বাংলার ভোর প্রতিবেদক
এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হচ্ছে রোববার। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড যশোরের অধীনে ২৩০টি কেন্দ্রে এবার অংশ নিবে এক লাখ ২৪ হাজার ১৪৮ জন পরার্ক্ষী। ২০২৩ সালে অংশ নিয়েছিল এক লাখ ১০ হাজার ৩৫৫ জন পরীক্ষার্থী। গত বছরের তুলনায় এ বছর ১৩ হাজার ৭৯৩ জন পরীক্ষার্থী বেশি। গেল বছরগুলোর থেকে এবার ছেলেদের চেয়ে মেয়ে পরীক্ষার্থী বেশি।
এদিকে, পরীক্ষা সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খল পরিবেশে আদায়ের জন্য নানামুখী প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে যশোর বোর্ডে। পরীক্ষা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ১১ সতর্কতামূলক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। চলতি বছর সব পরীক্ষার্থী (নিয়মিত, অনিয়মিত, মানোন্নয়ন) জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, বাংলাদেশ কর্তৃক প্রণীত ২০২৪ সালের পুনর্বিন্যাসকৃত পাঠ্যসূচি অনুযায়ী সব বিষয়ে পূর্ণ নম্বর ও পূর্ণ সময়ে অংশগ্রহণ করবে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজবমুক্ত ও নকলমুক্ত পরিবেশে সুষ্ঠু, সুন্দরভাবে পরীক্ষা নিতে শুক্রবার থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত মোট ৪৪ দিন সব কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকার নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড যশোরের অধীনে এবার ২৩০টি কেন্দ্রে ৫৭৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এক লাখ ২৪ হাজার ১৪৮ জন পরার্ক্ষী অংশ নিবে। এর মধ্যে ছাত্র ৬১ হাজার ৮৭৮ জন ও ছাত্রী ৬২ হাজার ২৭০ জন। বিজ্ঞান বিভাগে ২৩ হাজার ২১৬ জন, মানবিক বিভাগে ৮৫ হাজার ৭৫২ জন ও ব্যবসা শাখাতে ১৫ হাজার ১৮০ জন। গত বছর ২২৭টি কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল এক লাখ ১০ হাজার ৩৫৫ জন পরীক্ষার্থী। গত বছরের তুলনায় এ বছর ১৩ হাজার ৭৯৩ জন পরীক্ষার্থী বেশি।
এবার জেলা অনুযায়ী পরীক্ষায় বসছে খুলনা জেলায় ২৩ হাজার ৪৬৫ জন, বাগেরহাট জেলায় ৮ হাজার ৬৬৩ জন, সাতক্ষীরা জেলায় ১৩ হাজার ৯৪২ জন, কুষ্টিয়া জেলায় ১৬ হাজার ৩৫৯ জন, চুয়াডাঙ্গা জেলায় ৭ হাজার ৭২২ জন, মেহেরপুর জেলায় ৪ হাজার ৪০৫ জন, যশোর জেলায় ২০ হাজার ৪৯০ জন, নড়াইল জেলায় ৫ হাজার ৭২৯ জন, ঝিনাইদহ জেলায় ১৬ হাজার ৩৮৪ জন ও মাগুরা জেলায় ৬ হাজার ৯৮৯ জন।
বোর্ড সূত্রে জানাগেছে, এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় যশোর শিক্ষা বোর্ডের ৯৯ জন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পরীক্ষার্থী পাচ্ছে অতিরিক্ত সময় ও শ্রুতি লেখক। এরমধ্যে ৬২ পরীক্ষার্থী অতিরিক্ত ৩০ মিনিট সময় পাবে ও বাকি ১৭ পরীক্ষার্থী শ্রুতিলেখকের মাধ্যমে পাবে ২০ মিনিট বর্ধিত সময়।
বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মর্জিনা আক্তার বলেন, ‘এবার কিছুটা অনিয়মিত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি। সেই সাথে শিক্ষার্থী ভর্তির হারও অনেক বেড়েছে। যে কারণে পরীক্ষার্থীর সংখ্যাও বেশি। পরীক্ষা কেন্দ্রের সকল দায়িত্ব কেন্দ্র সচিবের ওপর। কেন্দ্রে যদি কোনো সমস্যা হয় তার দায়ভার পড়বে কেন্দ্র সচিবদের। এজন্য পরীক্ষা গ্রহণে তাদের আন্তরিক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। পরীক্ষা চলাকালে কক্ষে বাইরের কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। কোনো ব্যক্তি সেখানে প্রবেশ করলে পরীক্ষার্থীরা অমনোযোগী হয়ে পড়ে। প্রশ্নফাঁস ও নকলমুক্ত সুষ্ঠু পরীক্ষা আদায়ের লক্ষ্যে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে স্ব স্ব জেলায় কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার জন্য জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’
চলতি বছর ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, কারিগরি বোর্ড ও মাদরাসা বোর্ডের এইচএসসি, আলিম, এইচএসসি (বিএম/বিএমটি), এইচএসসি (ভোকেশনাল), ডিপ্লোমা ইন কমার্স পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৯০ জন। এরমধ্যে ছাত্র ৭ লাখ ৫০ হাজার ২৮১ এবং ছাত্রী ৭ লাখ ৫০৯ জন। এবার মোট কেন্দ্র দুই হাজার ৭২৫টি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৯ হাজার ৪৬৩টি। অন্যদিকে বন্যা পরিস্থিতির কারণে সিলেট অঞ্চলের চারটি জেলার এইচএসসি, আলিম, এইচএসসি (বিএম/বিএমটি), এইচএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষা ৮ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। আগামী ৯ জুলাই থেকে এসব জেলায় পূর্বঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।