রাইসুল ইসলাম অপু
‘সঞ্চয় করি, ভবিষ্যৎ গড়ি’ এমন প্রতিপাদ্যে এ বিদ্যালয়ের তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীর প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে একটি করে প্লাস্টিকের রঙিন ব্যাংক প্রদান করা হয়।
রোববার সকালে যশোর শহরতলীর চাঁচড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ব্যাংক বিতরণের আয়োজন করে সামাজিক সচেতন সংস্থা (সাসস) নামের একটি সংগঠন।
পুলিশ কর্মকর্তা মফিজুল ইসলাম পিপিএম এ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান পৃষ্ঠপোষক।
তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী জারা বলে, ‘আজকে আমাদের ব্যাংক দিয়েছে। আমরা টাকা জমাবো। অনেক ভালো লাগছে।’
তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র অনিত্র বিশ্বাস বলে, ‘বাবা-মা প্রতিদিন আমাকে ১০ টাকা করে টিফিনের টাকা দেয়। কিন্তু আমি সব খেয়ে ফেলি। আজ থেকে ২-৪ টাকা বাঁচিয়ে এই ব্যাংকে সঞ্চয় করবো।’
পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী তানিজা ফাতেমা বলে, ‘ব্যাংকটা পেয়ে অনেক ভালো লাগছে। টাকা জমাবো। প্রতিদিন টিফিনের টাকা থেকে ২-৫ টাকা করে এই ব্যাংকে ফেলবো, তাহলে একদিন অনেক টাকা হয়ে যাবে।’
এক অভিভাবক খাদিজা খাতুন বলেন, ‘আমরা অভিভাবকরা অনেক সময় অর্থ সংকটে পড়ি। তখন দেখা যায় আমাদের ছেলে-মেয়েদের বই-খাতা কেনা বা স্কুল, টিউশনি, পরীক্ষার ফিস জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হয়। সেক্ষেত্রে যদি আমাদের শিশুদের অর্থ সঞ্চয় করার মনোভাব থাকে তাহলে তাদের সঞ্চয় করা অর্থই তাদের শিক্ষা জীবনের দুঃসময়ে কাজে দেবে।’
এ অভিভাবক আরও বলেন, এই ব্যাংক পেয়ে শিশুরা যেমন সঞ্চয়ের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করবে তেমনি তারা মিতব্যয়ী হবে। এ পুলিশ কর্মকর্তা এবং তার সংস্থা যে উদ্যোগ নিয়েছে এটি অসাধারণ একটি উদ্যোগ।’
চাচড়াঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফরোজা সুলতানা বলেন, ‘সাসস যে ক্ষুদ্র শিশু শিক্ষার্থীদের সঞ্চয়ী মনোভাব সৃষ্টিতে ব্যাংক বিতরণ করেছে এটি একটি উৎসাহমূলক কর্মকাণ্ড। আমি মনে করি বাচ্চারা এতে করে সঞ্চয়ের প্রতি উৎসাহিত হবে, মিতব্যয়ী হবে এবং ভবিষ্যৎ এই ব্যাংক যতটুকু ভূমিকা রাখবে তার থেকে তাদের জীবনে অনেক বড় ভূমিকা রাখবে সঞ্চয়ী মনোভাব।’
সামাজিক সচেতন সংস্থার প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও প্রতিষ্ঠাতা ও যশোর জেলা গোয়েন্দা শাখার উপ-পরিদর্শক মফিজুল ইসলাম পিপিএম বলেন, ‘অর্থ অনার্থের মূল আবার অর্থ না থাকলে অপরাধ প্রবণতা বাড়ে।’ আমরা আমাদের সমাজে অপরাধ বিশ্লেষণে যেটা পেয়েছি সেটা হলো- অপরাধের সাথে যারা জড়িয়ে পড়ে তাদের পিছনের ঘটনায় দেখা যায় তারা অর্থের অভাবে পড়েই খারাপ পথে আসে। এবং বিভিন্ন চুরি, ডাকাতি, হত্যার মতো বড় বড় অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ে।
এজন্য আমরা যদি সঞ্চয় করি, মিতব্যয়ী হই তাহলে আমাদের অর্থের অভাব থাকবে না, আর সমাজ থেকে অপরাধ দূর হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘‘ভবিষ্যতে অপরাধ থেকে দূরে রাখতে কোমলমতি শিশুদের সঞ্চয়ী মনোভাব সৃষ্টিতে আজকে এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে প্রতিটি স্কুলে শিক্ষার্থীদের মাঝে এ ব্যাংক বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।