বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের খাজুরা বাসস্ট্যান্ডে কয়েক বছর ধরে ওই মহাসড়ক দিয়ে চলাচলকারী ইজিবাইক থেকে বেশুমার চাঁদাবাজি করে চলেছে স্থানীয় একটি চক্র। জুয়েল নামে এক বিতর্কিত যুবকের নেতৃত্বে ইজিবাইক কেন্দ্রিক চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট এই অনৈতিক কর্মকান্ড অব্যাহত রেখেছে। ওই চক্রের সদস্য আইউব হোসেনসহ কয়েকজন প্রকাশ্যে এই চাঁদাবাজি করে চলেছে বলে অভিযোগ।
গত বছর চক্রের আইউব ও রিপন গোয়েন্দা পুলিশের হাতে আটক হলেও থেমে থাকেনি চক্রটির। খাজুরা স্ট্যান্ড থেকে ছেড়ে যাওয়া ইজিবাইক প্রতি তারা প্রতিদিন আদায় করছে ৫০ টাকা করে। আর প্রতিদিন শতাধিক চালক জিম্মি দশায় পড়ে চাঁদা দিতে বাধ্য হচ্ছেন।
টাকা আদায়ের সময় চক্রের লোকজন স্থানীয় ফাঁড়ি পুলিশের নাম ভাঙিয়ে ভয় দেখাচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় উপশহর ফাঁড়ি পুলিশের কতিপয় সদস্য এই চাঁদাবাজির ঘটনা অবগত থাকলেও অজ্ঞাত কারণে নিরব রয়েছে। ভুক্তভোগী চালকেরা চাঁদাবাজ চক্রের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
খাজুরা বাসস্ট্যান্ড এলাকা ও ভুক্তভোগী ইজিবাইক চালকদের একাধিক সূত্র থেকে তথ্য মিলেছে, খাজুরা স্ট্যান্ড থেকে মাগুরা রুটে আসা যাওয়া করা ইজিবাইকে চালকদের জিম্মি করে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে চাঁদাবাজি। খাজুরা বাস স্ট্যান্ড থেকে শহরের রুটে ইজিবাইক চালালে প্রতিদিন ২০ টাকা করে আদায় করা হয়। খাজুরা বাস স্ট্যান্ড, উপশহর এলাকা থেকে যশোর মাগুরা সড়কে ইজিবাইক ঢুকলেই আদায় করা হচ্ছে ৫০ টাকা করে। উপশহর খাজুরা বাসস্ট্যান্ড থেকে বাহাদুরপুর মনোহরপুর, ইছালী ও খাজুরা পর্যন্ত আসা যাওয়া করা বাইকগুলো থেকে এই হারে চাঁদা আদায় করা হয়। এছাড়া আড়পাড়া মাগুরা ও সীমাখালী থেকে কোনো ইজিবাইক উপশহর খাজুরা স্ট্যান্ডে আসলে তাদের কাছ থেকেও টাকা আদায় করা হয়। ইজিবাইক ও অন্যান্য পরিবহনে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে পুলিশ সুপারের কঠোর হুঁশিয়ারি সত্বেও খাজুরা বাস স্ট্যান্ডের চক্রটি স্থানীয় ফাঁড়ির কতিপয় সদস্যকে ম্যানেজ করে এখানে চাঁদা আদায় করে বলে অভিযোগ। আর রাতে খাজুরা বাসস্ট্যান্ডের দুটি দোকানে চলে চাঁদার টাকার বাগাভাগি।
এদিকে কয়েকজন ইজিবাইক চালক ও চালক সমিতির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিবেদকের কাছে অভিযোগ করেছেন ওই চক্রটি স্থানীয় ফাঁড়ি পুলিশের সামনেই ওই টাকা আদায় করে। উপশহর ফাঁড়ির দুই সদস্যকে প্রতিদিন এক হাজার করে প্রতি মাসে ৩০ হাজার টাকা দেয় বলে জাহির করে চাঁদা উঠাচ্ছে চক্রটি। শেখহাটি ও ঘোপ কবরস্থান পাড়ার একটি চিহ্নিত চক্র এর নেতৃত্বে রয়েছে।
এ ব্যাপারে যশোর কোতোয়ালি থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত একেএম সফিকুল আলম চৌধুরীর সাথে কথা বললে তিনি জানিয়েছেন, কোনো প্রকার চাঁদাবাজি বরদাস্ত করা হবে না। নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। ভুক্তভোগী ইজিবাইক চালকেরা তাকে তথ্য দিলে কিংবা অভিযোগ করলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া অভিযোগের ব্যাপারে তিনি খোঁজখবর নিয়ে কার্যকরি ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানিয়েছেন।