বাংলার ভোর ডেস্ক
দেশে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ (সিইসি) ১৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম ষষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরিফুল ইসলামের আদালতে প্রতারণা ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলাটি করেন মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম। তিনি নগরের চকবাজার থানা এলাকার বাসিন্দা।
আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে সহকারী পুলিশ কমিশনার পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তাকে দিয়ে ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলায় ২০১৪, ২০১৮, ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিন আহমদ, কে এম নূরুল হুদা ও কাজী হাবিবুল আওয়াল ছাড়াও আসামি করা হয়েছে নির্বাচন কমিশনার আবু হাফিজ, মো. জাবেদ আলী, মো. আবদুল মোবারক, মো. শাহনেওয়াজ, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, শাহাদাৎ হোসেন চৌধুরী, নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলাল উদ্দিন আহমদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান, বেগম রাশেদা সুলতানা, মো. আলমগীর, মো. আনিসুর রহমান, নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলমকে।
এ ছাড়া নির্বাচনের নির্দেশদাতা হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে আসামি করা হয়েছে।
বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট কফিল উদ্দিন বলেন, ‘গত তিন সংসদ নির্বাচনে বিরোধী দলসহ অনেক জনপ্রিয় নেতার অংশগ্রহণ ছিল না। সাধারণ মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। তাই রাষ্ট্রদ্রোহ ও প্রতারণার অভিযোগে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য দিয়েছেন।’
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের একপেশে, জনগণের অংশগ্রহণবিহীন ভুয়া জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন এবং সংবিধান রক্ষণ, সমর্থন ও নিরাপত্তা বিধানের শপথ ভঙ্গ করে অনির্বাচিত ব্যক্তিদের ভুয়া সংসদ সদস্য ঘোষণার ক্ষেত্রে আসামিদের সক্রিয় ভূমিকা ও অংশগ্রহণ ছিল। ভুয়া নির্বাচন আয়োজন ও অনির্বাচিত ব্যক্তিদের সংসদ সদস্য (এমপি) ঘোষণার কারণে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশন, জাতীয় সংসদসহ সব সাংবিধানিক কাঠামোর প্রতি মানুষের আস্থা, বিশ্বাস ও প্রত্যয় নষ্ট হয়ে যায়। ফলে সংসদ সদস্যদের ব্যঙ্গ করে ক্ষুব্ধ জনগণ ২০১৪ সালের সংসদ সদস্যদের ‘বিকাশ এমপি’, ২০১৮ সালের সংসদ সদস্যদের ‘নিশিরাতের এমপি’ এবং ২০২৪ সালের সংসদ সদস্যদের ‘আমি-ডামির এমপি’ বলে হেয় করতো।
এতে আরও বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ও ইন্ধনে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে জনগণের সব গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ, দেশের সংবিধান ও আইনকে লঙ্ঘন করে একপেশে, জনগণের অংশগ্রহণবিহীন ভুয়া নির্বাচনের মাধ্যমে কিছু অনির্বাচিত লোককে সংসদ সদস্য ঘোষণা করেন।
পরে তাদের মন্ত্রী ও স্পিকার ঘোষণা করা হয়। দেশের মানুষ ভোট দিতে না পারায় নির্বাচনবিমুখ হয়ে পড়েন। বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে গণতন্ত্র। দেশে স্বৈরচারী লুটেরা ব্যবস্থার আবির্ভাব হয়। সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীরা সব সম্পদ বিদেশে পাচার করে দেশের অর্থনীতি পঙ্গু করে দেন।
##