বাংলার ভোর প্রতিবেদক
ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়ক ছয় লেনের উন্নয়নকাজ রয়েছে। প্রকল্প অনুমোদনের তিন বছর পার হলেও দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। ঠিকাদার নিয়োগ, সড়কের গাছ অপসারণ, সীমানা নির্ধারণসহ নামমাত্র কিছু কাজ হয়েছে। তবে ভূমি অধিগ্রহণের ধীরগতিকেই অগ্রগতির পথে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ মনে করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। চ্যালেঞ্জ উত্তরণে দুইটি জেলারই জেলা প্রশাসন কাজ করছে বলে সূত্র দাবি করেছে। তবে নির্মাণকাজ শেষ হলে বদলে যাবে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা।
সূত্র জানায়, ২০২০ সালের ২৪ নভেম্বর একনেক সভায় ওয়েস্টার্ন ইকোনমিক করিডর ফেজ-১-এর আওতায় ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়ক ছয় লেন উন্নয়ন প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্পে ব্যয় ধরা ২ হাজার ৬৪৫ কোটি টাকা। ৪৮ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ঝিনাইদহ-যশোর সড়কের উভয় পাশে দুই লেন বিশিষ্ট সার্ভিস লেনসহ মূল সড়ককে চার লেন উন্নীত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। গুরুত্ব বিচারে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সড়কটির অসামান্য অবদান রয়েছে। সড়কটি এশিয়ান হাইওয়ে, সার্ক হাইওয়েজ করিডর, বিমসটেক রোড করিডর, সাসেক রোড করিডরের হাটিকামরুল অংশের সঙ্গে যুক্ত। এছাড়া যশোর অংশে সড়কটি বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মায়ানমার করিডরের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।
সূত্র মতে, উইকেয়ার ফেজ-১ ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়কে (এন-৭) উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পে বর্ণিত মহাসড়কটি দুই লেন থেকে উভয় পাশে সার্ভিস লেনসহ ছয় লেনে উন্নীতকরণ করা হবে। এতে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে ঝিনাইদহ, যশোর, বিভাগীয় শহর খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা শহরের সাথে সরাসরি সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা সহজতর হবে এবং এলাকার আর্থসামাজিক অবস্থার ব্যাপক উন্নতি সাধিত হবে। এতে ৪৮ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ মহাসড়কে দুইটি সার্ভিস লেনসহ মোট ছয় লেনে উন্নীত করা হচ্ছে। এতে চারটি সেতু, একটি ফ্লাইওভার, পাঁচটি ভেহিকুলার ওভারপাস, চারটি পেডিস্ট্রিয়ান ওভারপাস, ৫৫টি বক্স কালভার্ট, একটি রেলওয়ে ওভারপাস ও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। এজন্য প্রথম প্যাকেজের তিনটি লটে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৬৪৫ কোটি টাকা। প্রতি কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
সূত্র জানায়, লট-১-এর সীমানা ঝিনাইদহ বাসস্ট্যান্ড থেকে কালীগঞ্জ বাজার পর্যন্ত সাড়ে ১৫ কিলোমিটার, লট-২-এর সীমানা কালীগঞ্জ বাজার থেকে মুরাদগড় বাজার পর্যন্ত ১৫ দশমিক ৮ কিলোমিটার এবং লট-৩-এর সীমানা মুরাদগড় বাজার থেকে যশোরের চাঁচড়া মোড় পর্যন্ত ১৫ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার। ঝিনাইদহ অংশের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘ভূমি অধিগ্রহণই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় এ কাজে কাক্সিক্ষত অগ্রগতি হয়নি। যশোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সুজন সরকার বলেন, ‘ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে জমির মালিকদের আপত্তি ও শুনানির জন্য নোটিশ করা হয়েছে। দ্রুতই শুনানি হবে।
ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক এসএম রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এই জেলায় দুইটি প্যাকেজ রয়েছে। এর মধ্যে কালিগঞ্জ এগিয়ে এবং সদর একটু পিছিয়ে। জমিগুলো অধিগ্রহণ করার পর্যায়ে রয়েছে। এজন্য ৭ ধারায় নোটিশ দেয়া হয়েছে। দুই অংশেই ভবন, জমি, গাছ, মাছ ইত্যাদির প্রাক্কলন করছে স্ব স্ব বিভাগ। তাদের প্রাক্কলনের ফলাফল পাওয়ার পর জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হবে। জনবল সংকটসহ নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও অগ্রগতি একেবারেই খারাপ নয়।’