মনিরামপুর সংবাদদাতা
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) এক বাস চালককে মারধরের অভিযোগে ঘন্টাব্যাপি সড়ক অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। বাস ওভারটেকিং করার সময় লুকিং গ্লাস ভাঙার জেরে টোল আদায়কারী শ্রমিকদের সঙ্গে নিয়ে যবিপ্রবি’র বাস চালকে মারধর করা হয়। রোববার (২১ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজারহাট-চুকনগর আঞ্চলিক সড়কের মণিরামপুর উপজেলার আটমাইল নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুই জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়।
জানা গেছে, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বহনকারী একটি বাস সকালে মণিরামপুর থেকে ছেড়ে যায়। রোববার যবিপ্রবি’র বিআরটিসি’র বাসটির চালক ছিলেন পিন্টু। বাসটি আটমাইল নামক স্থানে পৌছালে যবিপ্রবি’র বাসের পিছন দিক থেকে আসা অপর একটি বাসের ধাক্কায় বাসের লুকিং গ্লাস ভেঙে যায়। এ নিয়ে দুই বাস চালকের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে সড়কের টোল আদায়কারীদের সঙ্গে নিয়ে বিআরটিসির পিন্টু নামের বাস চালককে মারধর করে অপর বাসচালক ও হেলপার। এ সময় বাসে থাকা যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সড়কে নেমে আসে এবং ঘন্টাব্যাপি সড়ক অবরোধ করে রাখে। খবর পেয়ে মণিরামপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যান। পরে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. হাফিজ উদ্দিন ঘটনাস্থলে আসেন। যবিপ্রবি’র বাস চালককে মারধরের সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানার ওসি শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেয় তারা। পরে প্রক্টর যবিপ্রবি’র শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে নিয়ে যান বিশ্ববিদ্যালয়ে।
এদিকে, যবিপ্রবি’র বাস চালককে মারধর ও হেনস্থা করার অপরাধে ঘটনাস্থল থেকে অপর (লোকাল) বাসচালক কেশবপুর উপজেলার হাফিজুর রহমান ও হেলপার মণিরামপুর উপজেলার খানপুর গ্রামের সাইদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শী যবিপ্রবি’র প্রশাসনিক কর্মকর্তা সৌরভ ভট্টাচার্য্য বলেন, সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে যবিপ্রবি’র শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বাহনকারী বাসটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে লোকাল বাস চালক, হেলপার ও কতিপয় শ্রমিকদের সঙ্গে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা ঘন্টাব্যাপি সড়ক অবরোধ করে। ওই সময় যবিপ্রবি’র বিআরটিসির পিন্টু নামের এক চালককে মারধর করা হয়।
যবিপ্রবির শিক্ষার্থী জানান, লোকাল বাস চালক ও টোল আদায়কারীরা মিলে যবিপ্রবি’র বিআরটিসির বাস চালক পিন্টুকে মারধর করেছে, আমরা এর সঠিক বিচার চাই।
মণিরামপুর থানা অফিসার ইনচার্জ এবিএম মেহেদী মাসুদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস ওভারটেকিং করার সময় লোকাল বাসের সঙ্গে ধাক্কা লাগে বলে জানান শিক্ষার্থীরা। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করি। দুইজনকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে ওসি বলেন, ঘটনা কি, জানার জন্য থানায় আনা হয়েছিল। যবিপ্রবি’র প্রক্টর মহোদয় এসে শিক্ষার্থীদেরকে ফিরিয়ে নিয়ে যান।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) প্রক্টর অধ্যাপক ড. হাফিজ উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ওসি সমন্বয় করে ঘটনার সঙ্গে জড়িদের ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের আশ্বাস দেয়ায় অবরোধ তুলে নেয় শিক্ষার্থীরা।