বাংলার ভোর ডেস্ক
সোমবার বাগরেহাটের ফকিরহাটে, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে, নড়াইলের কালিয়ায় এবং যশোরের চৌগাছা উপজেলার ছুটিপুরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় এক শিক্ষর্থী, শিক্ষকসহ ৭ জন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন অপর চারজন। আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো বিস্তারিত
বাগেরহাট সংবাদদাতা জানান, বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলায় পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের ৫ আরোহী নিহত হয়েছেন। সোমবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার কাটাখালী ও টাউন নওয়াপাড়ার মাঝামাঝি এলাকায় খুলনা-বাগেরহাট মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
এদিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বাগেরহাট-খুলনা মহাসড়কের টাউন নওয়াপাড়া এলাকায় খুলনাগামী একটি পিকআপের সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ইজিবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে ইজিবাইকে থাকা তিনজন নিহত এবং দুইজন আহত হয়েছেন।
পরে আহতদের উদ্ধার করে ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় আহতদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে নেয়ার পথে একজন এবং পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আরও একজনের মৃত্যু হয়। এই নিয়ে এই দুর্ঘটনায় ইজিবাইকের পাঁচজনের মৃত্যু হলো।
নিহতরা হলেন- বাগেরহাটের মুনিগঞ্জ এলাকার নোমান শেখের স্ত্রী শিক্ষিকা নিপা বেগম (২৮), রামপাল উপজেলার নবাবপুর এলাকার রাজমিস্ত্রি মো. মাসুম (৩০), একই এলাকার রাজমিস্ত্রি শওকত আলী (৪০), বাগেরহাট সদর উপজেলার সুগন্ধি গ্রামের মাজেদ শেখের ছেলে হিরণ শেখ (৩৫) ও একই উপজেলার মিরেরডাঙ্গা গ্রামের মোশারফ হোসেন খন্দকার (৪২)। নিপা বেগম বাগেরহাটের সায়েড়া মধুদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তানভির ইসলাম অনিক বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজনকে মৃত এবং দুইজনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। আহত দুইজন অর্থাৎ হিরণ শেখ এবং মোশারফ হোসেন খন্দকারকে আমরা খুলনা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে পাঠিয়েছি। এদের মধ্যে হাসপাতালে নেয়ার পথে হিরণ শেখ মারা যান। পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোশারফ হোসেন খন্দকারেরও মৃত্যু হয়।
কাটাখালি হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, পিকআপ ও ইজিবাইকের সংঘর্ষে ঘটনাস্থলে তিনজন, হাসপাতালে নেয়ার পথে একজন এবং খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাস্থলে নিহত তিনজনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। অন্য দুইজনের মরদেহের জন্য তাদের স্বজনদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যোগাযোগের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
কাটাখালী হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক আশরাফুল হক বলেন, দুর্ঘটনার পর চালক পিকআপটি নিয়ে পালিয়ে গেছেন। পিকআপটি শনাক্ত করে জব্দের চেষ্টা চলছে।
কালীগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে রুণ্ডল আমিন নামের এক এনজিও কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। সোমবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলা শহরের শ্রীলক্ষ্মী সিনেমা হলের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত রুণ্ডল আমিন যশোর সদর উপজেলার পরানপুর গ্রামের আবু বক্করের ছেলে। তিনি এসএস এনজিওর ঝিনাইদহ শাখায় ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার সকালের দিকে মোটরসাইকেলে রুণ্ডল আমিন ঝিনাইদহ শহর থেকে যশোরের দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় শ্রীলক্ষ্মী সিনেমা হলের সামনে এলে তিনি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ওপর পড়ে যান। এ সময় পেছন দিক থেকে আরেক মোটরসাইকেল এসে তাকে আঘাত করলে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কালীগঞ্জ থানার ওসি আবু আজিফ।
কালিয়া সংবাদদাতা জানান, নড়াইলের কালিয়ায় আরবি পড়ে ফেরার পথে দুটি মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে নাসিম শেখ (২৪) নামে এক কলেজ শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন।
রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার পুরুলিয়া ইউনিয়নের চানপুর-রঘুনাথপুর সড়কের তানজার শেখের বাড়ির সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নাসিম উপজেলার পুরুলিয়া ইউনিয়নের রঘুনাথপুর (পূর্ব পাড়া) গ্রামের মৃত শহিদুল শেখের ছেলে। তিনি নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের ডিগ্রি ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খন্দকার শামীম উদ্দিন বলেন, নিহত নাসিমের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
ছুটিপুর সংবাদদাতা জানান, যশোরের চৌগাছা উপজেলার মৎস্যরাঙ্গা পুকুর পাড়ে ইজিবাইক ও মোটরসাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষে মারাত্মক জখম হয়েছে উভয় বাহনের চালক। সোমবার বেলা তিনটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, চৌগাছা উপজেলা হাসপাতালের কর্মচারী বীর মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেন এর ছেলে টিটো (৩০) হাসপাতালের দায়িত্ব পালন শেষে নিজ বাড়ি কায়েমকোলা গ্রামে ফেরার সময় পাশাপোল ইউনিয়নের মৎস্যরাঙ্গা পুকুর পাড়ে পৌছালে কায়েমকোলা থেকে আসা একটি ইজিবাইকের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইক দুমড়ে মুচড়ে রাস্তার পাশে পড়ে যায়। মোটরসাইকেল চালক টিটো ও দশপাখিয়া গ্রামের ইজিবাইক চালক রফিকুল (২৭) মারাত্মকভাবে জখম হন। স্থানীয় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও পথচারীরা তাদের উদ্ধার করে দ্রুত চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান। ইজিবাইক চালক রফিকুলের অবস্থা আশংকাজনক বলে তার পারিবারিক সূত্রে জানা যায়।