বাংলার ভোর ডেস্ক
প্রধান উপদেষ্টার মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সোয়া এক ঘণ্টার বৈঠক শেষে বেরিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বললেন, তাদের মধ্যে অত্যন্ত ‘ফলপ্রসূ’ আলোচনা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন ‘যমুনা’র বাইরে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের আলোচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে খোলাসা করে বলেননি ফখরুল।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা, রাজনৈতিক সংলাপ আয়োজনের বিষয়ে আহ্বান রেখে কয়েকটি সভায় ফখরুলসহ বিএনপি নেতারা কথার মধ্যে বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার ডাক পায় বিএনপি। সাংবাদিকদের ফখরুল বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা আলোচনার জন্য ডেকেছিলেন। আমদের মধ্যে প্রায় সোয়া এক ঘণ্টা আলোচনা হয়েছে। অত্যন্ত ফলপ্রসূ আলোচনা হেেয়্ছ। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনাকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভভন হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকেল ৪টায় সেখানে বিএনপি নেতাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক হয়।
ফখরুল বলেন, “আমরা আশাবাদী এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, যার নেতৃত্বে আছেন প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুস, তাদের আন্তরিকতা, দেশপ্রেম ও যোগ্যতা দিয়ে খুব দ্রুত তারা দেশকে একটা স্টেবল অবস্থায় নিয়ে আসতে পারবেন এবং একই সঙ্গে তারা নির্বাচনের দিকেও যেতে পারবেন। প্রয়োজনীয় সংস্কারসমূহ পূরণ করবেন বলে আমরা মনে করি। বিএনপির মহাসচিবের সঙ্গে ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমেদ। বৈঠকে পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ ও আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলও ছিলেন।
নির্বাচন নিয়ে তাগিদ দিয়ে ফখরুলের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তাড়াহুড়া না করার পক্ষে অবস্থান তুলে ধরেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। অবশ্য ফখরুলও সে বিষয়ে জবাব দিয়ে বলেন, যাদের সরকার পরিচালনার সক্ষমতা নেই, তারাই এসব কথা বলে থাকেন। অবশ্যই এই পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে দুই নেতা কেউ পরস্পরের নাম ধরে কথা বলেননি। সাংবাদিকদের প্রশ্নে মির্জা ফখরুল বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা হবে পর্যায়ক্রমে।
নির্বাচনের কোনো সম্ভাব্য তারিখ নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা কোনো তারিখ নিয়ে আলোচনা করিনি। আমরা কোনো তারিখ বলব না। এটা উনারা (অন্তর্বর্তী সরকার) বলবেন।
অধ্যাপক ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর গত ১২ অগাস্ট বিএনপি মহাসচিবের নেতৃত্বে দলটির স্থায়ী কমিটির সাত সদস্য যমুনায় গিয়ে প্রথমবার বৈঠক করেন।
গণআন্দোল ও জনরোষের মুখে ৫ অগাস্ট পতন হয় শেখ হাসিনা সরকারের। তিন দিন বাদে গঠন হয় অন্তর্র্বতী সরকার। আওয়ামী লীগকে বাদ রেখে অন্যান্য দল ও সেনাবাহিনী আলোচনা করে এই সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়। অন্তর্র্বতী সরকারের কাছে অন্যান্য দলের চাওয়া, প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ শেষ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে তারা একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করবেন।
সংসদ ভেঙে যাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচন দেয়ার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে রাষ্ট্র সংস্কারের তাগিদে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার কবে নির্বাচন করতে পারবে, সে বিষয়ে এই সরকারের পক্ষ থেকে এখনও কোনো তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি। এ নিয়ে পরিষ্কার বার্তা চাইছিল বিএনপি। সেই ধারায় বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দলটির প্রতিনিধিদের বৈঠক হলো।