কেশবপুর পৌর প্রতিনিধি
কেশবপুরে ঘের মালিকের স্বেচ্ছাচারিতায় উপজেলার খতিয়াখালি বিলের ১৭০ বিঘা জমির উঠতি বোরো ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। ধান বাঁচাতে কৃষকরা স্বেচ্ছাশ্রমে মাত্র দুটি স্যালো মেশিন দিয়ে দিনরাত ঘেরের পানি নিষ্কাশন কার্যক্রম চালিয়ে গেলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে ফসল উৎপাদন। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে ঘের কমিটির নের্তৃবৃন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রতিবছর স্বেচ্ছাশ্রমে উপজেলার খতিয়াখালি বিলের পানি অপসারণ করে কৃষকদের বছরের একমাত্র ফসল বোরো ধান আবাদ করতে হতো। এ সমস্যা নিরসনে বিলের পানি নিষ্কাশন করে বোরো ধান আবাদের শর্তে কৃষকরা ঘেরটি ৫ বছরের জন্যে লিজ প্রদান করেন সেলিমুজ্জামান আসাদের কাছে। লিজের শর্তানুযায়ী, প্রতিবছর ৩০ পৌষের মধ্যে ঘেরর পানি নিষ্কাশন করে কৃষকদের বোরো ধান আবাদের সুযোগ করে দিতে হবে। কিন্তু ঘের মালিকের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে সময়মত ঘেরের পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় প্রতিবছর বোরো আবাদ বিলম্ব হওয়ায় ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া, ঘেরের হারির টাকাও সময়মত কৃষকদের দেয়া হয় না। যে কারণে কৃষকরা ঘের মালিকের ওপর ক্ষিপ্ত ছিল।
ঘের কমিটির সাধারণ সম্পাদক অনুকূল দাস বলেন, ঘের মালিক সেলিমুজ্জামান আসাদের আগামী ৩০ চৈত্র পর্যন্ত ঘেরের মেয়াদ রয়েছে। তিনি ১৫ মাঘের ভেতর বিলের পানি নিষ্কাশন করে মাছ ধরে নিয়ে গেছেন। লিজের শর্তানুযায়ী ৩০ চৈত্র পর্যন্ত ঘেরের অতিরিক্ত পানি ঘের মালিকই নিষ্কাশন করবেন। কিন্তু তিনি পানি নিষ্কাশন করতে অস্বীকার করায় এলাকার কৃষকদের দাবির মুখে বর্তমান ঘের মালিক সুভাষ দত্ত ঘেরের পানি নিষ্কাশনের দায়িত্ব নেন। কিন্তু সাবেক ঘের মালিক তার নিষ্কাশন কাজে বাধা দেয়ায় তিনি পানি নিষ্কাশন বন্ধ করে দেন। ফলে পানিতে তলিয়ে হুমকির মুখে পড়ে কৃষকের বছরের একমাত্র ফসল বোরো ধান।
কৃষক জয়দেব দাস বলেন,বিলের পানি সম্পূর্ণভাবে নিষ্কাশন করে ফসল ঘরে তোলা পর্যন্ত প্রায় ৩ লাখ টাকার প্রয়োজন। সাবেক ঘের মালিক সেলিমুজ্জামান আসাদ বিলের পানি নিষ্কাশন করছেন না। আবার কেউ নিষ্কাশন করতে চাইলে তিনি বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দিচ্ছেন। বিলের চারিপাশে বদ্ধ পানি। একদিন পানি না নিষ্কাশন করলে ধান তলিয়ে যাচ্ছে।
গত ১৮ মার্চ আমরা এলাকার শতাধিক কৃষক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এ বিষয়ে সাবেক ঘের মালিক সেলিমুজ্জামান আসাদের বক্তব্য নেয়ার জন্য ফোন দেয়া হলেও তার ফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহামুদা আক্তার বলেন, ঘেরের কারণে প্রতিবছর প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ ব্যাহত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তুহিন হোসেন বলেন, এলাকার কৃষকদের অভিযোগ পেয়েছি। যাতে ঘেরের পানি দ্রত অপসারণ হয় সে জন্যে কাজ করা হচ্ছে।