বাংলার ভোর প্রতিবেদক
সাক্ষ্য প্রমাণ না থাকায় দীর্ঘ ২১ বছর পরে যশোরে সেলিম বিশ্বাস (৩০) হত্যা মামলার ১৩ আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। বুধবার যশোরের স্পেশাল জজ (জেলা জজ) মোহাম্মদ সামছুল হক এই রায় দেন।
আসামিরা হলেন, সদর উপজেলার বাগডাঙ্গা গ্রামের টিটো, পুলতাডাঙ্গা গ্রামের কাসেম ওরফে আলমগীর, পুকুর বাগডাঙ্গার রুস্তুম আলী, তৈয়ব আলী, ইদিস আলী, হযরত আলী, আজহার আলী, সরদার বাগডাঙ্গার নুরোল গাজী, আব্দুলপুরের জাহাঙ্গীর হোসেন, ছাতিয়ানতলার শহিদুল ইসলাম, পুকুরবাগডাঙ্গার জামির হোসেন, নজরুল ইসলাম ও সরদার বাগডাঙ্গার রহমত আলী।
মামলার বিবরণে জানা যায়, মামলার বাদী সদর উপজেলার বাগডাঙ্গা গ্রামের আব্দুস সাত্তার। ২০০৩ সালের ২৮ মার্চ বিকেল ৫টার দিকে আসামি ইদ্রিস আলী বাদির বাড়িতে আসে। এ সময় বাদীর ছেলে সেলিম হোসেন বাড়িতে টেলিভিশন দেখছিলেন।
কিন্তু ১৫/২০ মিনিট পরই ইদ্রিস আলী বাড়ি থেকে বাদীর ছেলে সেলিমকে সাথে নিয়ে চুড়ামনকাটি বাজারে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়ে যায়। রাতে বাড়ি ফিরে না আসায় বিভিন্ন স্থানে খোঁজখবর নিয়েও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরদিন সকালে ইদ্রিস আলী বাদির বাড়িতে এসে জানায় সেলিম মারা গেছে। এই ঘটনায় ২৯ মার্চ আব্দুস সাত্তার কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন।
মামলায় আসামি অজ্ঞাত দেখানো হয়। তদন্ত কর্মকর্তা এসআই লোকমান হোসেন বিভিন্ন সময়ে সাতজন আসামিকে আটক করেন। এর মধ্যে কয়েকজন আসামি এই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে আদালতে জবানবন্দি প্রদান করে। কিন্তু জবানবন্দিতে কোনো আসামি নিজের দোষ স্বীকার করেনি। পাশাপাশি পুলিশ দুইজনকে নির্যাতন করে আদালতে জবানবন্দি প্রদান করায়।
সাক্ষ্যগ্রহণকালে ওই আসামিরা তাদের জবানবন্দি প্রত্যাহারের জন্য আদালতে আবেদন করে। কিন্তু বাদি পক্ষের সাক্ষীরা আদালতে সাক্ষ্য প্রমাণে ব্যর্থ হয়। ফলে সকল আসামিকে আদালত বেসকসুর খালাস প্রদান করা হয়।
এই ব্যাপারে আসামি পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার কাজী রিফাত রেজওয়ান সেতু বলেছেন, এই মামলার কোনো দেখা সাক্ষী নেই। মোট সাত আসামিকে আদালতে নির্যাতনের মাধ্যমে পুলিশ স্বীকরোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ করে। কিন্তু দুইজনকে আইন বহির্ভুতভাবে জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়। এতে একেকজনের জবানবন্দি একেক রকম।
মামলার বাদী পক্ষ এবং সকল সাক্ষীরা আদালতে স্বাক্ষ্য প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে। তাই বিচারক এই মামলার সকল আসামিকে খালাস দেয়া হয়েছে।