বাংলার ভোর প্রতিবেদক
৪১ দিন বন্ধের পর আবারো বেনাপোল বন্দর দিয়ে রেলপথে ভারতের সঙ্গে শুরু হয়েছে আমদানি বাণিজ্য। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মধ্যে নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে গত ১৯ জুলাই থেকে রেলপথে বন্ধ ছিল বাণিজ্য ও পাসপোর্টধারীদের যাতায়ত। পরবর্তীতে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে রোববার থেকে শুরু হয় রেলে পণ্য আমদানি। খুব শিগগিরই রেলে পাসপোর্টধারী যাতায়তও শুরু হবে বলে জানা গেছে।
বেনাপোল কাস্টমস সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের বন্দর বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ মেহেরুল্লাহ জানান, বেনাপোল বন্দর দিয়ে সড়ক পথের পাশাপাশি রেলপথে ভারতের সঙ্গে আমদানি বাণিজ্য ও পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত করে থাকে। তবে জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মধ্যে নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে ভারত সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়। এর মধ্যে ছিল ১৯ জুলাই থেকে দুই দেশের মধ্যে রেলে পণ্য পরিবহন ও পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত বন্ধ রাখা। এছাড়া বন্ধ করা হয়েছে বাংলাদেশিদের ভিসা প্রদান। তবে ৫ আগস্ট গণঅভ্যুথানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার ব্যবস্থায় স্বাভাবিক হয় দেশ। এতে রেল কর্তৃপক্ষ বাণিজ্য ও যাত্রী চালুর দাবিতে ভারত সরকারের রেল কর্তৃপক্ষকে গত ১২ আগস্ট চিঠি দেয়। কিন্তু নানান অজুহাতে সাড়া না দেয়ায় দেশে বাণিজ্যিক ক্ষতির পাশাপাশি বাংলাদেশ নির্ভর ভারতের প্রতিষ্ঠানগুলোও অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়ে। এক পর্যায়ে ভারত সরকার ৪১ দিন পর রেলপথে পণ্য পরিবহন সেবা চালু করে।
বেনাপোল আমদানি-রফতানি সমিতির সভাপতি আলী হোসেন জানান, কলকাতা থেকে সড়ক পথে ট্রাকে পণ্য পরিবহনে ৫ থেকে ৭ দিন পর্যন্ত সময় লাগলেও রেলে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টায় পণ্য পৌঁছায় বেনাপোল বন্দরে। আগে রেলের মাধ্যমে কেবল পাথর, জিবসাম ও সিমেন্ট তৈরির সামগ্রী আমদানি হলেও এখন গার্মেন্টস, কেমিকেল, মটরকারসহ সব ধরনের পণ্য আমদানি হয়ে থাকে। বেনাপোল বন্দরের আমদানিকারক আব্দুস সামাদ বলেন, ‘বাণিজ্যিক কাজে মাঝে মধ্যেই ভারত যেতে হয়। তবে ভিসা বন্ধ থাকায় যাতায়াতে অসুবিধা হচ্ছে। বাণিজ্যিক ভিসা চালু করার দাবি জানাচ্ছি।’
বেনাপোল আন্তর্জাতিক রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার সাইদুর রহমান জানান, রেলপথে বাণিজ্য ও যাত্রী পরিবহন চালুতে গত মাসের ১২ আগস্ট ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়া হয়েছিল। এতে এ মাস থেকে রেলে পণ্য সেবা তারা চালু করেছে। খুব দ্রুত যাতে যাত্রী সেবা চালু হয় চেষ্টা চালানো হচ্ছে। বেনাপোল স্থলবন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) রাশেদুল সজিব নাজির জানান, রেলে ভারতের সাথে আমদানি বাণিজ্য শুরু হওয়ার পর থেকে দ্রুত পণ্য খালাসের সহযোগিতা করা হচ্ছে।