বাংলার ভোর প্রতিবেদক
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানুকে (বীর প্রতীক) গলায় জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছনার প্রতিবাদে যশোরে বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি দিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধারা। বৃহস্পতিবার দুপুরে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেন যশোর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ। স্মারকলিপি গ্রহণ করেন জেলা প্রশাসকের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক রফিকুল হাসান। এর আগে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবন থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি জেলা প্রশাসকের কালেক্টরেট ভবন চত্বরে এসে শেষ হয়। সেখানে বিক্ষোভ করেন মুক্তিযোদ্ধারা। এ সময় বাংলাদেশ স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়কালে মুক্তিবাহিনীর পতাকা হাতে নিয়ে তারা বিভিন্ন স্লোগান দেয়।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক সাংগঠনিক কমান্ডার আব্দুর সাত্তার বলেন, দেশ আমরাই স্বাধীন করেছি, এই স্বাধীনতা আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের। অনেক রক্তের বিনিময়ে এই দেশ। এই দেশের প্রতি আমাদের দরদ আছে, দরদ থাকবে। বাংলাদেশ পাকিস্তান হবে না ।’
বিক্ষোভ চলাকালীন সময়ে নিজ কার্যালয় থেকে বেরিয়ে আসেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক রফিকুল হাসান। এ সময় তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন।
স্মারকলিপিতে মুক্তিযোদ্ধারা উল্লেখ করেন, ‘গত ২২ ডিসেম্বর দুপুরে কুমিল্লার কুলিয়ারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানী আব্দুল হাই কানু বীর প্রতীককে গলায় জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করা হয়। ঘটনাটি দেশ ও জাতির জন্য লজ্জাকর। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ বাঙালি বুকের তাজা রক্ত ও দুই লাখ মা-বোনের সম্ভমের বিনিময়ে জাতি হিসেবে বাঙালি একটি স্বাধীন দেশ উপহার পেয়েছে। মুষ্টিমেয় রাজাকার, আল বদর ছাড়া বাঙালি জাতি মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধভাবে ভূমিকা রাখেন। তার ফলে ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতার বিজয়ের লাল সূর্য অর্জিত হয়। সেই ডিসেম্বর মাসে জাতির সূর্য সন্তানকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। এই লজ্জাজনক ঘটনা জাতির কপালে কলঙ্ক এঁকে দিয়েছে। এটা একাত্তরের চেতনার উল্টো দিকে হাঁটা। যশোরের মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে তারা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। জড়িতদের খুঁজে বের করে দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান মুক্তিযোদ্ধারা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক জেলা কমান্ডার এএইচএম মুযহারুল ইসলাম মন্টু, সাবেক ডেপুটি কমান্ডার প্রকৌশলী আবুল হোসেন, নজরুল ইসলাম চাকলাদার, সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার নজরুল ইসলাম সরদার, সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আফজাল হোসেন দোদুল প্রমুখ।