বাংলার ভোর প্রতিবেদক
নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে ভারতীয় দূতাবাস কর্তৃক বাংলাদেশিদের ভিসা প্রদান বন্ধ রাখায় ভারত ভ্রমণে অর্ধেকের নিচে নেমেছে পাসপোর্টধারী যাতায়াত। এতে চিকিৎসা, ব্যবসা, উচ্চশিক্ষা গ্রহণসহ জরুরি প্রয়োজনে অনেকে যেতে না পেরে বিভিন্নভাবে ক্ষতির শিকার হচ্ছেন।
এদিকে, ভিসা ফি ও ভ্রমণ করের অর্থ বছরে বছরে বাড়ানো হলেও নানা প্রতিশ্রুতির পরও কাঙ্খিত সেবার মান বাড়েনি বন্দরে। খোলা আকাশের নিচের কখনো রোদ কখনো বৃষ্টিতে ভিজে গমন করতে হয় ভারতে। ভিসা প্রদান চালু ও সেবা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
জানা যায়, বেনাপোল বন্দর থেকে ভারতের কলকাতা শহরের দূরত্ব ৮৪ কিলোমিটার। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় চিকিৎসা, ব্যবসা, ভ্রমণ ও উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে সবচেয়ে বেশি পাসপোর্টধারী বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর ব্যবহার করে থাকেন। স্বাভাবিক সময়ে এ যাত্রীর সংখ্যা ছিল ৮ থেকে ১০ হাজারের উপরে। তবে জুলাই ও আগস্টের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হলে নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে বাংলাদেশিদের ভিসা প্রদান বন্ধ করে দেয় ভারত। বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্বগ্রহণের পর দেশের পরিবেশ স্বাভাবিক হলেও ভিসা প্রদান চালু করেনি ভারতীয় দূতাবাস। এতে পাসপোর্টধারীর সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ৩ হাজারের ঘরে। জরুরি প্রয়োজনে ভারত ভ্রমণ করতে না পেরে বিভিন্ন ভাবে ক্ষতির শিকার হচ্ছেন বাংলাদেশিরা।
এদিকে, ভারত ভ্রমণে একজন পাসপোর্টধারীকে ভ্রমণ কর বাবদ ১০৫৫ টাকা ও ভিসা ফি বাবদ ভারতীয় দূতাবাসকে ৮৪০ টাকা দিতে হয়। তবে সীমান্তে যাত্রী সেবা না বাড়ানোয় ভোর সাড়ে ৩টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত সড়কের উপর পরিবার পরিজনদেরকে নিয়ে লম্বা লাইনে দাঁড়াতে হয়। বন্দরে একটি প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল থাকলেও সেখানে বন্দর কর্মকর্তারা অফিসের কার্যক্রম করায় যাত্রীরা সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন। ভারতগামী এক পাসপোর্টধারী জানান, ভিসা বন্ধ থাকায় অনেকে যেতে পাছেন না। ভ্রমণ কর ও ভিসা ফি বাড়লেও সেবা বাড়েনি।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের দপ্তর সম্পাদক মোস্তাফিজ্জোহা সেলিম জানান, ভিসা প্রদান বন্ধ রাখায় বাণিজ্যিক ক্ষতি বাড়ছে। দেশ যেহেতু এখন স্বাভাবিক তাই ভিসা প্রদান আবারো শুরু করার অনুরোধ জানাচ্ছি ভারত সরকারের কাছে।
বেনাপোল আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের ইনচার্জ তানজিলুর রহমান জানান, ভিসা বন্ধের কারণে পাসপোর্টধারী যাতায়াত কমেছে। যাত্রী সেবা বাড়াতে নানান পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন ওসি ওমর ফারুক মজুমদার জানান, শুক্রবার বেনাপোল বন্দর ব্যবহার করে ভারতে গেছে ১৮২৬ জন পাসপোর্টধারী। এর মধ্যে ভারতীয় ৮২৭ ও ১ জন ইন্দোনেশিয়ান। ভারত থেকে ফিরেছেন ২৩২৫ জন, এর মধ্যে ভারতীয় ৮২৫ ও ১ জন নেপালের নাগরিক ছিলেন।