স্বাধীন মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ
পবিত্র ঈদ-উল ফিতর সমাগত। উৎসব আনন্দে নতুন পোশাকের জন্য নিম্নবিত্ত ও দরিদ্র পরিবারের মানুষ ছুটছেন ফুটপাতের দোকানে। সাধ্যের মধ্যে সাধের পোশা কিনে বাড়ি ফিরছেন। নতুন পোশাক পেয়ে খুশি প্রিয়জন। বেচাকেনা বৃদ্ধি পাওয়ায় খুশি ফুটপাতের অস্থায়ী দোকানের ব্যবসায়ীরাও।
যশোর শহরের মুজিব সড়ক, দড়াটানা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ফুটপাতের দোকানে বিকেল থেকে অল্প অল্প করে ক্রেতা সমাগম বাড়তে থাকে। ইফতারের পর পুরোদমে বেচাকেনা শুরু হয়। সাধারণত মুজিব সড়কের দু’পাশে ফুটপাতে বসা এই সব দোকানে ৩০ থেকে ৩শ’ টাকা মূল্যের পোশাক বেশি পাওয়া যায়। তাই মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের ঈদের প্রিয় পোশাকটি এখান থেকেই ক্রয় করতে হয়। দিনমজুর, খেটে খাওয়া মানুষেরা নিজের ও প্রিয়জনের জন্য এই সব অস্থায়ী দোকান থেকে পছন্দ মত বিভিন্ন ধরনের টি-শার্ট, জামা, পাজামা, টুপি, প্যান্ট ক্রয় করছেন।
অনেক সময় দোকান থেকে দোকানে ঘুরে ঘুরে দেড়শ’ টাকায় নিজের পছন্দের সেরা টি-শার্টটি কিনতে এই সব দোকানে ভিড় করতে দেখা যায় স্কুল, কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের। আবার প্রিয় সন্তানের জন্য এবার ঈদে স্বল্পমূল্যে একটা সুন্দর পোশাক কিনতে মা বাবা ঘুরে ঘুরে পছন্দ করছেন। তবে ফুটপাতের এই দোকানগুলোর বিশেষ আকর্ষণ দেড়শ টাকা মূল্যের বিভিন্ন ধরণের টি-শার্ট। বাচ্চাদের ৩০-৬০ টাকা মূল্যের গেঞ্জি ও প্যান্ট। সারা বছর কম বেশি এই সব কম দামের গেঞ্জি,প্যান্ট পাওয়া গেলেও ঈদের সময় চাহিদা বেশি থাকে। সাধারণত উপজেলা শহরে এমন দামে পোশাক কেনার অস্থায়ী দোকান দেখা যায় না। যে কারণে শহরে অন্যন্য জিনিস কেনা কাটার সাথে সাথে মানুষ কম দামের এই সব পোষাক কিনতে ভিড় করেন।
শহরের ঘোপ বেলতলা এলাকায় মেসে থাকা কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী শিশির হাসান বলেন, ‘বড় বড় মার্কেটে পোশাকের দাম বেশি। সারা বছর বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে, টিউশনি করে চলতে হয়। ঈদের সময় সব নামি দামি ব্রান্ডের পোশাক কিনে বাড়তি খরচ করা সম্ভব না। এখান থেকে কয়েকটা টি-শার্ট কিনলাম। পোশাকের মান একদম খারাপ না। মোটামুটি সব পরিবেশে চলার মত।’
সন্তানের জন্য পোশাক কিনতে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দম্পতি বলেন, ‘বাসায় ছেলে মেয়ে রেখে তাদের জন্য নতুন জামা কাপড় কিনতে এসেছি। একজনের আয়ের উপর সংসার চলে। ঈদে আমাদের নতুন কাপড় এখন বিলাসিতা। দুটো সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে কেনা কাটা করতে হচ্ছে। সামনের মাসে ধার দেনা করে চলতে হবে। সন্তানরা নতুন পোশাক পেলেই খুশি। ওদের কাছে নামি দামি ব্রান্ড বিষয় না। নতুন কাপড়ের ঘ্রাণ পেলেই চলে যাবে।
মুজিব সড়কের ফুটপাতে অস্থায়ী দোকানে বিক্রেতা আল-আমিন বলেন,‘ বিকেলে দোকানে গেঞ্জি সাজাতে সাজাতে বেচাকেনা শুরু হয়ে যায়। রাত যত বাড়ে তত ক্রেতার চাপ বাড়ে। রাতে তারাবির নামাজের পর আমাদের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। অনেক ভিড় বাড়ে আবার একটা পোশাক বিক্রি করতে বেশ কয়েকটা পোশাক দেখাতে হয়। ঈদের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি আছে। আশা করি এবার ঈদে বিক্রি ভালোই হবে।’