব্যবস্থা নেয়া লাগে প্রশাসনকে সে বিষয়ে সহযোগিতা করবো। কাউকে একটি চাঁদার টাকাও আদায় করতে দেয়া হবে না।
জেলা পরিষদ সদস্য সাইফুজ্জামান ভোলা খাজুরা বাজারের চাঁদা আদায়ের বিষয়ে বলেন, এদেরকে আমি বহুবার নিষেধ করেছি। টাকা আদায় বন্ধ করতে বলেছি। তারা কথা শেনেনি। এসব স্টার্টার গত ১৫ বছর ধরে এভাবে চাঁদা আদায় করে আসছে। বর্তমান এমপি এনামুল হক বাবুল চাঁদা বন্ধের ঘোষণা দিলে চাঁদাবাজির বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
চাঁদা আদায়ের বিষয়ে বাঘারপাড়া থানার অফিসার্স ইনচার্জ সাহাদৎ হোসেন বলেন, আমার থানায় কোন চাঁদার নেওয়া হয়না। যদি কোন পুলিশ ক্যাম্প টাকা আদায় করে থাকে আমি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিবো। চাঁদা আদায়ের বিষয়ে তুলরামপুর হাইওয়ে থানার অফিসার্স ইনচার্জ জাহাঙ্গীর হোসেনের কাছে ০১৩২০-১৮৪৩৪৭ একাধিক বার কল করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
শিরোনাম:
- আলুর দাম লাগামহীন ভোক্তার নাভিশ্বাস
- শীতে ফুটপাতে গরম কাপড় বিক্রির ধুম
- একটা সংস্কার কমিটি দিয়ে সংবিধান সংস্কার সম্ভব না: মির্জা ফখরুল
- নিখোঁজের ৩ দিন পর কপোতাক্ষ নদে মিলল বৃদ্ধার মরদেহ
- কৃষ্ণনগরে আরাফাত কোকো স্মৃতি ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন রতনপুর
- পাখির সাথে মানুষের ভালোবাসার গল্প !
- সব রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব রাখবে বাংলাদেশ: প্রধান উপদেষ্টা
- যশোর মটর পার্টস ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাচন সংস্কার ও উন্নয়ন পরিষদের পক্ষে ২৭টি মনোনয়নপত্র ক্রয়