বাংলার ভোর প্রতিবেদক
আদালতের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞায় ভোট গ্রহণের দু’দিন আগে বন্ধ হয়ে গেল যশোর জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন। বৃহস্পতিবার যশোর জেলা ও দায়রা জজ আদালত এই আদেশ দেন। বর্তমান নির্বাহী কমিটির বিরুদ্ধে মেয়াদোত্তীর্ণ ও অনিয়মের অভিযোগ এনে সংগঠনের ১৭ সদস্য আদালতে মামলা দায়ের করেন। নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মধ্যে থেকেই হঠাৎ করে মামলার মাধ্যমে নির্বাচন বন্ধ করে দেয়ায় সাধারণ সদস্যদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার ইউনিয়নের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বর্তমান নির্বাহী কমিটি গত ২৩ আগস্ট সাধারণ সভার মাধ্যমে পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করে এবং তফসিল ঘোষণা দেয়। কমিশনের ঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী ২৫ অক্টোবর ভোটগ্রহণের কথা ছিল। তফসিল অনুযায়ী ১৭টি পদে ৩৪ জন প্রার্থী দু’টি প্যানেলে বিভক্ত হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। মনোনয়নপত্র জমা থেকে প্রতীক বরাদ্দ এমনকি নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায়ও মাঠে ছিলেন।

কিন্তু এরই মধ্যে একটি পক্ষ ভোটগ্রহণের কয়েকদিন আগে হঠাৎ করে আদালতের স্মরণাপন্ন হন। তাদের দাবি, ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর সাধারণ সভায় গঠনতন্ত্রের ১৮ ও ১৯ নম্বর ধারা সংশোধন করে নির্ধারণ করা হয় যে, কার্যনির্বাহী কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার ৪৫ দিন আগে নতুন নির্বাচনের সব কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। কিন্তু বর্তমান কমিটি সেই নিয়ম অমান্য করে মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পরও দায়িত্বে থেকে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় গড়িমসি করে।

এই পক্ষের ইউনুস আলী, রেজাউল ইসলামসহ সংগঠনের ১৭ জন সাধারণ সদস্য যশোর সদর সহকারী জজ আদালতে নির্বাচনী কার্যক্রম স্থগিতের আবেদন জানিয়ে মামলা করেন। বুধবার তাদের আবেদন আদালত খারিজ করে দেয়। বৃহস্পতিবার আপিল করলে জেলা ও দায়রা জজ আদালত নির্বাচন কার্যক্রমের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
এদিকে, নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মধ্যে থেকেই হঠাৎ করে মামলার মাধ্যমে ভোটগ্রহণের দু’দিন আগে নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়ায় সাধারণ সদস্যদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে।

নির্বাচনী মাঠে থাকা বিষু-মিজান পরিষদের সভাপতি প্রার্থী বর্তমান সভাপতি বিশ্বনাথ ঘোষ বিষু বলেন, জুলাই-আগস্টের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণেই কার্যনির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নির্বাচন কিছুদিনের জন্য পেছানো হয়েছে। গঠনতন্ত্রে এর অনুমোদন রয়েছে। যারা আদালতে গেছেন, তারা কিন্তু তফসিল অনুযায়ী নির্বাচন প্রক্রিয়ায় মাঠে ছিলেন। প্রতীক বরাদ্দ নিয়েছেন, প্রচার প্রচারণাও চালিয়েছেন। কিন্তু নির্বাচনী মাঠে তাদের অবস্থা সুবিধার নয়, বুঝতে পেরে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছেন।

কোনো অনিয়ম-দুর্নীতি হয়নি দাবি করে বিশ্বনাথ ঘোষ বিষু আরও বলেন, যেহেতু বিষয়টি আদালতে গেছে। তারা আইনগতভাবেই এটির মোকাবেলা করবেন। তবে ভোট বন্ধ করে দেয়ায় সাধারণ শ্রমিকরা হতাশ হয়েছেন। তারা ভোটের মাধ্যমেই নেতৃত্ব নির্বাচন করতে চান।

Share.
Leave A Reply Cancel Reply
Home
News
Notification
Search
Exit mobile version