বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোর জংশন থেকে ঢাকার ৫টি ট্রেনসহ চার দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে জনউদ্যোগ যশোর। ‘পদ্মবিলা নয়, যশোর থেকে ট্রেনে উঠে ঢাকা যেতে চাই’ এই শ্লোগানে সোমবার দুপুরে জনউদ্যোগ কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জনউদ্যোগ সদস্য ও বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র যশোর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রমিক নেতা মাহবুবুর রহমান মজনু।
সংবাদ সম্মেলনে জনউদ্যোগ নেতৃবৃন্দ জানান, আগামী জুলাই মাসে ঢাকা-খুলনা নতুন রুটে বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হতে যাচ্ছে। আমরা জেনেছি, সুন্দরবন, চিত্রা ও বেনাপোল এক্সপ্রেস রুট পরিবর্তন করে পদ্মবিলা হয়ে ঢাকায় যাবে। কিন্তু দুঃখের কথা ঢাকা থেকে কুষ্টিয়া-দর্শনা রুটে কোনো ট্রেন থাকবে না।
আর দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার হচ্ছে, দক্ষিণ বঙ্গের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জেলা যশোর শহরের স্টেশন থেকে সবচেয়ে বেশি যাত্রী হলেও থাকছেনা কোনো নতুন ট্রেন। খুলনা থেকে ছেড়ে আসা চিত্রা এক্সপ্রেস ও সুন্দরবন এক্সপ্রেস আগের মতো যশোর শহরের স্টেশনে না এসে শহর থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরের নতুন তৈরিকৃত পদ্মবিলা স্টেশন হয়ে ঢাকা যাবে।
নেতৃবৃন্দ জানান, বর্তমানে যশোর স্টেশন থেকে ঢাকাগামী ৪টি ট্রেনে (সুন্দরবন, চিত্রা, বেনাপোল ও নকশিকাঁথা এক্সপ্রেস) ২৮৩টি সিট বরাদ্দ আছে। কিন্তু প্রতিদিন ৬০০ থেকে ৭০০ যাত্রী যায় এই স্টেশন থেকে। যা থেকে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ আয় করে প্রায় প্রতিদিন চার লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা। যার মাসিক আয় যশোর স্টেশন থেকে প্রায় এককোটি বিশ লাখ টাকা।
অথচ গুরুত্বপূর্ণ এই স্টেশনে ট্রেন না আসলে চিত্রা এক্সপ্রেস ও সুন্দরবন এক্সপ্রেসের যাত্রী সংখ্যা কমবে। যশোর শহরের মানুষ কোনো মতেই ট্রেনে উঠতে অতদূরে পদ্মবিলা স্টেশনে যাবেনা। সেক্ষেত্রে উটকো বাড়তি ঝামেলা এড়াতে পরিবহন বাসে করেই রাজধানীতে যেতে বাধ্য হবে।
পাশাপাশি নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, এছাড়াও যশোরবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি খুলনা বিভাগীয় শহরে যাতায়াতের জন্য সকালে ও বিকালে একটি কমিউটার ট্রেনের। এই ট্রেন চালু হলে যশোর খুলনা অঞ্চলের কর্মজীবী মানুষ প্রতিদিনের কর্মস্থল যশোর-খুলনায় যাতায়াত করতে পারবে।
এই সব বিবেচনায় জনউদ্যোগ যশোর চার দফা দাবি তুলে ধরেছে। দাবিগুলো হলে, বেনাপোল-যশোর-ঢাকা রুটে ২টা ট্রেন চালু এবং দর্শনা-যশোর-ঢাকা রুটে ২টা ও খুলনা থেকে যমুনা সেতু হয়ে ঢাকা রুটের ট্রেনটা বহাল রাখতে হবে। ট্রেনের সময়সূচি এমন করতে হবে যাতে যশোর থেকে ঢাকা প্রতিদিন অফিস করা যায়। আন্তঃনগর ট্রেনে সুলভ (সাধারণ) বগি, কৃষিপণ্য, সবজি, ফুল-ফল ও মাছ বহনের জন্য মালবাহী বগি যুক্ত করতে হবে। টিকিট প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নিবন্ধনের বাইরের ব্যবস্থা রাখতে হবে। একই সাথে বয়স্ক নাগরিকদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
জনউদ্যোগ যশোরের আহবায়ক প্রকৌশলী নাজির আহমদের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রবীণ সাংবাদিক বীর মুক্তিযোদ্ধা রুকুনউদ্দৌলাহ্, সিপিবি যশোর জেলা কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল হোসেন, জনউদ্যোগের যুগ্ম আহবায়ক অধ্যাপক সুরাইয়া শরীফ, অ্যাডভোকেট সৈয়দা মাসুমা বেগম, প্রেস ক্লাব যশোরের যুগ্ম সম্পাদক ও বৃহত্তর যশোর রেলসংযোগ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান মিলন, আইইডি যশোর কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক বীথিকা সরকার, জনউদ্যোগ যশোরের সদস্য সচিব কিশোর কুমার কাজল প্রমুখ।