# চৌগাছায় ছেলের হাতে পিতা খুন ও সদরে কৃষককে পিটিয়ে হত্যা
# কৃষক হত্যায় ৩ ভাই আটক
বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে দুটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার যশোরের সদর ও চৌগাছা উপজেলায় এ দুটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে চৌগাছায় পারিবারিক কলহের জের ধরে সেহরির সময় ঘুমন্ত অবস্থায় পিতা শরিফুল ইসলামকে (৪৫) এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেছে ছেলে মোহাম্মদ রমিম (২২)। অপরদিকে দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে সদর উপজেলার ইছালি ইউনিয়নের যোগী মাঠপাড়ায় ধান ক্ষেতে পানি দেয়াকে কেন্দ্র করে শহিদুল ইসলাম নামে এক কৃষককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সদর উপজেলার ইছালি ইউনিয়নের যোগী মাঠপাড়ায় ধান ক্ষেতে পানি দেয়াকে কেন্দ্র করে শহিদুল ইসলাম নামে এক কৃষককে (৫৫) পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহত শহিদুল যোগী গ্রামের মৃত আজাহার বিশ্বাসের ছেলে। নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ক্ষেতে পানি দেয়াকে কেন্দ্র করে একই গ্রামের ইখলাস, তার ভাই বিল্লাল ও রাসেলের সাথে বিরোধ বাধে শহিদুলের। বিরোধের জের ধরে তারা কোদাল দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে পিটিয়ে শহিদুলকে মাঠের মধ্যে ফেলে রেখে যায়। খবর পেয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শহিদুলকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় যোগী গ্রামের মৃত নূর ইসলামের রাসেল, বিল্লাল, একলাছকে আটক করেছে পুলিশ।
কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ কাজী বাবুল জানান, জমি সংক্রান্ত পূর্ববিরোধের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। সকালে মাঠে পানি দেয়া নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে। কিন্তু এর আগে থেকেই পারিবারিক বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। সেই প্রতিশোধেই খুন করা হয়েছে শহিদুলকে। ঘটনার পরই পুলিশ অভিযানে নেমে তিনজনকে আটক করেছে।
এদিকে, চৌগাছায় নিহত শরিফুলের ভাই মোস্তফা জানান, শরিফুল ইসলাম চাষাবাদের কাজ করতেন। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ছেলে রমিমের সঙ্গে গোলযোগ চলছিল তার। ১৫ দিন আগে তারা পৃথক হয়ে যান। ছেলেকে জমিজমাও বুঝিয়ে দেন। শনিবার ভোরে সেহেরির সময় রমিম বাবার রুমে ঢুকে ঘুমন্ত অবস্থায় তার মাথা ও ঘাড়সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
তার আর্তচিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে গুরুতর জখম অবস্থায় শরিফুলকে উদ্ধার করে চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এ সময় সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রতিবেশীরা থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন জানান, পারিবারিক কলহের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। ঘাতক ছেলে পলাতক রয়েছে। তাকে আটক করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
যশোরের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার নূর ই আলম সিদ্দিকী বলেন, চৌগাছায় ছেলের হাতে পিতার হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত ছেলেকে আটকে অভিযান চলছে। সদরের জমিজমা সংক্রান্ত জেরে কৃষক হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত তিন চাচাতো ভাইকে আটক করা হয়েছে। দুজনের মরদেহ পুলিশ উদ্ধার কওে ময়নাতদন্ত করে পরিবারের কাছে হসান্তর করা হয়েছে। দুটি ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।