বাংলার ভোর প্রতিবেদক
আওয়ামী লীগ সমর্থিত যশোর সদর উপজেলার হৈবতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সিদ্দিককে ডিটেনশন দিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আজাহারুল ইসলাম। বুধবার বিকেলে ৩০ দিনের জন্য ডিটেনশন দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূর-ই-আলম সিদ্দিকী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে মঙ্গলবার গভীর রাতে হৈবতপুর এলাকা তাকে গ্রেফতার করে যশোর পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগ। আটক আবু সিদ্দিক ছোট হৈবতপুরের বাসিন্দা।
জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের স্বাক্ষরিত ডিটেনশন নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে, আবু সিদ্দিক যশোর জেলা আওয়ামী লীগের কট্টর সদস্য। তিনি যশোর-৩ আসনের সাবেক সংসদ কাজী নাবিল ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিন চাকলাদারের ঘনিষ্ঠ সহচর।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্র ক্ষমতা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর ক্ষমতায় আসে বর্তমান সরকার। বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর হতে আবু সিদ্দিক তার ব্যবহৃত মোবাইলের মাধ্যমে পলাতক শেখ হাসিনার অনলাইনের বক্তব্য হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ, টেলিগ্রাম গ্রুপ, ইউটিউব চ্যানেল এবং জুম প্লাটফর্মে ভিডিও বক্তব্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে বর্তমান সরকারকে উৎখাত করে তাদের নেত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে এনে পুনরায় ক্ষমতায় বসানের পরিকল্পনায় সচেষ্ট রয়েছে। তার অংশ হিসেবে ছাত্রলীগ, যুবলীগের কতিপয় সদস্য নিয়ে জেলার বিভিন্ন এলাকায় কখনো প্রকাশ্যে কখনো ছদ্মবেশে ও আত্মগোপনে থেকে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা জনিত তথা জনশৃঙ্খলা পরিপন্থী ক্ষতিকর কার্য পরিচালনা করছেন।
ডিটেনশনে আরো উল্লেখ করা আছে, আবু সিদ্দিক রেল লাইন বিছিন্ন করে রেল যোগাযোগ বন্ধ, সড়ক অবরোধ করে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও শ্রমজীবী এবং কৃষিজীবী সাধারণ মানুষদের উস্কানির মাধ্যমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, সরকারি সম্পত্তি ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল।
এছাড়া হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উস্কানিসহ বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে ঘৃণাবোধ সৃষ্টি, এমনকি জনসাধারণের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টির লক্ষ্যে ধ্বংসাত্মক কাজ করার অভিপ্রায়ে তার কর্মীবাহিনীকে নিয়ে গোপন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। একই সাথে কর্মী বাহিনীকে সংগঠিত করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। উক্ত ব্যক্তি তার দলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে দেশে অস্থির ও অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির পরিকল্পনা করে আসছে।
এ কারণে রাষ্ট্রের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও ক্ষতিকর কার্যকলাপ হতে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য আবু সিদ্দিককে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ৫৪ ধারায় তাকে আটক করা হয় এবং বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪ এর ৩(২) ধারা মোতাবেক ডিটেনশনের (আটকাদেশের) জন্য জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর আবেদন করা হয়।
ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আজাহারুল ইসলাম আবেদনটি মঞ্জুর করে ৩০ দিনের আটকাদেশ দেন। এরপর বুধবার তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।