বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের ঝিকরগাছায় একই পরিবারের তিন সদস্যকে এসিড নিক্ষেপের ঘটনায় জেলের ছদ্মবেশে অভিযান চালিয়ে আসামি ধরেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার বিকেলে নড়াইল জেলার লোহাগাড়া উপজেলার আমাদাহ বিল থেকে জসিম (৪০) নামে ওই আসামিকে আটক করে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত আসামি জসিম বেনাপোলের বাসিন্দা ও ঝিকরগাছা উপজেলার মঠবাড়ি গ্রামের ফজলুর রহমানের কেয়ারটেকার হিসাবে কাজ করতেন। গত ৩ জুলাই রাতে পূর্ব শত্রুতার জেরে জসিম প্রতিবেশি জামাত হোসেনের বাড়ির জানালা দিয়ে অ্যাসিড নিক্ষেপ করেন। এতে ঘরে থাকা জামাত হোসেনের স্ত্রী রাহেলা খাতুন (৪৫), মেয়ে রিপা খাতুন (২৫) ও শিশুপুত্র ইয়ানুর রহমান (৮) গুরুতর আহত হয়। এ ঘটনার পর থেকে জসিম উদ্দিন পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ঝিকরগাছার মঠবাড়ি গ্রামের রিপা বছর চারেক আগে স্বামী পরিত্যক্তা হন। স্বামীর বাড়ি ছেড়ে আসার পর ছেলেকে নিয়ে বাবার বাড়িতে থাকতেন। মঠবাড়ি গ্রামের ফজলুর রহমানের কাজের লোক জসিম রিপাকে দীর্ঘদিন ধরে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। তবে রিপা তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে জসিম জানালা দিয়ে রিপাকে লক্ষ্য করে এসিড মারে।
এতে রিপা, তার ভাই ইয়ানূর ও মা রাহেলা খাতুন দগ্ধ হন। আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার পরদিন ভুক্তভোগীর বাবা ঝিকরগাছা থানায় জসিমকে আসামি করে মামলা করেন। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৫ জুলাই পুলিশের একটি টিম জানতে পারে, জসিম নড়াইল জেলার লোহাগাড়া উপজেলার আমাদাহ বিলে অবস্থান করছে। পুলিশ অভিযানে গেলে দেখতে পায়, জসিম বিশাল বিলের মাঝে আশ্রয় নিয়েছে। পরিস্থিতি বুঝে ঝিকরগাছা থানার এসআই তাপসের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল জেলের ছদ্মবেশ ধারণ করে বিলের মাঝে পৌঁছায়। এরপর কথাবার্তার একপর্যায়ে জসিম পুলিশের ছদ্মবেশ বুঝতে পেরে পানিতে ঝাঁপ দিলে এসআই তাপসও পানিতে ঝাঁপ দেন। পানির মধ্যে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন তিনি। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জসিম ঘটনার দায় স্বীকার করেছে। শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে জসিমকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ঝিকরগাছা থানার এসআই তাপস বলেন, ‘মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে জসিমের লোকেশন খুঁজে বের করি। আমি জানতে পারি, নড়াইলের একটি বিলে সে খাওয়া-দাওয়াসহ সমস্ত কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। পরে স্থানীয় থানার সহযোগিতায় আমরা অভিযানে যাই। পুলিশের পোশাক বা সাধারণ পোশাকে অভিযানে গেলে আসামি বুঝতে পারে। এই জন্য সেখানে জেলে ছদ্মবেশ সেজে গেছিলাম।’