বাংলার ভোর প্রতিবেদক
রাত পোহালেই কেশবপুর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাত প্রার্থী। তবে মূল লড়াইয়ে ৪ জন থাকবেন বলে ধারণা করছেন স্থানীয় ভোটাররা। শেষ পর্যন্ত কে বিজয়ের মালা পরবেন, তা নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে চলছে নানা সমীকরণ। আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের প্রার্থী হওয়াতে নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ নেই একটি পক্ষের। ফলে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এদিকে, উপজেলায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা কোন্দল-বিরোধে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই বিরোধ তুঙ্গে ছিল। এর প্রভাব পড়েছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে; যদিও কেন্দ্র থেকে বিরোধ মেটাতে বলা হলেও তা মানা হয়নি। সাধারণ নেতা-কর্মীরা বলছেন, এই বিরোধের কারণে দলের অবস্থান বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের থেকেও দুর্বল। তবে শীর্ষ নেতাদের বক্তব্য, বরাবারের মতোই ভোটের পর সব ঠিক হয়ে যাবে।
কেশবপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটাররা যে চারজনের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্ভাবনা দেখছেন তাঁরা হলেন সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল হালিমের ছেলে মঙ্গলকোট ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ-নূর-আল আহসান বাচ্চু (দোয়াত-কলম), উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান কাজী রফিকুল ইসলামের ছেলে উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক কাজী মুজাহিদুল ইসলাম পান্না (হেলিকপ্টার), বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক নাসিমা আকতার সাদেক (শালিক) এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মফিজুর রহমান (ঘোড়া)।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কেশবপুরের রাজনীতিতে ফিরে আসার সুযোগ নিতে চাচ্ছে হালিমের পরিবার। তার একমাত্র ছেলে বাচ্চু চেয়ারম্যান পদে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছেন। রাজনীতিতে নিজেদের অবস্থান ফিরিয়ে আনতেই তিনি প্রার্থী হয়েছেন। এ ছাড়া বর্তমান চেয়ারম্যান যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী রফিকুল এবার প্রার্থী না হয়ে তাঁদের পরিবারের রাজনৈতিক ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য ছেলে কাজী মুজাহিদুল ইসলাম পান্নাকে প্রার্থী করেছেন। তিনি দীর্ঘদিন রাজনীতির মাঠে।
দুই বারের ভাইস চেয়ারম্যান নাসিমা প্রয়াত শিক্ষামন্ত্রী এ এস এইচ কে সাদেক ও প্রয়াত প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক পরিবারের সদস্য হিসেবে তাদের অসমাপ্ত কাজ শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রচারণা চালিয়েছেন। অন্যদিকে মফিজুর সবার আগেই নির্বাচনের মাঠে নেমেছেন। এলাকার ব্যাপক উন্নয়নসহ বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি চষে বেড়িয়েছেন নির্বাচনী মাঠ।
সাধারণ ভোটাররা বলছেন, ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ব্যাপক হবে। কেননা, উপজেলার সব ধারার নেতারা প্রার্থী হয়েছেন। নিজেদের ভোট টানতে তাঁরা কাজ করছেন। তবে বিএনপির সাধারণ ভোটারদেরও তারা টানার চেষ্টা করছেন।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, কেশবপুরে মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ২০ হাজার ৯৫৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ১১ হাজার ৭৭৫, নারী ভোটার ১ লাখ ৯ হাজার ১৭৭ ও হিজড়া দুজন। মোট ৯৫টি কেন্দ্রে ৮ মে ভোট নেওয়া হবে। তিনি জানান, নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করতে যা যা করার তার সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর কোনো সুযোগ থাকবে না। ভোট কাটা বা কেন্দ্র দখল করার চিন্তাভাবনা যারা করবেন, তাদের তাৎক্ষণিক আইনের আওতায় আনা হবে। কোনো ছাড় হবে না।