বাংলার ভোর প্রতিবেদক
পবিত্র রমজান ও ঈদ সামনে রেখে দ্রব্যমূল্য, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, যানজট, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহসহ সামগ্রিক পরিস্থিতি সম্পর্কে সচিবদের সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। গতকাল দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সভাকক্ষে এক পর্যালোচনা সভায় এসব নির্দেশনা দেয়া হয়। রমজানে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মজুত, সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি এবং ঈদুল ফিতরে মানুষের ঈদযাত্রা যানজটমুক্ত এবং স্বাচ্ছন্দ্যময় করাসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি নিয়ে এ সভা করা হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। রোজা ও ঈদকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রীর বরাত দিয়ে বিশেষ নির্দেশনাগুলো তুলে ধরেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইংয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সভায় নিজ নিজ বিভাগের পরিকল্পনা তুলে ধরেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবরা। পবিত্র রমজান মাসে কোনোভাবেই যাতে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি না পায়, সে বিষয়ে নজরদারি বাড়াতে বাণিজ্য সচিবকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে মজুতদারি রোধে সংশ্লিষ্ট সবাই সজাগ থাকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যাতে অবনতি না ঘটে, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এবং ইফতার ও সেহরিতে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেয়া হয়।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বলেন, ‘বিগত বছরগুলোর চেয়ে এবারের রোজায় দেশে অনেক বেশি খাদ্য ও নিত্যপণ্যের মজুত আছে। এছাড়া পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বাজারে আছে। রোজার প্রস্তুতি আমরা যথাযথভাবে নিতে পেরেছি। যখন যার যা প্রয়োজন তা নিলে কারও কোনও সমস্যা হবে না, আমরা খুব ভালোভাবে রোজা ও ঈদ উদযাপন করতে পারবো।’
তিনি বলেন, ‘রোজার সময় নিত্যপণ্য যাতে মানুষের কাছে পৌঁছায়, সরবরাহ-শৃঙ্খল যাতে ঠিক থাকে, সেজন্য আমরা সবাইকে নির্দেশনা দিয়েছি। স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য সরকার খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি নিয়েছে। ওএমএস কর্মসূচি ও টিসিবির মাধ্যমে রোজা ও ঈদ ঘিরে দুই কিস্তিতে এবার খাদ্যপণ্য সরবরাহ করা হবে। তেল, চিনি, ডাল, ছোলা, পেঁয়াজ ও খেজুর আমরা দুবার করে এক কোটি মানুষকে দেবো।’
রোজায় মানুষের কষ্ট লাঘবে প্রধানমন্ত্রীর এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য মুখ্য সচিব সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানান।
এ ছাড়া সহজে টিকিট প্রাপ্তি নিশ্চিত করা, মহাসড়কে শৃঙ্খলা রক্ষা করা, ঈদের আগে রাস্তা ও সেতু সংস্কার, নৌপথে ফেরি বাড়ানো, অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন ঠেকানো, আকাশপথে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বাড়ানো এবং গার্মেন্টস ও পাটকল শ্রমিকদের বেতনের বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিনসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, রেলপথ মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, শিল্প মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ (সমন্বয় ও সংস্কার), সেতু বিভাগ, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ বিভাগ, ধর্ম মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সরকারের বিভিন্ন সংস্থার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।