রাজগঞ্জ প্রতিনিধি
মণিরামপুর উপজেলা রাজগঞ্জ, নেংগুড়াহাট অঞ্চলে বহুদিন পর হঠাত করেই লক্ষণপুর গ্রামের মাঠে দেখা গেল গরু দিয়ে হালচাষ করতে। আধুনিকতার ছোঁয়ায় কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে হালচাষ। হাজারো বছর ধরে গ্রাম বাংলার কৃষকরা এক টুকরো লোহার ফাল আর কাঠ দিয়ে তৈরি লাঙল জোয়াল ও বাঁশের তৈরি মই ব্যবহার করে গরুর সাহায্যে জমিতে চাষা করে গায়ের ঘাম ঝরিয়ে ফসল ফলিয়েছেন।
বিজ্ঞানের উৎকর্ষতায় এখন সেই লাঙল, জোয়াল, মই এবং গরুর স্থান দখল করেছে ইঞ্জিন চালিত পাওয়ার ট্রিলার এবং ট্রাক্টর বা কলের লাঙ্গল। অথচ কৃষিকাজে রাজগঞ্জ নেংগুড়াহাটসহ গ্রামীণ জনপদের মানুষ যুগের পর যুগ ধরে লাঙ্গল দিয়ে জমি চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেছে। এতে করে একদিকে যেমন পরিবেশ রক্ষা হতো অন্যদিকে কৃষকের অর্থ সাশ্রয় হতো।
এছাড়া হাল চাষের সময় গরু যাতে ফসল নষ্ট করতে না পারে সে জন্য পাট, বেত, বাঁশের কঞ্চি অথবা এক ধরনের গাছ দিয়ে তৈরি করতো গোমাই বা ঠুসি। যা গরুর মুখে বেঁধে দেয়া হয়। আর তাড়াতাড়ি হাল চালানোর জন্য ব্যবহার করেন বাঁশের বা শক্ত কোন লাঠি দিয়ে তৈরি পাচুনি লাঠি। এক যুগ আগেও এসব গরুর হালে লাঙ্গগল-জোয়াল আর মই দিয়ে শুরুহত চাষ।
সম্প্রতি লক্ষণপুর গ্রামের মাঠে বিশু সরকার নামের এক কৃষককে বহুদিন পরে লাঙ্গল দিয়ে চাষ করতে দেখা গেল। চালুয়াহাটি ইউনিয়নে চাষিদের অনেকে নিজের জমিতে হালচাষ করার পাশাপাশি অন্যের জমিচষে পারিশ্রমিক হিসেবে কিছু অর্থও উপার্জন করতেন। তারা হাজারো কর্মব্যস্ততার মধ্যেও কখনো কখনো ফুরফুরে মনে সুখে ভাওয়াইয়া, পল্লী গীতি ও ভাটিয়ালী গান গেয়ে গেয়ে জমিতে চাষ দিতেন। এখন হাতে গোনা দু-একজন কৃষককে পাওয়া যায়। ভোররাত থেকে শুরু করে প্রায় দুপুর পর্যন্ত জমিতে হালচাষ করতেন। কাজের ফাঁকে হুকা ও পাতা বা কাগজের তৈরি বিড়ি খাওয়া তাদের অভ্যাসে পরিণত ছিল বলে মনে করেন অনেকে। আবার একটানা হট হট, ডাই ডাই, বাঁই বাঁই, বস বস আর উঠ উঠ করে যখন ক্লান্তি আসত তখন সূর্য প্রায় মাথার ওপর খাড়া হয়ে উঠত। কালের আবর্তে তা আজ শুধুই স্মৃতি।
শিরোনাম:
- ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে যশোরে বিক্ষোভ
- দেশে শয়তানের প্রয়োজন নেই জামাতই যথেষ্ট : মতিয়ার ফরাজী
- যশোরে ইজিবাইক ধোয়া নিয়ে দ্বন্দ্বেই খুন হন জাহিদুল
- রোববার যশোরে দুদকের গণশুনানি
- তারেক রহমানের উৎসাহে তৃণমূল খেলোয়াড়দের নিয়ে জিয়া ফুটবল টুর্নামেন্ট
- এপেক্স ক্লাব অব নড়াইলের উদ্যোগে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা
- সবজিতেই স্বস্তি ক্রেতার
- ভাগ্য এক দুর্ভাগ্য
