বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরে ট্রাক ও মোইরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে আসিফ হোসেন (১৯) নামে এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। এই ঘটনায় গুরুতর আহত হন আরও একজন। আজ রবিবার দুইটার দিকে যশোর -ঝিনাইদহ মহাসড়কের যশোরের খয়েরতলা এলাকাতে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী ও নিহতের স্বজনেরা সড়কে গাড়ি আটকে বিক্ষোভ করেন। পরে ফায়ার সার্ভিস ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। নিহতের মরদেহ যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। নিহত আসিফ সদর উপজেলার চুড়ামণকাটি ইউনিয়নের ঝাউদিয়া গ্রামের মেহের আলীর ছেলে। আর গুরুতর আহত রাকিবুল ইসলাম শুভ যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তারা দুজনেই পালবাড়িতে অবস্থিত টেকনিক্যাল এন্ড ম্যানেজমেন্ট কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।

নিহতের স্বজনেরা ও পুলিশ জানিয়েছে, আগামি মাসে নিহত আসিফ মালয়েশিয়াতে যাওয়ার কথা ছিলো। এই জন্য যশোর পার্সপোট অফিসে পার্সপোটের আবেদন করেন। আজ তার পার্সপোট দেওয়ার দিন ছিলো। দুপুরে তার কলেজের বন্ধু রাকিবকে নিয়ে পার্সপোট আনতে যান। ফেরার পথে যশোর -ঝিনাইদহ মহাসড়কের যশোরের খয়েরতলা নামক স্থান আসলে ঝিনাইদহ থেকে আসা একটি ট্রাকের সঙ্গে তাদের মোটরসাইকেলের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনা স্থলেই আসিফের মৃত্যু হয়। আর গুরুতর অবস্থায় স্থানীয়রা রাকিবুলকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। ঘটনার পর স্থানীয় বিক্ষুদ্ধ জনতা ও নিহতের স্বজনেরা সড়কে গাড়ি আটকে দিয়ে বিক্ষোভ করেন।

ঘটনা স্থলেই আসেন নিহত আসিফের মা বাবা ও চাচা। অকালে এভাবে মারা যাওয়ার বিষয়টি মেনে নিতে পারছিলেন না তারা। তারা তিন জনেই সড়কের পাশে আহাজারি করতে দেখা গেছে। স্থানীয়রা তাদের শান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। বুকফাটা আর্তনাদ করছিলেন বাবা মেহের আলী। ভাইকে জড়িয়ে ধরে বলছিলেন, ‘আমার কি হয়ে গেলো। আমার তো সব শেষ! হে মাবুদ তুমি আমার ছেলেটারে কেন এভাবে কেড়ে নিলে। ছেলেটারে বিদেশে পাঠাতে চাইছিলাম। কাগজপত্রও এসেছিলো। আজ পার্সপোট দিবে বলে খুব খুশি ছিলো। পার্সপোট আনতে গেয়ে ছেলেটার প্রাণটা চলে গেল। আমি কি নিয়ে বাঁচবো। বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় সাবধানে গাড়ি চালাতে বলেছিলাম। ছেলেটা ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হলো। আমার স্বপ্নও পিষ্ট হলো……।

আসিফ সেখানে ট্রাকরে চাকায় পিষ্ট হয়; তার দেড় গজ দূরেই টেকনিক্যাল এন্ড ম্যানেজমেন্ট কলেজ। আসিফ নিহতের খবর পেয়ে তার বন্ধুরাও ছুটে আসেন ঘটনাস্থলে। এরপর তার স্বজন ও বন্ধুদের বুকফাটা আর্তনাদে শোকাবহ পরিবেশ সৃষ্টি হয় খয়েরতলা এলাকা।
যশোর কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত বলেন, ‘ঘাতক ট্রাকটি আটক করা গেছে। ট্রাকটির চালক পালিয়ে গেছে। মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। এই ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রীয়াধীন।’
Share.
Exit mobile version