প্রতীক চৌধুরী
যশোরে চৌগাছা উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের কপোতাক্ষ তীরবর্তী হাজরাখানা গ্রামে ঐতিহ্যবাহী পীর বলুহ দেওয়ান (র.) রওজা শরীফের মাজার ঘিরে প্রতিবছর বসে জমজমাট মেলা। মেলায় অংশ নেয়া স্টল থেকে আদায় করা হয় লাখ লাখ টাকার খাজনা। সেই টাকা প্রতিবছর ভাগবাটোয়ারা করে নেন মেলা পরিচালনা কমিটির নেতারা। বঞ্চিত হয় মাজার কর্তৃপক্ষ। এবারও একইভাবে মেলায় আদায় করা টাকা ভাগাবাটোয়ারার আয়োজন করেছে মেলা পরিচালনা কমিটি। যা নিয়ে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। গত মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) শুরু হয়েছে ১০দিনব্যাপি পীর বলুহ দেওয়ানের মেলা। মেলায় আদায় করা উদ্বৃত্ত টাকা মাজারের উন্নয়নে ব্যয় করার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিবছর ভাদ্রমাসের শেষ মঙ্গলবার যশোরের চৌগাছার হাজরাখানা গ্রামে পীর বলুহ দেওয়ানের ওরশ হয়। ওরশ উপলক্ষে এক থেকে দুই সপ্তাহ ধরে চলে গ্রামীণ মেলার আয়োজন। এতে শত শত স্টল বসে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে মেলায়। পীর বলুহ দেওয়ানের মাজার ব্যবস্থাপনার জন্য একটি নিয়মিত কমিটি রয়েছে। এই কমিটি সারাবছর তদারকি করে। আর প্রতিবছর ওরশ উপলক্ষে মেলার আয়োজন করা হয়। এই মেলা পরিচালনার জন্য আলাদা একটি কমিটি গঠন করা হয়। যখন যে রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় থাকে তারাই কমিটির শীর্ষ পদে বসেন। সর্বশেষ গত দুই বছর মেলা কমিটির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন নারায়ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের নেতা শাহিনুর রহমান শাহীন। এবার রাজনীতির পালাবদলে মেলার দায়িত্বে বিএনপির নেতাকর্মীরা। প্রতিবছর মেলা পরিচালনা কমিটি স্টল থেকে আদায় করে হয় লাখ লাখ টাকা। সেই টাকার একটি অংশ বিভিন্নখাতে খরচ দেখানো হয়। উদ্বৃত্ত বাকি টাকা ভাগবাটোয়ারা করেন কমিটির সদস্য, রাজনৈতিক দলের নেতা ও প্রভাবশালী মহল। মেলায় লাখ লাখ টাকা আদায় করা হলেও মাজার কর্তৃপক্ষের ফান্ডে জমা হয়না বলেও অভিযোগ রয়েছে।
হাজরাখানা গ্রামের একাধিক বাসিন্দা বলেন, ওরশ উপলক্ষে মেলা হলেও মেলা ও মাজার কমিটি সম্পূর্ণ আলাদা। মেলায় মাজার কমিটির কোন কর্তৃত্ব নেই। মাজারে ভক্তদের দান করা টাকাই শুধু সেখানে জমা হয়। আর ব্যক্তিমালিকানা জমিতে মেলা বসে। এজন্য সেখানকার আয়ের টাকা খরচ বাদে ভাগবাটোয়ার করে মেলা পরিচালনা কমিটি। এভাবেই চলে আসছে বছরের পর পর। যে দল যখন ক্ষমতায় থাকে, তারাই মেলা নিয়ন্ত্রণ করে। ব্যক্তি মালিকানার জমিতে মেলা বসায় সরকারিভাবে ইজারা দেয়ার সুযোগ নেই।
এ বিষয়ে পীর বলুহ দেওয়ান (র.) রওজা শরীফের খাদেম জয়নাল শাহ বলেন, আমরা মেলায় কোন টাকা কালেকশন করি না। ভক্তদের দানের টাকা ও সম্পদ ফান্ডে জমা হয়। গত দুই বছরে মেলা পরিচালনা কমিটি মাজারের উন্নয়নে মাত্র ১৫ হাজার টাকা দিয়েছে। অথচ মেলার নামে লাখ লাখ টাকা কালেকশন করা হয়। পীর বলুহ দেওয়ানের নামে মেলা হলেও আমরা বঞ্চিত হচ্ছি। গত দুই বছর মেলা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ছিলেন আওয়ামী লীগের নেতা ও চেয়ারম্যান শাহিনুর রহমান। এবার নতুন কমিটি হয়েছে। বিএনপির নেতারা কমিটিতে আছে। যারাই মেলা পরিচালনা কমিটিতে আসে, তারাই মেলার টাকা ভাগবাটোয়ারা করে খায়। আর বদনাম হয় আমাদের।
এ বিষয়ে বলুহ মেলা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, এবার ১০ দিনের মেলার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেছি। মাজার কমিটি ও মেলা কমিটি আলাদা। মেলায় আদায় করা খাজনার টাকা জমির মালিককে ভাড়া, স্বেচ্ছাসেবক, আনসার ও পুলিশ সদস্যদের সম্মানি বাবদ খরচ করা হয়। উদ্বৃত্ত বাকি টাকা এলাকার উন্নয়নে ব্যয় করা হয়। এভাবেই চলে আসছে।
শিরোনাম:
- যশোর মটর পার্টস সমিতির নির্বাচনে ৫৫ জনের মনোনয়নপত্র জমা
- লোকসমাজের প্রকাশক সুমিতের শ্বশুরের ইন্তেকাল, দাফন সম্পন্ন
- বাংলার মিলন মেলার লোগো উন্মোচন ও নিবন্ধন কার্যক্রম উদ্বোধন বৃহস্পতিবার
- স্বল্প খরচে উন্নত চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত যশোরবাসী
- বৈষম্যমুক্ত সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনে কাজ করছে জাকের পার্টি : মহাসচিব
- চুকনগর বণিক সমিতির নির্বাচনে সাহিদুল সভাপতি বিল্লাল সম্পাদক
- কদমতলা বাজার কমিটির আইয়ুব সভাপতি, রফিকুল সম্পাদক
- সাতক্ষীরায় পাচারকালে দুই পিস স্বর্ণের বারসহ আটক ১