বিবি প্রতিবেদক
গত প্রায় দুই যুগ ধরে যশোর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বারান্দিপাড়ার মেঠোপুকুরের দুই কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার না হওয়ায় চলাচলে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। রাস্তাটির প্রায় পুরোটাই খানাখন্দে ভরা। কোথাও রাস্তা ভেঙে পুকুরের মধ্যে চলে গেছে। রাস্তার পাশে থাকা ড্রেনের ঢাকনা না থাকায় ঘটছে দুর্ঘটনা। বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে।
তাই অবশেষে রাস্তার সংস্কারের দাবিতে গতকাল দুপুরে যশোর বারান্দিপাড়া মেঠোপুকুরপাড়া কমিউনিটি ফোরামের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে মানববন্ধন। মানববন্ধনে কয়েকশ মানুষ উপস্থিত হন।
বর্তমানে শীতকাল চললেও এখনও ওই রাস্তায় বিভিন্ন গর্ত, খালা-খন্দ দেখা যাচ্ছে। রিকশা ভ্যান, বাইসাইকেল এই রাস্তায় চলাচলের অনুপযোগী। এমনকি মোটরসাইকেল, বৈদ্যুতিক চালিত অটোরিকশা চলাচল করতে পারছে না। বাধ্য হয়ে মেঠোপুকুরপাড়ের দেড় হাজার বেশি সাধারণ মানুষ পায়ে হেটে যাতায়াতে করছে। এতে সব চেয়ে বেশি সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে শিক্ষার্থী, বয়স্করা ও রোগীরা।
বারান্দিপাড়া মেঠো পুকুরপাড়ার বাসিন্দা শেখ রফিক বলেন, ‘দুদিন আগে আমার স্ত্রী অসুস্থ হন। রাতে হাসপাতালে নিতে রিকশাওলাকে বললে পাঁচ মিনিট পথের জন্য ২০০ টাকা ভাড়া চান। ২০০ টাকা না দিলে রোগী নিয়ে হাসপাতালে যেতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভাঙাচোড়া রাস্তায় বেশি টাকা না দিতে পারলে অনেক সময় রোগীদের কাঁধে বা কোলে করে মেইন রোডে নিয়ে যেতে হয়। সবচেয়ে বেশি কষ্ট ভোগ করতে হয় প্রসূতি মায়েদের নিয়ে।’
বৃদ্ধ আবুল কাশেম বলেন, ‘খানাখন্দে ভরে গেছে রাস্তাটি। এখন চলতে গেলেই হোঁচট খেতে হয়। রিকশা, ভ্যান, সাইকেল, মোটরসাইকেল উল্টে যায়। প্রতিদিনই কোনো না কোনো দুর্ঘটনা ঘটছে।’
আব্দুর রশিদ নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘২০০১ সালে রাস্তাটি তৈরি করা হয়। তারপর থেকে সংস্কার করা হয়নি। রাস্তার পাশের ড্রেনের ঢাকনাও ভেঙে গেছে। জায়গায় জায়গায় ঢাকনা নেই। অনেক সময় বাচ্চারা ড্রেনে পড়ে যায়। রাতে চলতে গেলে হোঁচট খেয়ে ড্রেনের মধ্যে পড়ে যেতে হয়। কয়দিন আগে আমার নাতি সাইকেলে চড়ে স্কুলে যাচ্ছিল। সাইকেল রাস্তার ভাঙায় লেগে পুকুরে পড়ে যায় ‘
রহিমা বেগম, ইনা মণ্ডল, সখিনাসহ সাত নারীর সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। তারা বলেন, ৫০ বছর ধরে এখানে বসবাস করছি। ভোট এলেই উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দেন জনপ্রতিনিধিরা। কিন্তু বিজয়ী হওয়ার পর কোনো কাজ করেন না তারা। ২৩ বছর আগে রাস্তাটি করা হয়েছে। অথচ এরপরে আর সংস্করণ করা হয়নি। রাস্তাটি সংস্করণ করা সময়ের দাবি।’
যশোর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাইদুর রহমান বলেন, মেঠোপুকুরপাড়া রাস্তার নিয়ে যশোর পৌরসভায় আলোচনা হয়েছে। দ্রুত মাপজোক করে ঢাকায় পাঠানো হবে।
পৌরসভার মেয়র হায়দার গণি খান পলাশ বলেন, ৪০ কোটি টাকার অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেছে। খুব শিগগির মেঠোপুকুরসহ ছোট-বড় অনেক রাস্তা সংস্কার ও নির্মাণ করা হবে।

Share.
Leave A Reply Cancel Reply
Home
News
Notification
Search
Exit mobile version