বাংলার ভোর প্রতিবেদক
১২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ মটর পার্টস ও টায়ার টিউব ব্যবসায়ী সমিতি যশোর সার্কেলের নির্বাচন। নির্বাচনে সংস্কার ও উন্নয়ন পরিষদ গতকাল ১০ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছে। কাসেদুজ্জামান সেলিম ও এজাজ উদ্দিন টিপুর নেতৃত্বাধীন এই পরিষদ প্রেসক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তাদের ইশতেহার ঘোষণা করেন। এর বাইরে সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তর পর্বে নেতৃবৃন্দ ব্যবসায়ীদের স্বার্থ ও সুরক্ষায় আরো কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার ইচ্ছার কথা ব্যক্ত করেন।
লিখিত বক্তব্যে প্যানেল লিডার বিসমিল্লাহ অটোর সত্ত্বাধিকারী কাসেদুজ্জামান সেলিম ১০ দফা ইশতেহার তুলে ধরেন। ১০ দফা হলো গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ বজায় রাখতে ২ বছর পর সময়মতো গঠনতান্ত্রিক মোতাবেক স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করা। ভ্যাট ও অন্যান্য বিষয়ক জটিলতা দূরীকরণ ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণ এবং কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে মর্যাদাপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করা। ব্যবসায়ী সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটি ও যশোর চেম্বারের সহায়তায় ব্যবসায়িক সমস্যা সমাধান ও সদস্যদের উন্নয়নে কাজ করা। সমিতির আয়-ব্যয় স্বচ্ছ রাখা ও নিয়মিত অডিটের মাধ্যমে নিশ্চিতকরণ, প্রতি বছর সাধারণ সভার মাধ্যমে বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ ও অনুমোদনের ভিত্তিতে সদস্যদের হাতে পৌছে দেয়া।
সমিতির সদস্যদের শিক্ষা বৃত্তি ও আর্থিক সহায়তা প্রদান এবং শিক্ষাবৃত্তি পেতে যোগ্যতার ভিত্তিতে বিশেষ মূল্যায়নের ব্যবস্থা নেয়া। সদস্যদের পরিবারে কন্যা সন্তানদের বিবাহে (যদি প্রয়োজন হয়) আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা এবং সহজ প্রক্রিয়ায় তা পাওয়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। অসুস্থ ও দুর্ঘটনাগ্রস্থ সদস্যদের আর্থিক সহায়তা, ১৫ দিন পরপর সমিতির কার্যালয়ে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দিয়ে ফ্রি চিকিৎসা ক্যাম্প আয়োজন ও একটি ব্লাড ব্যাংক গঠন করে জরুরি রক্তের ব্যবস্থা করা। সৌহার্দ্য ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বৃদ্ধিতে চাঁদা ছাড়াই প্রতি বছর একবার বনভোজন, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা। এরমাধ্যমে সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক বন্ধন মজবুত হবে বলে সংস্কার ও উন্নয়ন পরিষদ আশা করছে। এছাড়া প্রতি বছর রমজান মাসে ইফতার ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হবে। আর সর্বশেষ দফায় রয়েছে অফিস ব্যবস্থার উন্নয়ন ও ডিজিটাল প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত ও আধুনিকায়ন এবং সদস্যদের দ্রুত সেবা নিশ্চিত করতে আধুনিক সিস্টেম চালু করা।
ইশতেহারের বাইরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন সংস্কার ও উন্নয়ন পরিষদের নেতৃত্ব দেয়া কাসেদুজ্জামান সেলিম ও এজাজ উদ্দিন টিপু। তারা বলেছেন, আরএন রোড়ের নতুন বাজার ভেঙ্গে ফেলায় সমিতির অনেক ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হন। সমিতির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতৃবৃন্দ বাধা না দিয়ে অনেকটা হাততালি দিয়েছে। নেতৃত্বে থাকা ব্যক্তিরা সমিতির কল্যাণের পরিবর্তে অকল্যাণ করেছে। শুধু তাই নয়, গত ৭ বছরে সমিতির এজিএম দেয়া হয়নি। আয়-ব্যয়ের নেই কোন স্বচ্ছতা। নেতৃত্ব এক পক্ষের ভোটার তৈরি করে নির্বাচন দেওয়ার পায়তারা করছিল। আইনগতভাবে সেটা মোকাবিলা করা হয়। পরে উভয়পক্ষের তিনজন করে প্রতিনিধি বসে ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করে নির্বাচনের আয়োজন করা হচ্ছে। এছাড়া ইতোপূর্বে নির্বাচিতরা সংগঠনের বৈধতাকরণে কেন্দ্রীয় সংগঠনের সাথে যোগাযোগ করেনি। নির্বাচিত হতে পারলে সেটা আমরা করবো ইনশাআল্লাহ।
এক প্রশ্নের উত্তরে এজাজ উদ্দিন টিপু বলেন, সদস্যদের কাছ থেকে সমিতিতে ১০০ টাকা চাঁদা নেওয়া হয়। সমিতির উন্নয়নে সেটা কাজে লাগানো যেতে পারে। এছাড়াও আমরা ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সামাজিক ও উন্নয়নমূলক কাজ করে থাকি। সমিতির সদস্যদের জন্যও সেসব কর্মকাণ্ড করা সম্ভব।
ইশতেহার ঘোষণা অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আতাউল্লাহ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী গোলাম সরওয়ার কাদের, মকছেদ আলী, জাহিদ হোসেন, রিয়াজ উদ্দিন প্রমুখ।