বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোর শহরের আওয়ামী লীগের দু’ পক্ষের মাঠের রাজনীতিতে কর্মী সমাগম ঘটাতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে ছাত্রলীগ। আর শহরের মেসগুলো থেকেই এসব কর্মীর অধিকাংশ সরবরাহ করা হয়। এবং কলেজের আবাসিক হল থেকেই নিয়ন্ত্রণ করা হয় ব্যক্তিমালিকানাধীন মেসগুলো। ফলে মেসগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখতেই দু’ পক্ষই হল দখলে রাখতে মরিয়া অবস্থানে থাকে। সর্বশেষ রোববার সরকারি এম এম কলেজের আসাদ হল দখলে নিয়েছে শাহীন চাকলাদারের অনুসারীরা। এই হলে ১২০ জনের সিট থাকলেও জেলা ছাত্রলীগের দু’পক্ষের নৈরাজ্য, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, হানাহানিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা কেউ থাকে না। এমনকি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হলে মাদক সেবনের অভিযোগও রয়েছে। ফলে ১২০ আসনের বিপরীতে জায়গায় বর্তমানে হলে বসাবাস করেন ২৫ থেকে ৩০ জন। তার মধ্যে বেশির ভাগ অছাত্র, বহিরাগত। তারা সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জেলা আওয়ামী লীগ দুটি গ্রুপে বিভক্ত। একটি পক্ষের নেতৃত্ব দেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার। অন্যটি স্থানীয় এমপি কাজী নাবিল আহমেদ। জেলার রাজনীতির গ্রুপিংয়ের মতো ক্যাম্পাসেও এই দুই শীর্ষ নেতার অনুসারীদের রাজনীতি বলয় রয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের জোর করে বিভিন্ন দলীয় কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য করা, বিভিন্ন মেসে মাদক সেবন, মাদক বিক্রি, বিভিন্ন প্রগ্রামের নামে চাঁদাবাজি, ক্যাম্পাসে নৈরাজ্য আধিপত্যে বিস্তারে কাজ করে আসাদ হলের আবাসিক ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। আর এসব কাজে কলকাঠি নাড়েন অছাত্র, বহিরাগতরা।
বিভিন্ন সময়ে হল দখল, নেতাকর্মীদের ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলার কারণে সম্প্রতি কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এমএম কলেজ ছাত্রলীগের এক নেতা বলেন, এমএম কলেজের আশপাশে দুই শতাধিক ব্যাক্তিমালিকানা ছাত্রাবাস বা মেস রয়েছে। এসব মেস নিয়ন্ত্রণ করে আসাদ হল ছাত্রলীগ। মূলত জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কর্মসূচিতে জনসমাগম ঘটতে সাধারণ ছাত্রদের নিয়ে যেতে বাধ্য করে আসাদ হল ছাত্রলীগ। এত দিন কাজী নাবিলের মিছিল-মিটিংয়ে আসাদ হল ছাত্রদের নিয়ে যেত। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে শাহীনের অনুসারীরা হল দখলে মরিয়া হয়ে ওঠে। সেই সুযোগে শাহীনের অনুসারী হল দখলে নিয়েছে।
এই বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার বলেন, ‘কে কারা হল দখল করেছে জানা নেই। আমাদের কোন কর্মী বা নেতা কাউকে মিছিল-মিটিং ও সমাবেশে যোগ দিতে বাধ্য করে না। দলের প্রতি ভালোবাসাতে তারা কর্মসূচিতে আসে। এখানে কোন প্রভাব আধিপত্যের কোন বিষয় না।’ আর কাজী নাবিল আহমেদের মুঠোফোনে কয়েক দফা যোগাযোগ করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।