বিবি প্রতিবেদক
যশোর শহরের টিবি ক্লিনিক মোড় ছুরিকাঘাতে সোলাইমান হক (৩০) নিহত ও জসিম সিকদার (৩২) আহতের ঘটনায় সম্ভাব্য দুটি কারণ জানিয়েছে পুলিশের তদন্ত সংশ্লিষ্ট ও স্থানীয় সূত্র।
কারণগুলো হলো- টিবি ক্লিনিক এলাকার জসিম ও চাঁচড়া এলাকার আরাফাতের সঙ্গে অনলাইনের জুয়ার টাকার লেনদেন নিয়ে বিরোধ। এর জেরে আরাফাত জসিমকে জখম করে। জসিমের পক্ষ নিয়ে সোলাইমান কথা বলতে গেলে ছুরি মেরে তাকেও জখম করা হয়। এতে সোলাইমানের মৃত্যু হয়। আর দ্বিতীয় কারণ হলো আহত জসিম পুলিশের কথিত সোর্স। পুলিশকে তথ্য দিয়ে একই এলাকার শহিদুল ও শাহিন নামে দুই মাদক কারবারিকে ধরিয়ে দেয়ার অভিযোগে জসিমের উপর হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। নিহত সোলাইমান হোসেন এবং আহত জসিম সিকদার টিবি ক্লিনিক মোড়ের বাসিন্দা। এ ঘটনায় গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি। মামলাও হয়নি বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক।
নিহতের ভগ্নিপতি এবং আহত জসিম সিকদারের ভাই আলমগীর হোসেন আলম জানান, টিবি ক্লিনিক এলাকায় নৈশপ্রহরী পদে চাকরি করেন তার ভাই জসিম সিকদার। একই এলাকার আরাফাত, সিরাজুল, শরীফ, সুজন, মেহেদী, শহিদুল ও শাহিন দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা, ফেনসিডিলসহ নানা ধরনের মাদকের কারবার করে আসছে। নৈশপ্রহরী জসিম সিকদার তাদের মাদক সেবন ও বিক্রিতে নিষেধ করেন। এতে তারা জসিমের উপর ক্ষিপ্ত হয়। গত মঙ্গলবার কোতোয়ালি থানার এএসআই টমাস মণ্ডলের নেতৃত্বে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ইয়াবাসহ শহিদুল ইসলাম ও শাহিনকে আটক করে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, জসিম সিকদার পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করে। আর তার সহকারী হিসেবে কাজ করে সোলাইমান। ইয়াবাসহ শহিদুল ও শাহিনের আটকের ঘটনায় জসিম সিকদার ২০ হাজার টাকা সোর্স মানি পেয়েছে। কিন্তু শহিদুল ও শাহিনকে কেন পুলিশে ধরিয়ে দেয়া হয়েছে এবং তাদের সাড়ে ৪শ’ পিস ইয়াবার টাকা ফেরত দাবি করে প্রতিপক্ষরা। একপর্যায়ে জসিম সিকদারের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকাও তারা নিয়ে নেয়। এরপরও বাকি ইয়াবার টাকার জন্য জসিমকে তারা বার্মিজ চাকু দিয়ে আঘাত করে। এসময় সোলাইমান ঠেকাতে গেলে তাকেও এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে দুর্বৃত্তরা। সোলাইমান ও জসিমকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক আসিফ মোহাম্মদ আলী হাসান মৃত ঘোষণা করেন সোলাইমানকে।
এদিকে পুলিশ বলছে, শুক্রবার সন্ধ্যার পরে শহরের বেজপাড়া টিবি ক্লিনিক মোড়ে জসিম ও আরাফাত নামের দুজনের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে জসিমকে জখম করে আরাফাত পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় সোলাইমান এগিয়ে গিয়ে জসিমের পক্ষ নিয়ে আরাফাতের সঙ্গে কথা কাটাকাটি করেন। একপর্যায়ে সোলাইমানকেও ছুরি মেরে জখম করা হয়। পরে স্থানীয় লোকজন এ দু’জনকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সোলায়মানকে মৃত ঘোষণা করেন। শনিবার দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে তার লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে তালতলা কবর স্থানে দাফন করা হয়েছে।
যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, টিবি ক্লিনিক এলাকার জসিম ও চাঁচড়া এলাকার আরাফাতের সঙ্গে অনলাইনের জুয়ার টাকার লেনদেন নিয়ে বিরোধ ছিল। এর জেরে আরাফাত জসিমকে জখম করে। জসিমের পক্ষ নিয়ে সোলাইমান কথা বলতে গেলে ছুরি মেরে তাকেও জখম করা হয়। এতে সোলাইমানের মৃত্যু হয়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ভুক্তভোগী পরিবার এখনও থানায় কোন অভিযোগ দেয়নি। কাউকে এখনও আটক করা যায়নি। তবে খুনিদের আটকের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তিনি তদন্তের স্বার্থে আর কিছু বলতে রাজি হননি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরান বলেছেন, ঘটনার পরই হাসপাতাল এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। পাশাপাশি এই ঘটনায় জড়িতদের প্রাথমিকভাবে নাম-ঠিকানা পাওয়া গেছে। তাদের আটকের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
শিরোনাম:
- যশোরে নারী সিএসও ও পরিষেবা প্রদানকারীদের মধ্যে সংযোগ স্থাপনে কর্মশালা
- সাবেক এমপি ইয়াকুবের বিরুদ্ধে মাছ লুটের মামলা
- যশোরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মানববন্ধন
- ‘ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসররা অসহিষ্ণু আচরণ করে ছাত্র সমাজকে কলঙ্কিত করছে’
- যশোরে মাংস ও ডিমের দাম চড়া : নিম্ন ও মধ্যবিত্তের পাতে আমিষের টান
- চার দশকে ‘হাজার কোটি টাকা’ জলে ভবদহের ৩৪১ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি
- সাবেক এমপি রণজিৎ রায়, সাবেক এসপি আনিসসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
- যশোরে প্রয়াত নায়ক সালমান শাহ’র জন্মদিন উদযাপন