বাংলার ভোর প্রতিবেদক: ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনে যশোরের মনিরামপুরে ১১০ বছর বয়সী বৃদ্ধ এরফান আলী সরদার লাঠিতে ভর করে ভোটকেন্দ্রে এসে ভোট দিয়েছেন। আজ বুধবার ১০ টার দিকে উপজেলার রাজগঞ্জ ডিগ্রী কলেজে ছেলের সঙ্গে তিনি ভোট দিতে আসেন। জীবনের শেষ প্রান্তে ভোটবারের মতো ইভিএম মেশিনে ভোট দিতে পেরে খুশি এই বৃদ্ধ। এরফান আলী সরদার উপজেলার রাজগঞ্জ হানুয়ার গ্রামের মৃত আলম সরদারের ছেলে। স্ত্রী বেঁচে না থাকলেও এই বৃদ্ধ আট সন্তানের পিতা।
ভোট দেওয়া শেষে লাঠি ভর করে নিজেই বের হয়ে যাচ্ছিলেন এরফান সরদার। ভোট কেন্দ্রটির প্রধান ফটকে সঙ্গে কথা হয় বৃদ্ধের সঙ্গে। তিনি এই প্রতিবেদককে জানান, ‘জীবনে অনেকবার ভোট দিয়েছি। প্রতিবারই ব্যালট আর সিল মিলে ভোট দিয়েছি। কখনো কোন ভোট বাদ দেয়নি। এই বয়সে লাঠিতে ভর করে ভোট দিতে পেরে অনেক ভালো লেগেছে। নিজের ভোট নিজে দিতে পেরেছি। ভালোভাবে ভোট দিছি। বয়স অনেক হইছে। জানি না সামনে ভোট দিতে পারব কিনা হয়তো বা এটাই আমার শেষ ভোট। মরণের আগে একটা ভোট দিয়ে গেলাম।’
এরফানের পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন ষাটোর্ধ ছেলে আবুল হোসেন সরদার। তিনি বলেন, নির্বাচনে ভোট দিতে আব্বার খুব আগ্রহ দেখলাম। তাই নিজেই লাঠি ভর করে কেন্দ্রে এসেছে। নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পেরে আব্বা খুবই আনন্দিত।’
কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার আশিষ কৃষ্ণ বলেন, ‘এই কেন্দ্রে আজ এরফানই সবচেয়ে বয়স্ক ভোটার। তিনি সকাল ১০টার দিকে কেন্দ্রে এসে ভোট দিয়েছেন। তিনি জানান, কেন্দ্রটিতে ৪২ ০০ ভোটার। দুই ঘন্টায় ৪৬ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছে। ভোট কেন্দ্রে কোন প্রকার অপ্রতিকর ঘটনা ঘটেনি। সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহন চলছে।’
নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মণিরামপুরে উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন লাভলু আনারস প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক ফারুক হোসেন লড়ছেন মোটরসাইকেল প্রতীকে। অপর প্রার্থী মিকাইল হোসেন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। ঙ এদিকে, উপজেলাটিতে ভাইস চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ নেতা সন্দীপ ঘোষ, মঞ্জুরুল ইসলাম, এসএম আব্দুল হক ও শরিফুল ইসলাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই পদে দ্বিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখছেন অনেকে।
মণিরামপুরে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আমেনা বেগম, জলি আক্তার মাহবুবা ফেরদৌস পাপিয়া, জেসমিন, মাজেদা খাতুন ও সুরাইয়া বেগম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ পদে চার প্রার্থী থাকলেও মাহবুবা ফেরদৌস পাপিয়া, আমেনা বেগম, জলি আক্তার ও সুরাইয়া বেগমের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ভোটাররা মনে করছেন।
মণিরামপুরে উপজেলা নির্বাচনে ১৬৫টি ভোট কেন্দ্রে ৯৩১টি কক্ষে ভোটগ্রহণ চলছে। ১৬৫ প্রিজাইডিং অফিসার ও ৯৩১ সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার দায়িত্ব পালন করছেন। এ উপজেলায় মোট ভোটার ৩ লাখ ৬০ হাজার ৭৩৫।
মণিরামপুরের নির্বাচনে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন অফিসার কল্লোল বিশ্বাস জানিয়েছেন, ‘উপজেলাতে প্রথমবারের মতো ইভিএমে ভোট গ্রহন চলছে। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে সর্বস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে।’