কলারোয়া সংবাদদাতা:
সাতক্ষীরার কলারোয়ায় সংসদ সদস্য ফিরোজ আহমেদ স্বপন ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টুর মধ্যে বনিবনা নেই দীর্ঘদিন ধরে। রাজনৈতিক আধিপত্যের কারণে এখানে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা দুই নেতার পক্ষে বিভক্ত। এমপি-চেয়ারম্যান অনুসারীদের দ্বন্দ্ব-গ্রুপিং এখন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। সর্বশেষ গত ৩০ মে রাতে থানায় দুই গ্রুপের একটি সালিশি বৈঠক চলাকালীন সংসদ সদস্যপন্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি সাজেদুর রহমান খান চৌধুরী মজনু ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা মিলে পুলিশের উপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মজনু ২ ঘন্টা থানায় অবরুদ্ধ থাকার পরে মুচলেকা দিয়ে মুক্তি পান।
নেতাকর্মীর এমন দ্বন্দ্ব-গ্রুপিং ছড়িয়ে পড়েছে তৃণমূলেও। এজন্য এক পক্ষ অপর পক্ষকে দুষছেন। এ অবস্থায় ধাওয়া-পালটা ধাওয়াসহ হামলা-মামলার কারণে দলীয় অঙ্গনে বাড়ছে উত্তাপ। দলের হাইকমান্ড এখনই উদ্যোগ নিয়ে এ অবস্থার সুরাহা না করলে এখানে যে কোনো সময় দুইপক্ষে বড় ধরনের সংঘাত-সহিংসতার আশঙ্কা করা হচ্ছে। নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এ উপজেলায় আওয়ামী লীগে দীর্ঘ বছর ধরে নেতা-নেতৃত্বে দ্বিধাবিভক্তি চলে আসছে। সাংগঠনিক কমিটি গঠন এবং জাতীয় ও স্থানীয় সরকার পর্যায়ের নির্বাচন নিয়ে প্রার্থী মনোনয়নে এ বিরোধ সময়ে সময়ে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। এই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এ বিরোধ প্রকাশ্যে চলে আসে। এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না থাকায় আওয়ামী লীগ থেকে কাউকে মনোনয়ন দেয়া হয়নি এবং হাই কমান্ড ও নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ ছিল যে কোন এমপি এবং মন্ত্রী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করতে পারবেনা, কিন্তু এর কোন কিছুই তোয়াক্কা করেননি এমপি ফিরোজ আহমেদ স্বপন। তার অনুসারীরা প্রকাশ্যেই আমিনুল ইসলাম লাল্টুর বিপক্ষে অবস্থান নেন।
এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে উভয় পক্ষের প্রার্থী মনোনয়নের প্রতিযোগিতা নিয়েও দলের তৃণমূলে বিভাজন প্রকট হয়ে ওঠে। । এখন নিজ দলের নেতাকর্মীদের সংঘাত-সংঘর্ষ আর হামলা-মামলার ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে। আরেক নেতা বলেন, এখানে কেউ কারও কমান্ড মানতে চান না। মাঠপর্যায়ে যারা সংঘাতের পথ বেছে নেবেন, তাদের দায়িত্ব সংগঠন নেবে না, তাদেরই নিতে হবে।
সংঘাত এড়াতে নেতাকর্মীদের সর্বোচ্চ সহনশীলতা দেখিয়ে শৃঙ্খলা বজায় রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম।
কলারোয়া থানার ওসি রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, দুই পক্ষই ক্ষমতাসীন দলের। যে কোনো সময় তারা সংঘাত-সংঘর্ষে জড়াতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে পুলিশ সতর্ক আছে।