নিজস্ব প্রতিবেদক, কালীগঞ্জ
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ঈদুল আযহা উপলক্ষে দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ ভিজিএফের ২৬৪ বস্তা চাল বিক্রির ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রোববার বিকেলে একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে প্রধান করে ২ সদস্য বিশিষ্ট এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক এসএম রফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
গত ২২ জুন বাংলার ভোরে ‘কালীগঞ্জে গরীবের ২৬৪ বস্তা চাল বিক্রির অভিযোগ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। দরিদ্র মানুষের চাল ঠিকমতো বন্টন না করায় উপজেলাজুড়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। সবাই দোষী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তারা জানান, ট্যাগ অফিসার ঠিকমতো দায়িত্ব পালন না করায় এমন ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করেন সচেতন মহল। তাদের যোগসাজস না থাকলে ২৬৪ বস্তা চাল চেয়ারম্যানরা বিক্রি করতে সাহস পেত না। এরসাথে উপজেলা পর্যায়ের শীর্ষ কর্মকর্তারাও জড়িত।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১৫ জুন ২৬৪ বস্তা চাল কালীগঞ্জ খাদ্য গুদামে ডিও দেখিয়ে মহেশপুরের খালিশপুর বাজারের দিপুর দোকানে বিক্রি করা হয়। বিলি আদেশে (ডিও) দেখা গেছে, কালীগঞ্জ উপজেলার ৪নং নিয়ামতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ রনি লস্করের নামে ২.৫ মেট্রিক টন, ৬নং ত্রিলোচনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল হিজড়ার নামে ৩ মেট্রিক টন ও ৮নং মালিয়াট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান খানের নামে ২ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। গত ১২ জুন চালগুলো বরাদ্দ দেয়া হয় এবং যার মেয়াদ ছিল ৩০ জুন পর্যন্ত।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিয়ামতপুর ইউনিয়ন পরিষদের এক ইউপি সদস্য বলেন, ঈদের আগে ঠিকমতো চাল বিতরণ করা হয়নি। উপজেলা থেকে নিয়োগকৃত ট্যাগ অফিসাররাও উপস্থিত ছিলেন। চেয়ারম্যান তার নিজের ইচ্ছামতো কম চাল দিয়ে বাকি চালগুলো বিক্রি করেছেন। চাল দেয়ার দিন অনেক ইউপি সদস্যকে জানানো হয়নি।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইশরাত জাহান মুঠোফোনে জানান, চাল বিক্রির ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই তিনটি ইউনিয়নে ট্যাগ অফিসার কারা ছিলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেহেতু তদন্ত কমিটি গঠনা করা হয়েছে সেহেতু তারাই বিষয়টি দেখবেন।
উল্লেখ্য, ঈদুল আযহার দুইদিন আগে গত ১৫ জুন কালীগঞ্জ খাদ্য গুদাম থেকে ৪টি শ্যালো ইঞ্জিন চালিত নসিমনে (আঞ্চলিক যান) ২৬৪ বস্তা ভিজিএফের চাল নিয়ে মহেশপুর উপজেলার খালিশপুরের একটি দোকানে বিক্রি করা হয়। প্রতিটি গাড়িতে ৬৬ বস্তা চাল ছিল। এক নসিমন চালকের স্বীকারোক্তি দেয়া এমন একটি ভিডিও গত শুক্রবার (২১ জুন) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।