বেনাপোল থেকে রাজু আহমেদ
সংবাদ প্রকাশের জেরে যশোরের শার্শার সাংবাদিক ইকরামুল ইসলামের (২৮) উপর হামলা চালিয়েছে চিহিৃত মাদক ও অস্ত্র ব্যবসায়ী আরিকুল ইসলাম। এ সময় নিজ ভাইকে উদ্ধার করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন তার মেঝ ভাই কমিরুজ্জামান কবির (৩৫)। আহত সাংবাদিক ইকরামুল ইসলাম ও তার ভাই কমিরুজ্জামান কবিরকে উদ্ধার করে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।
ইকরামুল ইসলাম দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার ও স্থানীয় দৈনিক প্রজন্ম একাত্তর পত্রিকার শার্শা উপজেলা প্রতিনিধি।
সোমবার (১৫ এপ্রিল) সন্ধ্যায় শার্শা সরকারি পাইলট মডেল মাধ্যামিক বিদ্যালয়ের গেটের সামনে প্রকাশ্যে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রাতেই ইকরামুল ইসলাম বাদী হয়ে শার্শা থানায় মামলা করলেও পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি।
হামলার শিকার সাংবাদিক ইকরামুল ইসলাম বলেন, ঘটনার সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে বিদ্যালয়ের সামনে অবস্থান করছিলেন তিনি। এমন সময় হঠাৎ করে শার্শা উপজেলার চটকাপোতা গ্রামের চিহিৃত ও একাধিক মামলার আসামি মাদক ও অস্ত্র ব্যবসায়ী আরিকুল ইসলাম পূর্ব শক্রতার জেরে আমাকে গালিগালাজ করতে থাকে। এ সময় তাকে গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে সে আমার উপর চড়াও হয়ে এলোপাতাড়ি চড়, কিল, ঘুষি মেরে জখম করে। খবর পেয়ে আমার মেঝ ভাই আমাকে উদ্ধার করতে আসলে তাকেও এলোপাতাড়ি মারতে থাকে। ঘটনা দেখে পথচারী ও স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে পালিয়ে যায় হামলাকারী আরিকুল।
হামলাকারী আরিকুল শার্শার চটকাপোতা গ্রামের বাসিন্দা এবং পুলিশের তালিকাভুক্ত মাদক ও অস্ত্র ব্যবসায়ী। ক্ষমতাসীন দলের পরিচয়ের আড়ালে আরিকুল ইসলাম মাদক ও অস্ত্রসহ আটক হওয়া নিয়ে ইতোপূর্বে বিভিন্ন গণমাধ্যমে একাধিকবার সংবাদ প্রকাশ হয়। এসব সংবাদ ফেসবুক আইডিতেও ছড়িয়ে পড়ে। এতে তার উপর ক্ষিপ্ত ছিলো মাদক ব্যবসায়ী আরিকুল ইসলাম।
সর্বশেষ গত ২১ মার্চ রাতে ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে আরিকুল ইসলামকে একটি বিদেশি পিস্তল ও একটি ম্যাগাজিনসহ আটক করে জেলহাজতে পাঠায়। এরপর জেল থেকে বেরিয়ে আসার পরেই শুরু হয় তার সন্ত্রাসী কর্মকান্ড। এর আগেও সংবাদ প্রকাশের জেরে তাকে কয়েকবার মারধরসহ প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছিলো আরিকুল।
আরিকুলের বিরুদ্ধে শার্শা ও সাতক্ষীরা থানায় একাধিক অস্ত্র, মাদক ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মামলা রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। এছাড়াও নিজেকে ছাত্রলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালানোর পাশাপাশি এক ব্যক্তির স্ত্রীকে সন্তানসহ উঠিয়ে নিয়ে বিয়ে করা অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলা নং-১৬। সন্ত্রাসী আরিকুলকে আটকের জন্য শার্শা থানা পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) চেষ্টা চালাচ্ছে।
এদিকে সন্ত্রাসী কর্তৃক সাংবাদিককে আহত করার ঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিকের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত সন্ত্রাসীকে আটক করতে ব্যর্থ হলে মানববন্ধনসহ বিক্ষোভ মিছিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শার্শার সাংবাদিক সমাজ।