খাজুরা সংবাদদাতা:
যশোর সদর উপজেলার লেবুতলা ইউনিয়নের কোদালিয়া-তেজরোল রাস্তার উন্নয়ন কাজ সম্প্রতি শেষ করেছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। তবে কাজ শেষের দশদিন না পেরোতেই উঠে যাচ্ছে রাস্তার নতুন পিচ। এ অবস্থায় কাজ নিম্নমানের অভিযোগ তুলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। তবে ঠিকাদারের দাবি, কাজে কোনো নিম্মমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়নি।
জানা যায়, গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প-৩ (আইআরআইডিপি) এর আওতায় কোদালিয়া বাজার হারুনের দোকান থেকে তেজরোল ইউনুসের বাড়ি পর্যন্ত ১ কিলোমিটার ২৪০ মিটার পর্যন্ত রাস্তার পিচ ঢালাই করা হয়েছে। ১ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে কাজটি পান যশোর শহরতলির বারান্দীপাড়া এলাকার ঠিকাদার নুর ইসলাম। পরবর্তীতে তার থেকে কাজটি কিনে নেন সদর উপজেলার পুরাতন খাজুরা এলাকার প্রয়াত ঠিকাদার আব্দুর সাত্তারের ছেলে মেহেদী হাসান রামুন। তিনিই সম্প্রতি ১০ ফিট প্রস্থের ওই রাস্তার উন্নয়ন কাজটি শেষ করেছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রাস্তার বিভিন্ন স্থানের পিচ ঢালাই উঠে গেছে। যানবাহনের চাকার সাথে উঠে যাচ্ছে পিচ। এ সময় স্থানীয়রা হাত দিয়ে পিচ উঠে যাওয়ার দৃশ্যও দেখান।
আব্দুল আলিম নামে এক ভ্যানচালক বলেন, এখনই যদি ভ্যানের চাকার সঙ্গে পিচ যায় তাহলে সামনে বর্ষা আসতে আসতে রাস্তার পিচ ঢালাই আর থাকবে না।
কোদালিয়া পূর্বপাড়া এলাকার সোলাইমান কবির রাব্বি বলেন, পায়ের আঙুল দিয়ে ঘষা দিলেও পাথর উঠে যাচ্ছে। আগেই ইটের সলিং-ই ভালো ছিল। এমন পাতলা করে পিচ ঢালাই করার চেয়ে না করাই ভাল।
এদিকে, ভুক্তভোগী কোদালিয়া ও তেজরোল এলাকার কৃষক, দিনমজুর ও শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন মানুষজন গণস্বাক্ষর দিয়ে এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে (এলজিইডি) লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানান স্থানীয় ইউপি সদস্য জাকির হোসেন। তিনি বলেন, কাজের শুরু থেকেই ঠিকাদার রামুন নিম্নমানের ইট, খোয়া, পাথর ও বিটুমিন দিয়ে কাজ করছিলেন। আবার রাস্তা পরিষ্কার না করেই মাটি ও ধুলাবালির ওপর দিয়ে পিচ ঢালাইয়ের কাজ করা হয়েছে। আমি এ অনিয়মের প্রতিবাদ করি। এতে ঠিকাদার ক্ষিপ্ত হয়ে আমার বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দেন।
অভিযুক্ত ঠিকাদার মেহেদী হাসান রামুন বলেন, কাজ চলাকালীন এলজিইডি’র ইউই আজিজুল ও এসএই রায়হান স্যার তদারকি করেছেন। কাজে কোনো ধরনের নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়নি। কয়েক জায়গায় একটু সমস্যা হয়েছে। সেটি আজকালের মধ্যে ঠিক করব।
এ বিষয়ে কথা বলতে বুধবার দুপুরে যশোর সদর উপজেলা এলজিইডি’র প্রকৌশলী (ইউই) আজিজুল হকের সঙ্গে বেশ কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও ফোন ধরেননি তিনি। তবে বিকেলে মুঠোফোনে কথা হয়, উপ-সহকারী প্রকৌশলী (এসএই) এম.এ. রায়হানের সঙ্গে। শুরুতেই তিনি ঠিকাদারের কাজ নিয়ে এক রকমের সাফাই গাইলেন। প্রয়োজনীয় তথ্য জানতে চাইলে সরাসরি অফিসে আসার কথা বলে কল কেটে দেন উপ-সহকারী প্রকৌশলী রায়হান।