কেশবপুর প্রতিনিধি
কেশবপুর উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। তবে মাছের ঘেরের সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় ১ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ না হওয়ায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০ হাজার ৭২৫ মেট্রিক টন ধান কম উৎপাদন হবে বলে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে। পুরো উপজেলায় এবার হাইব্রিড ছাড়াও উফশী ব্রি-ধান-২৮, ব্রি-ধান-৫০, ব্রি-ধান-৬৩, ব্রি-ধান-৭৪, ব্রি-ধান-৮৮ ও ব্রি-ধান-১০০ জাতের ধানের আবাদ হয়েছে সবচেয়ে বেশি।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে এ উপজেলায় ১৪ হাজার ৫‘শ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। ধানের উৎপাদন ধরা হয়েছিল ১ লাখ ১ হাজার ৩০৭ মেট্রিক টন। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলেও মাছের ঘেরের সৃষ্ট জলাবদ্ধতার কারণে বিলের অতিরিক্ত পানি নিস্কাশন সম্ভব না হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ হাজার ৪৩০ হেক্টর কম জমিতে ধানের চাষ হয়। এর মধ্যে হাইব্রিড- ৪ হাজার ১৭০ হেক্টর ও উফশী- ৮ হাজার ৯০০ হেক্টর জমি। ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ায় এবার ১০ হাজার ৭২৫ মেট্রিক টন ধান কম উৎপাদন হবে। যার বাজার মূল্য ২ কোটি ৭৮ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। ঘেরের পানি নিস্কাশন সম্ভব না হওয়ায় উপজেলার বাগডাঙ্গা, পাঁজিয়া, কালিচরণপুর, বিলখুকশিয়া, কাটাখালি, মনোহরনগর, নারায়ণপুর ও হদ বিল এলাকার হাজারো কৃষক এবছর বোরো ধানের আবাদ করতে পারেনি।
ব্যাসডাঙ্গা গ্রামের কৃষক রেজাউল ইসলাম, মাগুরাডাঙ্গা গ্রামের কৃষক আব্দুল মজিদ জানান, তাদের গরালিয়া বিলের জমি মাছের ঘের মালিক সেলিমুজ্জামান আসাদের কাছে লিজ দেওয়া হয়েছে। ঘের মালিক মাছ চাষের জন্যে প্রতি শুষ্ক মৌসুমে ভূ-গর্ভস্থ পানি তুলে ঘের ভরাট করে। আবার ইরি বোরো মৌসুমে স্যালো মেশিন দিয়ে ঘেরের পানি নিষ্কাশন করলে কৃষকরা ধান আবাদ করে। জলাবদ্ধতার কারণে বিভিন্ন বিলের ১ হাজার বিঘা জমিতে এবার বোরো আবাদ হয়নি।
উপজেলা কৃষি অফিসার মাহমুদা আক্তার বলেন, পাউবো নদী খাল খনন করলেও শ্রীনদী, হরিহর, ভদ্র, আপার ভদ্রার নাব্যতা না থাকায় তা আবারও পলিতে ভরাট হয়ে গেছে। যে কারণে মাছের ঘেরের পানি নিস্কাশন সম্ভব না হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ হাজার ৪৩০ হেক্টর কম জমিতে ধানের আবাদ হয়। কৃষকের চাহিদামত সার, বিজের কোনো ঘাটতি ছিল না, আবহাওয়াও ছিল অনুকূলে। ইতিমধ্যে উপজেলার অনেক এলাকায় ধান কাটা শুরু হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে এবার ধানের বাম্পার ফলন হবে।