বাংলার ভোর ডেস্ক
সাংবাদিকদের বেতন কাঠামোর যৌক্তিক সংস্কারে উদ্যোগ নেয়াসহ আগামী ১০০ দিনের কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় ও এর আওতাধীন দফতর-সংস্থা। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে ১০০ দিনের কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। এ সময় তিনি এ উদ্যোগ নেয়ার কথা জানান।
তিনি জানান, স্বাধীন গণমাধ্যম কমিশন গঠন, গণমাধ্যমকর্মী (চাকরির শর্তাবলী) আইন প্রণয়ন, সম্প্রচার আইন প্রণয়ন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য আইন, বিধি ও নীতিমালার প্রয়োজনীয় সংস্কার, সাংবাদিকদের বেতন কাঠামোর যৌক্তিক সংস্কার, অনলাইন নিউজ পোর্টালের লাইসেন্স দেওয়ার নীতিমালা যুগোপযোগী করা ও তথ্য অধিকার আইন ২০০৯-এর কতিপয় ধারা সংশোধন করে যুগোপযোগী করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
১০০ দিনের কর্মপরিকল্পনায় যা রয়েছে :
১. বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং বাংলাদেশ বেতারকে দক্ষ ও জনবান্ধব করার উদ্যোগ নেয়া হবে।
২. জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত ছাত্র-জনতা এবং তাদের পরিবার নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করে বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচার করা হবে।
৩. স্বাধীন গণমাধ্যম কমিশন গঠনের উদ্যোগ নেয়া হবে।
৪. গণমাধ্যমকর্মী (চাকরির শর্তাবলী) আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হবে।
৫. সম্প্রচার আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হবে।
৬. প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ সংক্রান্ত নির্দেশিকার প্রয়োজনীয় সংশোধন শেষে তা প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হবে।
৭. বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ অন্যান্য দফতর/সংস্থার সাংগঠনিক কাঠামোর আইনি সংস্কারে উদ্যোগ নেয়া হবে।
৮. গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য আইন, বিধি ও নীতিমালার প্রয়োজনীয় সংস্কার করা হবে।
৯. সাংবাদিকদের বেতন কাঠামোর যৌক্তিক সংস্কারে উদ্যোগ নেয়া হবে।
১০. চলচ্চিত্র নির্মাণে তরুণ প্রজন্মকে সম্পৃক্ত করার উদ্যোগ নেবে মন্ত্রণালয়।
১১. ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্কের ডিজিটাইজেশনে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হবে।
১২. অনলাইন নিউজ পোর্টালের লাইসেন্স প্রদান নীতিমালা যুগোপযোগী করতে উদ্যোগ নেয়া হবে।
১৩. বিদেশে থাকা বাংলাদেশ মিশনের ৪টি শূন্যপদ পূরণ করা হবে।
১৪. চলমান প্রকল্পগুলো যথাযথভাবে সম্পাদনে কিংবা প্রয়োজনীয় সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
১৫. বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) আয়বর্ধক কর্মসূচির জন্য বিজনেস সল্যুশন প্রোগ্রামের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন আইন, ১৯৫৭-কে যুগোপযোগী করা হবে।
১৬. বাংলাদেশ বেতার থেকে ‘বৈষম্যহীন বাংলাদেশের পথে’ শীর্ষক ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান ও শহীদ ছাত্র-জনতাকে নিয়ে পর্ব প্রচার হবে।
১৭. বাংলাদেশ বেতারের অনিয়মিত শিল্পীদের অংশগ্রহণ সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হবে।
১৮. বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ/আহত ছাত্র-জনতার পরিবারের সদস্যদের সাক্ষাৎকার, আন্দোলনের প্রেক্ষাপট, সংগঠিত হওয়া এবং সমন্বয়কদের মাধ্যমে সুশৃঙ্খলভাবে লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার বিবরণের ওপর ভিত্তি করে অনুষ্ঠান প্রচার হবে বাংলাদেশ টেলিভিশনে।
১৯. ঢাকাসহ সারাদেশে দেয়াল লিখন, স্লোগান এবং গ্রাফিতি তুলে ধরে তথ্য বিবরণীমূলক অনুষ্ঠান প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন।
২০. ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ ও আহত ছাত্রদের পরিবার নিয়ে ২০০টি ফিচার প্রকাশসহ বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম যুগোপযোগী করা হবে। তারুণ্যনির্ভর বাংলাদেশ বিনির্মাণে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে জনসচেতনতা তৈরিসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তৃণমূল পর্যায়ে প্রচারের ব্যবস্থা করা হবে।
২১. বিগত সরকারের ২০০৯-২৪ সাল পর্যন্ত সব দুর্নীতি, অনাচার, দমন-পীড়ন, মানবতাবিরোধী অপরাধ, সাম্প্রতিক হত্যাযজ্ঞ ইত্যাদি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে প্রামাণ্যচিত্র তৈরির জন্য প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ এবং চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর যৌথভাবে কাজ করবে।
২২. ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সব শহীদের ওপর পরিচিতিভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ এবং দেওয়ালে আঁকা গ্রাফিতির ওপর চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতর অ্যালবাম তৈরি করবে।
২৩. বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এবং রাষ্ট্র সংস্কারভিত্তিক ফিচার প্রকাশ করা হবে।
২৪. বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গঠনে গণমাধ্যমসহ অন্যান্য অংশীজনের ভূমিকাভিত্তিক সেমিনার আয়োজন করবে জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট।
২৫. বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড কর্তৃক সেন্সর্ড অবস্থায় থাকা চলচ্চিত্রগুলো নীতিমালা ও যৌক্তিকতার ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হবে।
২৬. চলচ্চিত্র বিষয়ক জাতীয় পরামর্শক কমিটি পুনর্গঠন করা হবে।
২৭. প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ আইন ২০১৮-এর কতিপয় ধারা সংশোধন করে যুগোপযোগী করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
২৮. তথ্য অধিকার আইন ২০০৯-এর কতিপয় ধারা সংশোধন করে যুগোপযোগী করতে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
২৯. তথ্য কমিশনের বিদ্যমান চাকরির বিধিমালা যুগোপযোগী করা হবে।
এছাড়া, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং আওতাধীন দফতর/সংস্থা থেকে নিয়মিত দাফতরিক কার্যক্রম দ্রুততার সঙ্গে চলছে এবং এ ধারা অব্যাহত থাকবে।