বাংলার ভোর প্রতিবেদক
বাঘারপাড়া উপজেলার খাজুরা এলাকায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে কিশোর গ্যাং সাকিব বাহিনী। দিন দিন বেড়েই চলেছে তাদের অপরাধের পরিধি। ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক কারবার, নারী উত্যক্তসহ সকল অপরাধেই নাম আসছে এ বাহিনীর সদস্যদের। সর্বশেষ, গত ১৯ অক্টোবর রাতে এক গার্মেন্টস ব্যবসায়ীর গলায় ক্ষুর ঠেকিয়ে টাকা ও মোবাইল ছিনতাইয়ের ঘটনায় ভুক্তভোগী বাঘারপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার ছত্রছায়ায় স্কুল থেকে ঝরে পড়া কিশোর গ্যাং প্রধান সাকিব ও তার সহযোগীরা অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। গত ৫ আগস্টের পর প্রশাসনের নিরবতার সুযোগে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে তারা।
ছিনতাইয়ের শিকার বন্দবিলা ইউয়িনের তেলীধান্যপুড়া এলাকার সঞ্জয় কুমার পাল জানান, খাজুরা বাজার কালিবাড়ি মার্কেটে তার গার্মেন্টেসের দোকান। পাশাপাশি মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশের এজেন্ট। গত ১৯ অক্টোবর দোকানঘর বন্ধ করে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাজারের শিবের মোড় এলাকায় পৌঁছালে তার গলায় ধারালো ক্ষুর ঠেকায় সাকিব ও অজ্ঞাতনামা এক কিশোর। এ সময় সঞ্জয়ের পকেটে থাকা ৮ হাজার টাকাসহ একটি স্মার্ট ও মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয় তারা। মোবাইল দুটির মূল্য প্রায় ২২ হাজার টাকা। সর্বশেষ, বিকাশের পিনকোড চাইলে-সেটি দিতে অস্বীকৃতি জানালে ছিনতাইকারীরা সঞ্জয়কে বেধড়ক মারপিট করে। এ সময় প্রাণভয়ে পিনকোড বলে দেন তিনি। তার বিকাশ একাউন্টে ৭ হাজার টাকা ছিল।
স্থানীয়রা জানান, বন্দবিলা ইউনিয়নের পান্তাপাড়া এলাকার আকরাম হোসেনের ছেলে সাকিব নিজ নামে গড়ে তুলেছেন কিশোর গ্যাং। এ বাহিনীতে রয়েছে ১০-১৫ জনের সদস্য। তাদের শেল্টার দিচ্ছেন, খাজুরা বাজার তেলপাম্প এলাকার এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা ও সাকিবের বড়ভাই আশিক। তিনিও একাধিক ছিনতাই ও চুরির ঘটনায় অভিযুক্ত। বর্তমানে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সাকিব তার সহযোগীদের নিয়ে মোটরসাইকেলে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সারা এলাকা। তেলপাম্প, তেলীধান্যপুড়া, মথুরাপুর, পান্তাপাড়া ও ভাটারআমতলা এলাকায় তাদের আধিপত্য। গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বন্দবিলা ইউনিয়নের এক ব্যক্তির পালসার মোটরসাইকেল কেড়ে নেয় সাকিব। কিছুদিন মোটরসাইকেলটি ব্যবহার করার পর চাঁদার বিনিময়ে ফেরত দেয়া হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত কিশোর গ্যাং প্রধান সাকিবের সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তার মুঠোফোনে বন্ধ পাওয়া যায়।
খাজুরা পুলিশ ক্যাম্পের নবাগত উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রাজ্জাক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ঘটনার পরপরই অভিযান চালানো হয়েছে। তবে অভিযুক্ত পলাতক থাকায় তাকে গ্রেফতার করা যায়নি। এলাকার কিশোর অপরাধীদের একটি তালিকা তৈরি হচ্ছে। তাদের গডফাদারদের ব্যাপারেও খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।