বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরে মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রীর ছেলের সন্ত্রাসী বাহিনীর তৎপরতায় অতিষ্ঠ হয়ে পুলিশ সুপার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে স্টেডিয়ামপাড়াবাসী। জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নওশিন সুলতানা সুমির ছেলে সাকিব ইকবালের বিরুদ্ধে এই স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশ সুপার বরাবর এই স্মারকলিপি গ্রহণ করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসাইন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নওশিন সুলতানা সুমির ছেলে সাকিব ইকবালের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী বাহিনী স্টেডিয়ামপাড়া, পৌর হকার্স মার্কেট ও খড়কি এলাকায় অব্যাহতভাবে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। এই চক্রটি চাঁদাবাজি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত। গত ঈদের রাতে (১৬ জুন) সাকিব ইকবালের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা মনিরুল ইসলাম মুন্না নামে এক কলেজ শিক্ষককে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়।
এর আগে গত ৮ মে স্টেডিয়াম মার্কেটের ব্যবসায়ী তৌফিক ইকবালের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে লুটপাট করে। গত ২৫ মার্চ মদ্যপ অবস্থায় যশোর শামস উল হুদা স্টেডিয়ামের নৈশপ্রহরী রয়েল হোসেনকে বেদম মারপিট ও নির্যাতন চালায়। ১৬ জানুয়ারি স্টেডিয়ামপাড়ায় আজিজুল ইসলাম নামে নামে এক দিনমজুরের উপর নির্যাতন চালায়।
সাকিব ইকবালের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী বাহিনী স্টেডিয়ামপাড়া কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সদস্য আতিয়ার রহমানের কাছে চাঁদা দাবি করে হত্যার হুমকি প্রদান করেছে। বিভিন্ন সময়ে পৌরপার্কে ছিনতাইয়ের ঘটনায়ও এই চক্র জড়িত। এছাড়াও ছিনতাই, চাঁদাবাজি, হামলা, হত্যার হুমকিসহ নানা অপকর্মের অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে এই চক্রের বিরুদ্ধে। এ সব ঘটনায় থানায়ও একাধিকবার অভিযোগ করা হয়েছে। হত্যা প্রচেষ্টাসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে বেশকিছু মামলা রয়েছে সাকিবের বিরুদ্ধে।
সাকিবের মা মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী হওয়ায় প্রভাব বিস্তার করে সে এইসব অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে বলে দাবি করা হয়। স্মারকলিপিতে স্টেডিয়ামপাড়াবাসী দ্রুত সাকিব ইকবালের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে।
স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন, স্টেডিয়ামপাড়া কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. হায়াতুজ্জামান, স্টেডিয়ামপাড়ার বাসিন্দা মো. আবুল কালাম আজাদ, গোলাম মোর্শেদ লিন্টু, তাজউদ্দিন আহমেদ, ইঞ্জিনিয়ার নাজিম উদ্দিন, মুয়িদ হোসেন সুমন প্রমুখ।
এই বিষয়ে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) বেলাল হোসাইন বলেন, ‘এলাকাবাসী একটি স্মারকলিপি বা অভিযোগ দিয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করবে পুলিশ। কেউ এলাকায় শান্তি বিনষ্ট বা বিশৃঙ্খলা করছে পুলিশ কাউকে ছাড় দিবে না। যিনি যে রাজনীতি বা ব্যক্তির ছত্রছায়াতে থাকুক না কেন।’