বাংলার ভোর প্রতিবেদক
এক সপ্তাহ পর যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে যশোরে কাজ শুরু করেছেন ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা। সোমবার সকাল থেকে শহরের সব মোড়ে তারা দায়িত্ব পালন করছেন। তবে আজও রেডক্রিসেন্ট ও স্কাউটের পোশাকে পুলিশের সঙ্গে কাজ করছেন শিক্ষার্থীরা। এতে স্বস্তি নেমেছে সাধারণ মানুষের মাঝে।
এদিকে, কাজে ফেরায় পুলিশ সদস্যদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নেতৃবৃন্দ ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা। সকালে মোড়ে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে সকল প্রকার সহযোগিতার আশ্বাস দেন তারা।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিভিন্ন থানা, পুলিশ ফাঁড়ি, ট্রাফিক পুলিশ বক্সে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, অস্ত্র লুটপাট হয়। অনেক হতাহতের মধ্যে আতঙ্কে বেশিরভাগ থানা পুলিশ শূন্য হয়ে পড়ে। রাস্তা-ঘাটে থেকেও চলে যান ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা। এতে সড়কে ভেঙে পড়া ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সামাল দিতে মাঠে নামে শিক্ষার্থীরা। তারাই গত কয়েকদিন দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন। এক সপ্তাহ পর আজ মাঠে নেমেছে ট্রাফিক পুলিশ। ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যশোর ট্রাফিকের ৮৬ সদস্য শহর ও জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে কাজে নেমেছে।
যশোর ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর মাফুজুর রহমান বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ সব মোড়ে ট্রাফিক পুলিশ রয়েছে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একযোগে কাজ করছি। প্রথম দিনে তারা আমাদের উৎসাহ যুগিয়েছে। কোনো প্রকার ঝামেলা ছাড়াই সবাই কাজ করছেন। সাধারণ মানুষও আমাদের স্বাগত জানিয়েছে। আইরিন আক্তার নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা ৫/৬ দিন থেকে সড়কে কাজ করছি। আমরা প্রশিক্ষিত না হওয়ায় কাজ করতে বেগ পেতে হচ্ছিলো। ট্রাফিক পুলিশ নামায় আমরা খুশি। যাদের কাজ তাদেরই মানায়। আরও দু’একদিন আমরা তাদের সঙ্গে থাকবো। সবাই ট্রাফিক আইন মেনে চলবে সেই প্রত্যাশা করি।’
নজরুল ইসলাম নামে এক পথচারী বলেন, ‘পুলিশ উঠে যাওয়ায় বেশ সমস্যা তৈরি হয়েছিলো। শিক্ষার্থীরা হাল ধরলেও সেটা পর্যাপ্ত ছিলো না। সড়কে ট্রাফিক পুলিশ নামায় শৃঙ্খলা ফিরবে। তাদের স্বাগত জানাচ্ছি।’ তৌফিকুল ইসলাম নামে এক ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি জানান, শিক্ষার্থীরা কড়াভাবে ট্রাফিক আইন ফলো করছিলো। তাদের কারণে সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ হয়ে গেছে। আশাকরি সেটি আবার চালু হবে না। ট্রাফিক বিভাগ জনবান্ধব হবে সেই প্রত্যাশা করছি।
এদিকে, সড়কের ট্রাফিকে পুলিশ সদস্যরা যোগদান করাতে ফুল দিয়ে বরণ করে নিয়ে পাশে থাকার কথা জানিয়েছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের নেতাকর্মী ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা। জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা আমির ফয়সাল বলেন, ‘সড়কে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার কাজ করে ট্রাফিক পুলিশ। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ট্রাফিক অফিস পুলিশ ফাঁড়ি থানাতে হামলা করে দুবৃর্ত্তরা।
আতঙ্কে তারা কর্মবিরতি পালন করেন। সেই কর্মবিরতি থেকে ফিরে ট্রাফিকপুলিশরা সড়কের শৃঙ্খলার নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেছে। সেই কারণে তাদের কাজকে স্বাগত জানাতে ও সাধুবাদ জানাতে বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের নির্দেশে ফুলেল শ্রদ্ধা জানিয়েছি। এমনকি সড়কে শৃঙ্খলা, চাঁদাবাজি বন্ধে পুলিশের কাজে সহযোগিতা করতে যেকোন সময় জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল কাজ করার আশ্বাস দেন।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের সমন্বয়ক রাশেদ খান বলেন, ‘সড়কে পুলিশ না থাকাতে সাধারণ শিক্ষার্থী, জনতা, আনসার, রেডক্রিসেন্ট ও স্কাউট কাজ করছিলেন। এখন পুলিশ সড়কে ফেরাতে মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে। এখন পুলিশের সঙ্গে রেডক্রিসেন্ট ও স্কাউটের সদস্য কাজ করছে। পুলিশ নিজেদের নিরাপদ মনে করলে ধীরে ধীরে শিক্ষার্থীরা সড়ক থেকে সরে যাবে।’