বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের ৯৩টি ইউনিয়ন পরিষদে সক্রিয় হয়েছে গ্রাম আদালতের কার্যক্রম। গত সাত মাসে গ্রাম আদালতে ৬৭০টি মামলা দায়ের হয়েছে। এর মধ্যে ৬০৩টি মামলার সুষ্ঠু নিষ্পত্তি হয়েছে। দায়ের হওয়া মামলার মধ্যে ৫৪৫ টি সরাসরি ইউনিয়ন পরিষদ ও ১২৫ টি জেলা আদালতের। গ্রাম আদালতে মোট ২৭ টা ধারায় বিভিন্ন ফৌজদারি ও দেওয়ানী মামলার বিরোধ নিষ্পন্ন করা হয়। গ্রাম আদালতের বিচারিক কার্যক্রমে মানুষের ভোগান্তি কমেছে। সেই সাথে বিচারপ্রার্থীদের আস্থাও অর্জন করেছে। রোববার সকালে জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে ‘গ্রাম আদালত কার্যক্রম’ সম্পর্কে সচেতনতা বিষয়ক সমন্বয় সভায় এই তথ্য জানানো হয়। বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ ৩য় পর্যায় প্রকল্পের ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার অ্যাড. মহিতোষ কুমার রায় প্রকল্প পরিচিতি, সভার উদ্দেশ্য, গ্রাম আদালত বিষয়ে প্রচার-প্রচারণায় অংশগ্রহণকারীদের করণীয়, গ্রাম আদালত আইন এবং প্রকল্পের অগ্রগতি বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক মো. রফিকুল হাসান। তিনি বলেন, উচ্চ আদালতের মামলার জট কমানোর লক্ষ্যে সরকার গ্রাম আদালতকে সক্রিয়করণ করছে। অথচ গ্রাম আদালত সম্পর্কে মানুষের ধারণা কম। মানুষের মধ্যে ব্যাপক প্রচারণা বৃদ্ধির জন্যই অংশীজনদের নিয়ে এই সমন্বয় সভা। স্বল্প সময়ে, স্বল্প খরচে হয়রানিমুক্ত হয়ে স্থানীয় বিরোধ স্থানীয়ভাবে নিষ্পত্তির জন্য গ্রাম আদালত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গ্রাম আদালত সম্পর্কে অধিকাংশ জনগণ এখনো জানে না। সে কারণে আজ আমরা সরকারি ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের নিয়ে সমন্বয় সভার আয়োজন করেছি। সাংবাদিকরা গ্রাম আদালত এর সেবা বিষয়ে তাদের পত্রিকায় সংবাদ প্রচার করবেন।
এনজিও প্রতিনিধিরা তাদের সচেতনতামূলক কর্মসূচির মাধ্যমে গ্রাম আদালত সম্পর্কে আপনাদের সুবিধাভোগী বা সমাজের মানুষকে সচেতন করবেন। একইভাবে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাগণ তাদের কর্মসূচির মধ্যে গ্রাম আদালতকে একটি এজেন্ডা হিসেবে প্রচার করবেন। আপনারা ইউটিউব থেকে বাড়ির কাছে গ্রাম আদালত নামে একটি নাটক আছে, যা দেখলে গ্রাম আদালত সম্পর্কে পরিস্কার ধারনা পাবেন মর্মে অবহিত করেন।
সমন্বয় সভায় উপস্থিত ছিলেন, জেলার মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা আনিসুর রহমান, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মনোতোষ বসু, দৈনিক কল্যাণের সম্পাদক একরাম উদ-দ্দৌলা, পুলিশ পরিদর্শক মাহবুবুর রহমান, জয়তী সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক অর্চনা বিশ্বাস, রাইটস যশোরের নির্বাহী পরিচালক বিনয়কৃষ্ণ মল্লিক, এডাবের সহসভাপতি শাহাজান নান্নু প্রমুখ।
দাতা সংস্থা ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও ইউএনডিপি এবং বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের আওতায় স্থানীয় সরকার বিভাগ গ্রাম আদালত সক্রিয়করণের তৃতীয় পর্যায়ে প্রকল্পের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতকে সক্রিয় করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।